জীবাণুবিষয়ক গবেষণা

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আলীজা ইভা
জীবাণু বিষয়ক গবেষণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা সবসময় সতকর্ থাকেন। কারণ যে কোনো রকমের দুঘর্টনার সম্ভাবনাকে এড়ানো কঠিন। যাই হোক বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম এইক্ষেত্রে মানুষকে দেখিয়েছে আশার আলো। সময় তার সাক্ষী। ম্যালেরিয়া জীবাণুর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। জীবাণুবিষয়ক গবেষণাগুলো যেন মানুুুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয় এটাই সকলের কামনা। ম্যালেরিয়ার জীবাণু আর ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার চিত্র এখানে তুলে ধরা হলো। সবোর্পরি মশা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাযর্ক্রমও কিছুটা উল্লেখ করা হলো। আপনারা জানেন ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশা। বিজ্ঞানী জন হাফ কিন্সÑ ম্যালেরিয়া ইন্সটিটিউসের একজন বিজ্ঞান। তার দল মশার শরীরে এক ধরনের চিনি আবিষ্কার করেছেন। যে চিনির কারণে ম্যালেরিয়ার প্যারাসাইট মশার অন্ত্রে বেড়ে ওঠে। মশার অন্ত্রে ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে বঁাচার জন্য, এই চিনি খুবই জরুরি। জেকোভ ফ্লোরেনা এই গবেষণার একজন ঊধ্বর্তন বিজ্ঞানী। তিনি বলেছেন, মশার শরীরে এই চিনি উৎপাদন বন্ধ করে দিলে মশার অন্ত্রে ম্যালেরিয়ার জীবাণু আর বৃদ্ধি পায় না। এভাবে চেষ্টা করা হয়েছে মশার শরীরে এই চিনি উৎপাদন বন্ধ করা। তাদের কাজ ছিল নিশ্চিত একটা প্রমাণ, জেনেটিক পরিবতর্ন করে মশার শরীরে এই চিনির উৎপাদন বন্ধ করা যায়। কাজেই তারা জেনেটিক পরিবতর্ন ঘটিয়ে, সেই মশার শরীরে তারা দেখতে পেলেন, মশার অন্ত্রে ম্যালেরিয়ার জীবাণু আর বেঁচে থাকতে পারে না। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গবেষণাগারের বাইরে মশার মধ্যে এ ধরনের জেনেটিক পরিবতর্ন করা কঠিন। তাই মানুষের জন্য একটা টিকা আবিষ্কার করা। মানুষের শরীরে টিকার যে অ্যান্টিবডি তা মশার শরীরে চিনি উৎপাদন বন্ধ করবে। মশা যখন কোনো মানুষের শরীরে রক্ত চুষে খাবে। তখন মশার শরীরে ওই অ্যান্টিবডি প্রবেশ করবে। আর বিজ্ঞানীদের এ নতুন আবিষ্কার ম্যালেরিয়ার কাযর্কর টিকা তৈরি করতে খুবই সহায়ক হবে। ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরি করতে বিজ্ঞানীরা এক তত্ত¡ বা ক্লু-পেল। বিজ্ঞানী মাসিের্লা জিকোভ ¯েøানা বলেছেন, যে ম্যালেরিয়া রোগবাহিত হওয়া বন্ধ করতে তাদের কয়েক ধরনের ওষুধ রয়েছে। অ্যান্টিবডি সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ওষুধ একত্রে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রতিরোধে সক্ষম হবে। ফলে এই রোগ থেকে বিশ্বের মানুষ রেহাই পাবে। বিজ্ঞানী জেকোভ ¯েøানা গবেষণা করছেন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে। তিনি আরো বলেছেন, এ ধরনের টিকা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করে বাজারে ছাড়তে এখনো আর ১০ বছর লাগবে। আফ্রিকার ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী এবং মশার ওপর দীঘর্ গবেষণা শেষে একটি গুরুত্বপূণর্ বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ লিখেছেন ইংল্যান্ডের ইমপেরিয়াল কলেজ, লন্ডনের বিজ্ঞানীরা। তারা দেখিয়েছেন, আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত এনোফিলিশ মশার দুটো প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এ প্রজাতির একটির নাম তারা দিয়েছেন এনোফিলিশ জাম্বি। এই গবেষণার শীষির্বজ্ঞানী প্রফেসর জজর্ ক্রিস্টোফিড ইমপেরিয়াল কলেজে সেল এবং মলেকুলার বায়োলজি বিভাগের একজন প্রফেসর। বাংলাদেশে পরিবেশ ও বন সংক্রান্ত গবেষণা বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের কাজের ভিত্তিতে চলছে। সিডর, আইলা, ভ‚মিকম্পসহ নানা রকম প্রাকৃতিক দুযোর্গ এ দেশের সব স্তরের মানুষকে পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বড় বড় ঝড়-জলোচ্ছ¡াস থেকে রক্ষা পেতে আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশে যে পরিমাণ বনাঞ্চলের প্রয়োজন তা এখানে নেই। বড় ঝড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বনের প্রয়োজন কতটা বেশি তা এ দেশের মানুষ সিডরের সময় অবলোকন করেছে। একটি দেশে মানুষের টিকে থাকার জন্য সে দেশের পরিবেশ, জলবায়ু এবং বন অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ তিনটি ক্ষেত্র। তাই এ-সংক্রান্ত গবেষণা বিশেষ জরুরি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এ-সংক্রান্ত গবেষণা এখন বেশ নগণ্য পযাের্য় রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚গোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, বাংলাদেশে পরিবেশসংক্রান্ত গবেষণা হাস্যকর পযাের্য় রয়েছে। এই গবেষণার মধ্যে নতুনত্ব নেই। বাইরের ডাটা কপি করে এক ধরনের ফালতু প্রবন্ধ উপস্থাপন করে অনুদান টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বড় ধরনের দুযোের্গর সময় দিশাহারা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚গোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র পুলক জানান, পরিবেশ ভালো না থাকলে মানুষ বঁাচবে কী করে? শুধু গবেষণা দিয়ে কী হবে? সাধারণ মানুষের সচেতনতা থাকাটাও কম গুরুত্বপূণর্ নয়। এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগ ও মিডিয়ার ভ‚মিকার বিকল্প নেই। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের একজন কমর্কতার্ জানান, গত দুই বছরে এই মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় করণীয় অব্যাহত রেখেছে। বতর্মান বিশ্বে একটি মানসম্পন্ন ও জনপ্রিয় ওষুধ কোম্পানির নাম গøাক্সো স্মিথ ক্লাইন। এই ওষুধ কোম্পানির নিজস্ব গবেষণাগার ও ফামের্ তৈরি হচ্ছে ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন।