কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম

প্রকাশ | ২২ মে ২০২১, ০০:০০

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
স্মার্টফোন-ট্যাবলেট, কর্মস্থলে ল্যাপটপ-কম্পিউটার, আর বাসাবাড়িতে টেলিভিশন। এ যুগে ?মানুষের পুরো সময়টাই যেন কাটে ডিজিটাল ডিভাইসে চোখ রেখে। এর উপর কেউ যদি ভিডিও গেমস কিংবা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্ত হন, তাহলে তো কথাই নেই। রংচঙা এসব ডিভাইসের পর্দায় তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চোখের 'বারোটা' বেজে যায়। দেখা দেয় চোখে ব্যথা, লালচে দাগ, ক্লান্তি, এমনকি দৃষ্টি সমস্যাও। এ ধরনের অসুস্থতাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে 'কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম' বলা হয়। তবে কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম হলেও এ অসুস্থতা নেমে আসে স্মার্টফোন-ট্যাবলেটসহ অন্যান্য হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস ব্যবহারের কারণেও। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করেন, ডিজিটাল পর্দায় চোখ রেখে কাজ করে যদি এর যত্ন নেওয়া না হয়, তবে 'সিনড্রোম' কেবল 'সিনড্রোম'ই থাকবে না, ঠেলে দিতে পারে অন্ধত্বেও। এ বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে কথা বলছিলেন সিঙ্গাপুরের হুইলক প্যালেসের শিনাগাওয়া আই সেন্টারের মেডিকেল ডিরেক্টর ও খ্যাতনামা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. লি সাও বিং। আমরা যতটা সময় কম্পিউটার বা এ ধরনের ডিজিটাল পর্দায় তাকিয়ে থাকছি, ততটা সময়ের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়তে থাকে চোখের সমস্যা। এ ধরনের ডিভাইসে আমরা লম্বা সময় অপলক তাকিয়ে থাকি, যার ফলে চোখ ভিজতে পারে না। এতে আমাদের চোখ শুকিয়ে যায়। আর শুষ্কতার কারণে দেখা দেয় যাবতীয় অসুস্থতা। কম্পিউটার ও প্রযুক্তির এ যুগে যেহেতু এসব ডিভাইস এড়িয়ে কাজ করা সম্ভব নয়, সেহেতু এর মধ্যে থেকেই সুস্থ থাকতে হবে। সে জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও চোখের যত্ন-আত্তি। ড. লি সাও বিং বাতলে দিয়েছেন সে সব যত্ন-আত্তি। প্রয়োজনমতো ডিভাইসের লাইটিং সেট কম্পিউটার-স্মার্টফোন বা এ জাতীয় ডিভাইসে কাজের ক্ষেত্রে তার আলোকব্যবস্থা বা লাইটিং সঠিক মানে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এতে কাজেও থাকে স্বাচ্ছন্দ্য, সুযোগ থাকে সৃজনশীলতা প্রকাশেরও। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করার ক্ষেত্রে অন্য কোনো উৎস থেকে যেন ডিভাইসটির ওপর আলো না পড়ে তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী যেখানটায় বসছেন তার পেছনের কোনো বাল্ব অথবা জানালা দিয়ে আসা আলো ভোগাতে পারে। এ ঝামেলা থেকে মুক্তি নিশ্চিত করেই কাজে মনোযোগ দিতে হবে। পর্দার ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্টে সামঞ্জস্য : কম্পিউটার, ল্যাপটপ অথবা স্মার্টফোনের পর্দা 'চক্ষুবান্ধব' করতে এর ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্টে সামঞ্জস্য রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য ডিভাইসের ডিসপেস্ন সেটিংয়ে গিয়ে পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে ডিভাইসের ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্ট সেট করতে হবে। যেমন- যদি কোনো শব্দ বা বাক্য সহজে না পড়া যায়, তবে তার মানে ডিভাইসের পর্দার আলো অনেক কমানো। তাই শব্দ বা বাক্য ভালোভাবে পড়ার মতো করে ব্রাইটনেস সেট করতে হবে। বর্ণের ফন্ট বাড়ান : কম্পিউটার-ল্যাপটপ-স্মার্টফোনে কাজের ক্ষেত্রে ফন্ট ছোট থাকলে তা চোখের ওপর চাপ ফেলে। এ চাপ কমাতে ফন্ট বাড়াতে হবে। ফন্ট বাড়ালে পড়ার অভিজ্ঞতাও বাড়বে। ফন্ট বড় থাকলে পড়ার ক্ষেত্রে বিরক্তি আসে না, তাতে অনেক দীর্ঘ সময় ধরেও কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসে কিছু পড়া অথবা সম্পাদনা করা যায়। চশমা-লেন্সের ব্যাপারে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের যথার্থতা যাচাই : ডাক্তার আপনার চশমা বা লেন্সের ব্যাপারে যে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন, তা অবিরাম কম্পিউটার-ল্যাপটপনির্ভর কাজের বিবেচনায় ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কাজের বিবেচনায় চশমা বা লেন্সের পাওয়ার সঠিক না হয়, তবে চোখ নিয়ে আরও বেশি ভুগতে হবে।