মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মস্তিষ্কই আমাদের বুদ্ধিমত্তার উৎস

সোরিয়া রওনক
  ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

সাধারণত আমরা ধরে নিই ভাইরাস মানেই রোগ। কিন্তু তা সব সময় সত্যি নয়। গবেষণায় জানা গেছে, কিছু রেট্রোভাইরাল ডিএনএ আমাদের জিনোমের এমন অংশে মিশে আছে যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এ থেকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে কেন মস্তিষ্কের কোষগুলো এত ধরনের আলাদা কাজ করতে সক্ষম। এদের কারণে আমাদের বুদ্ধিমত্তা এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।

আমাদের ডিএনএর মোটামুটি ৫ শতাংশ হলো রেট্রোভাইরাস, এদের নন কোডিং ডিএনএর মধ্যে ফেলা হয়। এর মধ্যে কিছু আছে যারা নিউরাল প্রোজেনিটর সেল ঘচঈ-এর কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী।

ঘচঈ অনেকটা স্টেম সেলের মতো কাজ করে। তারা বিভিন্ন রকম নিউরনের জন্ম দিতে পারে। গবেষকদের মতে, এসব রেট্রোভাইরাসের কারণেই নিউরনরা এত ধরনের কাজ করতে পারে। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে এসব ভাইরাসের বিভিন্ন ভূমিকার কারণেই আমাদের মধ্যে এত বৈচিত্র্য দেখা যায় বলে ধারণা করছেন তারা। এদের ওপর গবেষণা করে জানা যেতে পারে কী কারণে এসব জিনের কাজে বিচু্যতি ঘটে আর ব্রেনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এ ছাড়া বংশগতির কারণে সৃষ্ট রোগগুলোর ব্যাপারেও ধারণা পাওয়া যেতে পারে। সাধারণত বংশগত রোগের ক্ষেত্রে আমাদের পরিচিত জিনগুলোর দিকে নজর দেওয়া হয়। এখন থেকে এসব রেট্রোভাইরাসের দিকেও নজর দেওয়া হবে।

মস্তিষ্ক আমাদের সম্পূর্ণ দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কেননা এ মস্তিষ্কে রাখা আমাদের সব স্মৃতি, এ মস্তিষ্কই হচ্ছে আমাদের মন আর আমাদের পরিচয়ের ধারক। এ মস্তিষ্কই হচ্ছে আমাদের বুদ্ধিমত্তার উৎস। আপনার মস্তিষ্ক কর্মক্ষম মানে আপনি আরও অনেক বেশি বুদ্ধিমান। সব কাজ সহজে করতে পারবেন, সবকিছু সহজে বুঝতে পারবেন, হয়ে উঠবেন একজন সফল মানুষ। কিন্তু কীভাবে বৃদ্ধি করবেন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা? একবারে একটি কাজ করুন। কখনো একাধিক বড় কাজে একসময় মস্তিষ্ক ব্যবহার করবেন না। এতে কোনো কাজটিই শতভাগ নিখুঁত হবে না, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভাগ হয়ে যাবে।

মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় তথ্য জমা করবেন না। আপনার কম্পিউটারে যেমন অপ্রয়োজনীয় ছবি বা কনটেন্ট রাখেন না আপনি, কম্পিউটারের ভালোর জন্য সব ডিলিট করে দেন। মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও তা-ই। এমন কোনো কিছু মনে রাখার চেষ্টা করবেন না যা আপনার প্রয়োজন নেই।

যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করবেন, তখন এমন সবকিছু থেকে দূরে থাকুন যা আপনার মনোযোগ কেড়ে নেয়। যেমন ধরুন সেল ফোন বা ফেসবুক বা বন্ধুদের সংস্পর্শ। একলা একটা কাজ গভীর মন দিয়ে করলে মস্তিষ্ক অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে না বিধায় কাজ ভালো হয়।

বড় চিন্তা করুন, বড় স্বপ্ন দেখুন। বাস্তব হবে কি হবে না, তা ভাবার আগে পস্ন্যান করুন যে কীভাবে বাস্তব করা যায়। খুঁটিনাটি সবকিছু হিসাব করে রাখুন। বারবার ঝালাই করুন। এতে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে।

মস্তিষ্ককে খাটানোর জন্য সঠিক সময় বেছে নিন। সাধারণত একটা লম্ব্বা ঘুমের পর মস্তিষ্ক একদম সতেজ থাকে আর তখন দারুণ হয় সব কাজ। তাই রাতের লম্ব্বা ঘুমের পর সকালেই মস্তিষ্ককে দিয়ে জরুরি সব কাজ করিয়ে নিন।

নিজের কর্মক্ষেত্রে হোক বা জীবনে, সব সময়ই নতুন কিছু আবিষ্কারের চেষ্টা করুন। এতে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে। মস্তিষ্ককে শেখার সুযোগ দিন, তাকে উৎসাহিত করুন। আমরা যখন নিজের আগ্রহে কিছু শিখি বা চর্চা করি, মস্তিষ্ক উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। তাই নিজের আগ্রহকে মূল্য দিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে