ফুয়েল সেলের প্রযুক্তিগত উন্নতি

প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

দিলরুবা হক
বতর্মানে জ্বালানি সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ফুয়েল সেলের প্রযুক্তিগত উন্নতির চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে বিশ্বের শীষর্স্থানীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী ফোডর্, ভলভো, টয়োটা ইত্যাদি কোম্পানি ফুয়েল সেলের পরিচালিত গাড়ির নমুনা বা মডেল তৈরি করেছে। ফুয়েল সেলচালিত গাড়িগুলোকে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল কার বলা হয়। তবে হাইড্রোজেনের উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহ করা বেশ কঠিন। বহুদিন আগে আবিষ্কৃত হলেও ফুয়েল সেল জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনে এটাও একটি বড় কারণ। বতর্মানে সাধারণত প্রাকৃতিক গ্যাস, প্রোপেন, মিথানল ইত্যাদি থেকে রিফমির্ংয়ের মাধ্যমে হাইড্রোকাবর্নকে হাইড্রোজেন গ্যাসে রূপান্তরিত করা হয়। তবে এ ব্যাপারে এখনো গবেষণা চলছে। এ ছাড়া বতর্মানে অল্প পরিমাণ জায়গায়, রিফমির্ংয়ের মাধ্যমে রূপান্তরিত হাইড্রোজেন গ্যাসের মজুদ অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি করার জন্য মেটাল অরগানিক ফ্রেম (ধাতু ও হাইড্রোকাবর্ন সম্মিলিত যৌগ) নামক নতুন যৌগ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। অটোমোবাইল ছাড়াও বিভিন্ন বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি যেমন : ল্যাপটপ, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ইত্যাদিতে ফুয়েল সেল ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া অনেক গবেষক ফুয়েল সেলচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির কথা ভাবছেন। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাগুলো যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ, অধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা ইত্যাদি কাটিয়ে উঠতে পারলে নিভর্রযোগ্য এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে ফুয়েল সেলই হয়ে উঠবে আগামী দিনের শক্তির প্রধান উৎস।ফুয়েল সেল হলো এক ধরনের রাসায়নিক ক্রিয়ার দ্বারা বিদ্যুৎপ্রবাহ সৃষ্টিকারী যন্ত্র। জামার্ন বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান ফ্রেডরিক স্কোবিয়েন (ঈযৎরংঃরধহ ঋৎরবফৎরপয ঝপযস্খহনবরহ) প্রথম ফুয়েল সেল সম্পকের্ ধারণা দেন ১৮৩৮ সালে। আর তার ঠিক পরের বছর ১৮৩৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে শৌখিন ব্রিটিশ পদাথির্বদ স্যার উইলিয়াম রবাটর্ গ্রোভ ফুয়েল সেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণা বাস্তবায়ন করেন। ১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে ফুয়েল সেলের ব্যবহার শুরু হয়। ফুয়েল সেল সাধারণ ব্যাটারির (তড়িৎ রাসায়নিক কোষ) চেয়ে ভিন্ন ধরনের। সাধারণ ব্যাটারির রাসায়নিক উপাদান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর ব্যবহার উপযোগী থাকে না। কিন্তু ফুয়েল সেলের রাসায়নিক উপাদান প্রতিবার প্রদান করে তা ব্যবহার করা যায়। তাই এটা এক ধরনের নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যম। ফুয়েল সেলের প্রধান রাসায়নিক উপাদান হলো হাইড্রোজেন ও বাতাস থেকে প্রাপ্ত অক্সিজেন। তা ছাড়া অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে হাইড্রোকাবর্ন যৌগ যেমন অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়।