বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সায়ানের যাত্রা শুরু

তানিউল করিম জীম
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। আজ সেই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে মানুষের জীবনযাত্রা। প্রযুক্তির কারণে এখন মানুষ কম সময়ে কম পরিশ্রমে অনেক কঠিন কাজ খুব সহজে করতে সক্ষম হচ্ছে। প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে বাংলার কৃষিতেও। তাই এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে কৃষিকাজ। কম জমিতে, কম সময়ে অধিক ফলনের লক্ষ্যে তাই প্রয়োজন আরও উন্নত প্রযুক্তি। তরুণদের মধ্যে আধুনিক কৃষিযন্ত্র ও প্রযুক্তি ভাবনাকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে 'তরুণদের মেধা ও শক্তি গড়বে সবুজ পৃথিবী' স্নোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জ্ঞানভিত্তিক পস্ন্যাটফর্ম 'স্মার্ট এগ্রো-টেকনোলজি ইনোভেশন ইয়ুথ নেটওয়ার্ক' নামে একটি সংগঠন গঠন করা হয়েছে। যাকে সংক্ষেপে 'সায়ান' বলা হয়। অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব (আসমি)-বাংলাদেশ প্রকল্পটির আয়োজনে ২৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৭টায় জুম অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংগঠনটির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যদিয়ে শুরু হয় সায়ানের আনুষ্ঠানিক পথ চলা।

অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব (আসমি)-বাংলাদেশ প্রকল্পটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফিড দি ফিউচার প্রোগ্রাম ও ইউএস এইডের অর্থায়নে এবং সাসটেইনেবল ইনটেনসিফিকেশন ইনোভেশন ল্যাব (সিল), কানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র ও অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন কনসোর্টিয়াম (এএসএমসি), ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের মাঠপর্যায়ে ব্যবহার উপযোগী লাগসই কৃষিযন্ত্র প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহার বিষয়ক গবেষণার সঙ্গে জড়িত। গবেষণার পাশাপাশি প্রকল্পটি উদ্ভাবিত প্রযুক্তিগুলোকে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কার্যক্রমকে বেগবান করতে প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে। সায়ান মূলত ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের ৪টি এইচের সমন্বয়ে গঠিত। হেড, হার্ট, হ্যান্ড এবং হেলথ ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত একটি তরুণদের সংগঠন। তরুণদের আধুনিক কৃষিযন্ত্র ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উৎসাহিত করতে সায়ান পস্ন্যাটফর্মটি সারা বিশ্বের কিশোর ও তরুণদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে ভূমিকা রাখবে। যার মাধ্যমে তরুণরা তাদের সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনের মধ্যদিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সবুজ পৃথিবী বিনির্মাণ করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে সায়ানের সঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের আরও ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় (হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) যুক্ত আছে। এই সংগঠনে প্রধান অ্যাডভাইজারসহ মোট ১১ জন (৬ জন জাতীয় অ্যাডভাইজার এবং ৪ জন আন্তর্জাতিক অ্যাডভাইজার) অ্যাডভাইজার এবং মোট ২১ জন (৬ জন জাতীয় মেনটর, ৩ জন আন্তর্জাতিক মেনটর, ১২ জন রিজিওনাল মেনটর) মেনটর রয়েছে। এছাড়া সায়ানের ৩১ জন তরুণ অ্যাম্বাসাডর রয়েছে। প্রধান অ্যাডভাইজার হিসেবে আছেন আসমি-বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ও কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মো. মঞ্জুরুল আলম এবং ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার হিসেবে আছেন আসমি-বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী পরিচালক ও কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর চয়ন কুমার সাহা।

বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ডক্টর মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডক্টর মো. মঞ্জুরুল আলম। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়-আরবানা শ্যাম্পেইনের অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন কনসোর্টিয়ামের (এএসএমসি) পরিচালক ডক্টর প্রশান্ত কে. কালিতা, ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়-আরবানা শ্যাম্পেইনের সহযোগী ডিন এবং এক্সটেনশন ইমিরিটাসের পরিচালক ডক্টর জর্জ ছাপার এবং বাকৃবি ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর একেএম জাকির হোসেন। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর লুৎফুল হাসান। এছাড়া এসিআই মোটরস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুব্রত রঞ্জন দাস এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ডক্টর মো. আইয়ুব হোসেন বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়া প্রাক্তন মহাপরিচালক ডক্টর এমএ মতিন এবং দি মেটাল প্রা. লিমিটেডের এমডি প্রকৌশলী সাদিদ জামিল উপস্থিত ছিলেন।

সম্মানিত অতিথি ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়-আরবানা শ্যাম্পেইনের অ্যাপ্রোপ্রিয়েট স্কেল মেকানাইজেশন কনসোর্টিয়ামের (এএসএমসি) পরিচালক ডক্টর প্রশান্ত কে. কালিতা সায়ানের অফিশিয়াল লোগোর মোড়ক উন্মোচনের মধ্যদিয়ে সায়ান লোগো প্রতিযোগিতার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেন এবং ভার্চুয়ালি পুরস্কারস্বরূপ ২০০ ডলারের চেক এবং সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়। এ সময় সায়ানের প্রধান অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ডক্টর মো. মঞ্জুরুল আলম 'সায়ান আইডিয়া কম্পিটিশন-২০২১'-এর পর্দা উন্মোচন করে। তরুণরা নতুন প্রযুক্তির আইডিয়া শেয়ারের মাধ্যমে কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এমনটিই প্রত্যাশা করে সায়ান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে