বিদু্যতের আবিষ্কার

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২১, ০০:০০

শেখ একেএম জাকারিয়া
প্রযুক্তি বিজ্ঞানের সবচেয়ে সেরা আবিষ্কার বিদু্যৎ। বিদু্যৎ আবিষ্কার না হলে এ পৃথিবী আজও অন্ধকারেই থেকে যেত। মানুষজাতিকে আলোর মুখ দেখিয়েছে বিদু্যৎ। বিদু্যতের ওপর প্রথম ব্যবহারিক গবেষণা শুরু করেন আমেরিকান বিজ্ঞানী বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন। সময়টা ছিল ১৮ শতকের মাঝামাঝি। সে সময়ে এখনকার মতো চাইলেই বিদু্যৎ পাওয়া যেত না। সাময়িক সময়ের জন্য বিশেষ শ্রেণির লোকজন বিদু্যৎ ব্যবহার করতেন। ১৮৪০ সালে বিদু্যৎ সংযুক্ত তারের সাহায্যে বার্তা প্রেরণের যে পদ্ধতি বা যন্ত্র (টেলিগ্রাফ) আবিষ্কার হয় তাও ব্যাটারির মাধ্যমে চালানো হতো। টেলিগ্রাফ আবিষ্কারের নয় বছর আগে মাইকেল ফ্যারাডের আবিষ্কৃৃত একটি সূত্র কাজে লাগিয়ে ১৮৩১ সালে ডায়নামো আবিষ্কৃৃত হয়। ফ্যারাডে ডায়নামো আবিষ্কার করলেও বেনজামিন ফাঙ্কলিনকে বিদু্যৎ আবিষ্কারক হিসেবে ধরা হয়। আমেরিকান এই বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বিদু্যৎ আবিষ্কার নিয়ে একটি চমকপ্রদ গল্প আছে। যা আমাদের জানা প্রয়োজন। তৎকালীন সময়ে বিজ্ঞানীই বলেন আর সাধারণ মানুষই বলেন তাদের কেউই জানতেন না বৃষ্টির দিনে আকাশে চমকানো বিদু্যৎ আর মানুষের তৈরি বিদু্যৎ একই জিনিস। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন প্রমাণ করে দেখান, আকাশের চমকানো বিদু্যৎ আর মানুষের তৈরি বিদু্যৎ একই জিনিস। সময়টা ছিল ১৭৫২ সালের ১৫ জুন। ফ্রাঙ্কলিন প্রবল এক ঝড়-বাদলের দিনে বিপদের আশঙ্কাযুক্ত এক পরীক্ষা করে বসেন। তিনি ঝড়-বৃষ্টির দিনে আকাশে উড়িয়ে দেন রেশমি কাপড়ের তৈরি এক ঘুড়ি। ঘুড়ি ওড়াতে যে সুতা ব্যবহার করেন সেটাও রেশমি সুতা ছিল। সুতার শেষ মাথায় মানে হাতের একেবারে কাছাকাছি বেঁধে দিলেন ধাতুর তৈরি একটি চাবি। ঘুড়ি ওড়াতে রেশমি সুতা নেওয়ার আসল কারণ হচ্ছে, রেশমি কাপড় বা সুতা খুব ভালো ইলেকট্রন পরিবাহী। রেশমি কাপড়ে কাচের টুকরো ঘষে নিলে তা ছোট ছোট কাগজের টুকরো বা কাঠের গুঁড়োকে আকর্ষণ করে যা মানুষের জ্ঞাত ছিল অনেক আগে থেকেই। তার ওপর সেদিন ছিল প্রচন্ড বৃষ্টি। বৃষ্টির জলে ভেজে সুতার পরিবহণ ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কলিন মোটেও জানতেন না কত ভয়ানক কাজ তিনি করছেন। দূরের আকাশে বিদু্যৎ চমকানোর সঙ্গে সঙ্গে সে বিদু্যৎ ভেজা সুতো বেয়ে নেমে এলো চাবির মধ্যে। সুতোয় বাঁধা চাবিতে সেদিন বয়ে যায় প্রবল বিদু্যতের ঝলক। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের কপাল যে কী রকম ভালো ছিল তা ভাবলেই শিউরে ওঠে শরীর। কেননা, এ কাজে সেদিন দুজন লোক মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গিয়েছিলেন। আকাশে যে কী পরিমাণ বিদু্যৎ থাকে সেটা প্রায় আড়াইশো বছর আগে পৃথিবীর মানুষকে পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন আমেরিকান এ বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন।