সংবাদ সংক্ষপে

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাল্টিটাস্কিংয়ের কৌশল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক স্মাটের্ফান হয়ে উঠেছে বতর্মানে সুইস নাইফ, একটিমাত্র প্রযুক্তি যা দিয়ে অসংখ্য কাজ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে তার মাঝে আছে ডিকশনারি, ক্যালকুলেটর, ব্রাউজার, ইমেইল, গেমবয়, ক্যালেন্ডার, ভয়েস রেকডার্র, গিটার টিউনার, ওয়েদার ফোরকাস্ট, জিপিএস, টুইটার, ফেসবুক আবার ফ্ল্যাশলাইট। ৩০ বছর আগের একটি আইবিএম কম্পিউটারের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ছোট্ট এই গ্যাজেট। কিন্তু এত কাজ একসঙ্গে করতে গিয়ে আসলে কতটা কাজ করা হচ্ছে আমাদের? মানুষের মস্তিষ্ক আসলে একসঙ্গে অনেক কাজ বা মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য উপযুক্ত নয়। অনেক কাজ করার সময় আসলে আমাদের মস্তিষ্ক এক কাজ থেকে আরেক কাজে লাফিয়ে বেড়ায়। এর ফলে বাস্তবে আমাদের কাযর্ক্ষমতা কমে আসছে। শুধু তাই নয়, মাল্টিটাস্কিং করতে গিয়ে বাড়ছে আমাদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন কটির্সলের পরিমাণ। এতে ধেঁায়াটে হয়ে পড়ছে আমাদের চিন্তাধারা। সহজেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আমাদের মনোযোগ। গবেষণায় দেখা যায়, ইনবক্সে একটি ইমেইল এসে বসে আছে, এটা জানার পর যদি অন্য একটি কাজে মন দেয়ার চেষ্টা করা হয় তবে আইকিউ কমে আসতে পারে ১০ পয়েন্ট পযর্ন্ত। মাল্টিটাস্কিংয়ের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে ড্রাগ নেয়ার ফলে সৃষ্ট খতির সঙ্গে। মাল্টিটাস্কিং করতে গিয়ে আমাদের মাঝে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ারও প্রবণতা দেখা যায়। ইমেইল বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অন্যের সঙ্গে কানেকটেড থাকতে গিয়ে যে আমরা এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছি, এ ব্যাপারে খেয়াল করছি না কেউই। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের সবার মস্তিষ্ক। মানুষের জিনোমের ৩ বিলিয়ন বেস পেয়ারের মাঝে মাত্র ৩ শতাংশ আসলে প্রোটিন তৈরির কাজ করে। বাকি সব নন কোডিং ডিএনএর মাঝে লুকিয়ে থাকে কিছু রেট্রোভাইরাস যা বিবতের্নর ধারায় চলে এসেছে আমাদের মাঝে। এরা ব্রেন ফাংশনের জন্য হতে পারে গুরুত্বপূণর্। মস্তিষ্কে মনোযোগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক সাধারণত আমরা ধরে নিই ভাইরাস মানেই রোগ। কিন্তু তা সব সময় সত্যি নয়। গবেষণায় জানা গেছে, কিছু রেট্রোভাইরাল ডিএনএ আমাদের জিনোমের এমন অংশে মিশে আছে যেগুলো মস্তিষ্কের কাযর্কলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এ থেকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে কেন মস্তিষ্কের কোষগুলো এত ধরনের আলাদা কাজ করতে সক্ষম। এদের কারণে আমাদের বুদ্ধিমত্তা এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। আমাদের ডিএনএর মোটামুটি ৫ শতাংশ হলো রেট্রোভাইরাস, এদের নন কোডিং ডিএনএর মধ্যে ফেলা হয়। এর মাঝে কিছু আছে যারা নিউরাল প্রোজেনিটর সেল ঘচঈ-এর কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। ঘচঈ অনেকটা স্টেম সেলের মতো কাজ করে। তারা বিভিন্ন রকম নিউরনের জন্ম দিতে পারে। গবেষকদের মতে, এসব রেট্রোভাইরাসের কারণেই নিউরনরা এত ধরনের কাজ করতে পারে। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মাঝে এসব ভাইরাসের বিভিন্ন ভ‚মিকার কারণেই আমাদের মাঝে এত বৈচিত্র্য দেখা যায় বলে ধারণা করছেন তারা। এদের ওপর গবেষণা করে জানা যেতে পারে কী কারণে এসব জিনের কাজে বিচ্যুতি ঘটে আর ব্রেনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এ ছাড়া বংশগতির কারণে সৃষ্ট রোগগুলোর ব্যাপারেও ধারণা পাওয়া যেতে পারে। সাধারণত বংশগত রোগের ক্ষেত্রে আমাদের পরিচিত জিনগুলোর দিকে নজর দেয়া হয়। এখন থেকে এসব রেট্রোভাইরাসের দিকেও নজর দেয়া হবে। মস্তিষ্ক আমাদের সম্পূণর্ দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ জায়গা। কেননা এ মস্তিষ্কে রাখা আমাদের সব স্মৃতি, এ মস্তিষ্কই হচ্ছে আমাদের মন আর আমাদের পরিচয়ের ধারক। এ মস্তিষ্কই হচ্ছে আমাদের বুদ্ধিমত্তার উৎস। আপনার মস্তিষ্ক কমর্ক্ষম মানে আপনি আরো অনেক বেশি বুদ্ধিমান। সব কাজ সহজে করতে পারবেন, সবকিছু সহজে বুঝতে পারবেন, হয়ে উঠবেন একজন সফল মানুষ। কিন্তু কিভাবে বৃদ্ধি করবেন মস্তিষ্কের কমর্ক্ষমতা? একবারে একটি কাজ করুন। কখনো একাধিক বড় কাজে একসময় মস্তিষ্ক ব্যবহার করবেন না। এতে কোনো কাজটিই শতভাগ নিখুঁত হবে না, মস্তিষ্কের কমর্ক্ষমতা ভাগ হয়ে যাবে। মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় তথ্য জমা করবেন না। আপনার কম্পিউটারে যেমন অপ্রয়োজনীয় ছবি বা কনটেন্ট রাখেন না আপনি, কম্পিউটারের ভালোর জন্য সব ডিলিট করে দেন। মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও তা-ই। এমন কোনো কিছু মনে রাখার চেষ্টা করবেন না যা আপনার প্রয়োজন নেই। যখন গুরুত্বপূণর্ কোনো কাজ করবেন, তখন এমন সবকিছু থেকে দূরে থাকুন যা আপনার মনোযোগ কেড়ে নেয়। যেমন ধরুন সেল ফোন বা ফেসবুক বা বন্ধুদের সংস্পশর্। একলা একটা কাজ গভীর মন দিয়ে করলে মস্তিষ্ক অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে না বিধায় কাজ ভালো হয়। বড় চিন্তা করুন, বড় স্বপ্ন দেখুন। বাস্তব হবে কি হবে না, তা ভাবার আগে প্ল্যান করুন যে কিভাবে বাস্তব করা যায়। খুঁটিনাটি সবকিছু হিসাব করে করে রাখুন। বার বার ঝালাই করুন। এতে মস্তিষ্কের কমর্ক্ষমতা বাড়ে। মস্তিষ্ককে খাটানোর জন্য সঠিক সময় বেছে নিন। সাধারণত একটা লম্ব^া ঘুমের পর মস্তিষ্ক একদম সতেজ থাকে আর তখন দারুণ হয় সব কাজ।