বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৪০ দেশের অর্ধশতাধিক কোম্পানির সফটওয়্যার তৈরি করেছেন শরিফ

সাজেদুর আবেদীন শান্ত
  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ফারুক হাসান শরিফ, জন্ম বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মিঠাখালীর খোনকারেরবেড় গ্রামে। শরিফ ২০০৬ সালে বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০০৮ সালে ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৬ সালে এমআইএসে এমএসসি শেষ করেন।

ছোটবেলা থেকেই শরিফ অন্যরকমের। যেখানে অধিকাংশ ছেলেরা বাইরে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে, সেখানে শরিফ ঘরে বসে উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা করত।

ছোটবেলার অভ্যাসটা এখনো রয়ে গেছে শরিফের। পার্থক্য তখন শরিফ খেলনা তৈরি করার চেষ্টা করত আর এখন সফটওয়্যার তৈরি করেন। এ পর্যন্ত শরিফ ৪০টি দেশের অর্ধশতাধিক কোম্পানির জন্য বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি করেছেন। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য কোম্পানি- ডবডড়ৎশ, অঁঃড়উবংশ, ঠরৎঃঁধষ জবধষরঃু অৎপযরঃবপঃঁৎধষ, এড়ষফরধ, চঈঠঊজঝঅখ ঝঞটউওঙঝ খখঈ.

শুরুটা সহজ ছিল না শরিফের। তিনি ঢাকায় পড়ালেখা করেছেন। ২০১৭ সালের শেষের দিকে মাস্টার্স শেষ করার পর পরিবারের অমতে একা একা ঢাকায় চলে আসেন তিনি। এ অবস্থায় ঢাকাতে এসে টিকে থাকা তার জন্য কষ্টকর ছিল।

কী করা যায়! ভাবতে ভাবতে শরিফ সিদ্ধান্ত নেন, যেহেতু ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার নিয়ে আগ্রহ তাই এটা দিয়েই কিছু একটা করব। চাকরির প্রতি তার বরাবরই আগ্রহ কম। তাই শরিফ নিজে কিছু করার চেষ্টা করেন। নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অনলাইন ও ইউটিউব থেকে পাইথন প্রোগ্রামিং শিখে ফেলেন শরিফ।

শরিফ বলেন, যেহেতু প্রোগ্রামিং অনেক বড় জগৎ, তাই একটা সেক্টরে ফোকাস করলাম। তা হলো রোবটিক প্রসেস অটোমেশন (জচঅ)। যেহেতু কোনো কিছু অটোমেট করতে আমার ভালো লাগে তাই অল্প সময়ে এ এই বিষয়ে পারদর্শী হয়ে গেলাম।

এরপর শরিফ আপওয়ার্কে একাউন্ট খুলে কাজের জন্য আবেদন করেন। আবেদন করার প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম কাজ পেয়ে যান তিনি। আমেরিকার এক কোম্পানির ডেটা মাইনিং-এর কাজ, কাজটি তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেন। এতে তার গ্রাহক খুশি হয়ে কাজ শেষে তাকে ফাইভ স্টার রেটিং দেন, এরপর তিনি আপওয়ার্কে নিয়মিত কাজ করে যান। এর পাশাপাশি শরিফ লাডিজিটা (ষধফরমরঃধ) নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমেই বিভিন্ন অটোমেশন ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সার্ভিস দেন। তিনি বলেন, এরপর আমাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। আমার নিজস্ব ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন মার্কেটপেস্নস থেকে আমি আমার দক্ষতা দিয়ে ৩ বছরে প্রায় ১০০০ প্রোজেক্ট সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে আমার ৪০টা দেশে শতাধিক ক্লায়েন্ট আছে। আমি মূলত এখন বিভিন্ন অটোমেশন সফটওয়্যার তৈরি করি, যা মানুষের সাহায্য ছাড়া অটোমেটিক্যালি বিভিন্ন প্রসেস সম্পন্ন করে। সহজ ভাষায় যাকে কম্পিউটার রোবট বলা যায়। আমার সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে যেমন হিউমান ইন্টারভেনশন প্রয়োজন হয় না তেমনি সময় এবং টাকা দুটোই বাঁচে। আমি স্বপ্ন দেখি শিগগিরই দেশের মানুষ জচঅ-এর গুরুত্ব বুঝতে পারবে এবং ব্যবসার পরিধি বাড়াতে তা ব্যবহার করবে। দেশের তৃণমূল পর্যায় জচঅ-এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছেন শরিফ। এছাড়া তিনি ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পার্টটাইম লেকচারার হিসেবে আছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে