সামাজিক মাধ্যমে আপনার একাউন্টগুলোর ভবিষ্যৎ

প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

এম এ আলম
উইড়া যায়রে পঙ্খি, তার পইড়া থাকে পালক। ঠিক তেমনি প্রকৃতির নির্ধারিত নিয়মে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে আপনাকে। রয়ে যাবে জীবদ্দশায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে খুলে যাওয়া আপনার একাউন্টগুলো। কত স্মৃতিই না জড়িয়ে আছে সে একাউন্টে। মৃতু্যর পর কী হবে এসব সামাজিক যোগাযোগের একাউন্টের? সেটা কি অন্য কেউ চালাবে? নাকি নতুন একাউন্টের ভিড়ে তা হারিয়ে যাবে চিরতরে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল। তারা জানাচ্ছে, মৃতু্যর আগেই আপনি ঠিক করে যেতে পারবেন সামাজিক মাধ্যমে আপনার একাউন্টগুলোর ভবিষ্যৎ। ফেসবুক আপনি চাইলে আপনার মৃতু্যর পরও ফেসবুক একাউন্টটি চালু রাখতে পারবেন অথবা বন্ধ করে দিতে পারবেন। যদি আপনি মৃতু্যর পরও আপনার একাউন্টটি চালু রাখেন, তাহলে সেখানে 'রিমেমবারিং' বা স্মরণীয় শব্দটি থাকবে। এছাড়া মৃতু্যর আগে আপনার একাউন্টটি যে কাউকে দলিল করে দিয়ে যেতে পারেন। ফলে আপনার মৃতু্যর পরও একাউন্টটির কার্যক্রম সচল থাকবে। এজন্য এ ব্যাপারে একটি আইনি চুক্তি বা দলিলের কপি ফেসবুকে পাঠাতে হবে। সেখানে ব্যক্তির নাম ও তার সঙ্গে আপনার সম্পর্কের বিষয়টিও উলেস্নখ করতে হবে। আপনার মৃতু্যর পর, মৃতু্য সনদ দেখিয়ে উইলে উলিস্নখিত ব্যক্তিটি আপনার একাউন্টটির দখল নিতে পারবেন। তবে যত দিন ফেসবুক আপনার মৃতু্যসনদ হাতে না পাচ্ছে, ততদিন একাউন্টটি আপনারই থাকবে। ইউটিউব বর্তমানে ইউটিউবের চ্যানেলগুলো আর্থিক দিক দিয়ে বেশ লাভজনক। এছাড়া প্রচুর ইউটিউব চ্যানেলের বেশ জনপ্রিয়তাও রয়েছে। তাই মৃতু্যর আগে আপনার লাভজনক চ্যানেল বা একাউন্টটি দিয়ে যেতে পারেন প্রিয় কাউকে। প্রক্রিয়াটিও অনেকটা ফেসবুকের মতোই। আপনার মৃতু্যর পর কে আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা একাউন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন, তা একটি আইনি চুক্তি বা দলিলের মাধ্যমে জানাতে হবে ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে। তা না হলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা একাউন্টটি নতুন চ্যানেল ও একাউন্টের ভিড়ে হারিয়ে যাবে চিরতরে। কারণ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোনো ইউটিউব চ্যানেল বা একাউন্টে তৎপরতা দেখা না গেলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই তা বন্ধ করে দেয়। ইনস্টাগ্রাম আপনার ইনস্টাগ্রাম একাউন্টটিও মৃতু্যর পর অন্য কারও মাধ্যমে সচল রাখা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রামের নীতি কিছুটা ভিন্ন। আপনার মৃতু্যর পর যে ব্যক্তি আপনার মৃতু্যসনদ দেখাতে পারবেন, সেই ব্যক্তিই হবেন একাউন্টটির মালিক। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন, আপনার একাউন্টটি চালু থাকবে নাকি বন্ধ করে দেওয়া হবে। টুইটার মৃতু্যর পর আপনার টুইটার একাউন্টটি অন্য কারও মাধ্যমে চালু রাখার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে মৃতু্যর পর একাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনার পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের যে কেউ আপনার একাউন্টটি বন্ধ করে দিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার মৃতু্যর সনদ এবং তিনি যে আপনার পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়, তার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে পারলেই আপনার একাউন্টটি অপসারণ করবে টুইটার কর্তৃপক্ষ। গুগল মৃতু্যর পর আপনার গুগল একাউন্টটি আর চালু রাখার সুযোগ নেই। তবে তা বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্য যে মানুষটিকে আপনি গুগল একাউন্টটি বন্ধ করার ক্ষমতা দেবেন, সে মানুষটির সঙ্গে একবার হলেও ই-মেইলে আলাপচারিতা থাকতে হবে আপনার। কারণ, আপনার মৃতু্যসনদ এবং গুগল একাউন্ট থেকে পাঠানো ই-মেইলগুলোর যে কোনো একটি মেইলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিষয়বস্তু বর্ণনা আপনার গুগল একাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।