চাঁদে মহাকাশ স্টেশন

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক
চাঁদে মহাকাশ স্টেশন তৈরির জন্য এক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে চীন-রাশিয়া। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বলছে, তারা চীনের জাতীয় মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে একটি চুক্তিতে সই করেছে। দুই দেশের সরকারের পক্ষে রাশিয়া ও চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নেতারা এই চুক্তিতে সই করেছেন। গবেষণার জন্য তারা চন্দ্রপৃষ্ঠে কিংবা চাঁদের কক্ষপথে অথবা উভয় স্থানেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লুনার সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টার বা আইএলআরএস। দুই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে রাশিয়া ও চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশও চাইলে এই কেন্দ্রটি ব্যবহার করতে পারবে। স্টেশনটি সবার জন্য খোলা থাকবে। আন্তর্জাতিক এই চন্দ্র কেন্দ্রের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালিত হবে যার মধ্যে রয়েছে চাঁদে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো এবং বিভিন্ন কাজে এই উপগ্রহটিকে ব্যবহার করা। চীন এবং রাশিয়া তাদের সংগৃহীত অভিজ্ঞতা মহাকাশ বিজ্ঞান, গবেষণা এবং মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি ও যন্ত্র-সামগ্রী তৈরি এবং এসব ব্যবহারে কাজে লাগাবে। চাঁদে একটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের জন্য তারা যৌথভাবে একটি পরিকল্পনা তৈরি করবে। চাঁদে মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা, নকশা তৈরি, নির্মাণ এবং এটি পরিচালনায় রাশিয়া ও চীন একসঙ্গে কাজ করবে। মহাকাশে বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন বা আইএসএস নামের একটি গবেষণা কেন্দ্র আছে যেখানে নভোচারীরা অবস্থান করছেন। প্রায় ২০ বছর আগে সেটি মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত মহাকাশে এটিই একমাত্র স্টেশন যেখানে মানুষ অবস্থান করছে। চাঁদ এবং মহাকাশের আরও গভীরে গবেষণা পরিচালনার জন্য একটি তথ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারেও চীন ও রাশিয়া সম্মত হয়েছে বলে বিবৃতিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। চীনের মহাকাশ কর্মসূচির বিষয়ে একজন গবেষক চেন লান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এই প্রকল্পটি অনেক বড় একটি ঘটনা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় চীনের দিক এটাই হবে সবচেয়ে বড় সহযোগিতা। ফলে এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। মহাকাশ গবেষণায় তুলনামূলকভাবে অনেক দেরিতে নেমেছে চীন এবং গত ডিসেম্বর মাসে দেশটি চাঁদে চাঙ্গ'ই-৫ নামে একটি মহাকাশ যান পাঠিয়েছিল যা চাঁদের বুক থেকে পাথর ও 'মাটি' সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। এ পর্যন্ত মাত্র তিনটি দেশ চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনতে পেরেছে। চাঁদে চীনের এই অভিযানকে মহাকাশে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তিবৃদ্ধির একটি প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মহাকাশ গবেষণায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন প্রচুর অর্থও বিনিয়োগ করেছে। চীন এখন চাঁদের অভিমুখে চাঙ্গ'ই-৭ নামে একটি যান পাঠানোর জন্য কাজ করছে। রাশিয়ার এ সংক্রান্ত পরবর্তী কর্মসূচির লুনা ২৭। এই দুটো প্রকল্পেরই লক্ষ্য চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গবেষণা চালানো। যুক্তরাষ্ট্রও কিছু পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে যাতে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটির চাঁদ সংক্রান্ত গবেষণায় ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশটির এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে আর্টেমিস যাতে একজন নারী ও পুরুষ চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে।