ক্রানিওপেগাস বিষয়ে অগ্রগতি

প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

শামীমা জান্নাত
সিটেল চিলড্রেন হসপিটালের মতে, ‘কনজয়েন্ট টোয়াইনের ডিম্বাণু আগে থেকেই বিভক্ত হয়ে থাকে এবং পরে সেটা একত্রিত হয়ে পরে ভ্রƒণ তৈরি করে।’ ইউনিভাসিির্ট অব মেরিল্যান্ড বলেছে, আনুমানিক দুই লাখ নবজাতক শিশুর মধ্যে মাত্র একটি শিশু কনজয়েন্ট টোয়াইন হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। তবে এর মধ্যে বেশির ভাগ শিশুই প্রথমদিনেই মারা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আনুমানিক ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পযর্ন্ত জোড়া লাগা শিশুরা মৃতবস্থায় জন্মায়। মাঝে মধ্যেই শোনা যায়, বুক জোড়া লাগা কিংবা মাথা জোড়া লাগা যমজ শিশু জন্মগ্রহণের খবর। যা বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। উদাহারণ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়কের্র দুই যমজ শিশু জাডোন এবং অ্যানিয়াসের প্রসঙ্গই টানা যেতে পারে। বতর্মানে ১৩ মাস বয়সী এই দুই যমজ ভাই জন্মগ্রহণ করেছিল জোড়া লাগা মাথা নিয়ে। এটি একটি বিশেষ ধরনের সমস্যা, যেটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ক্রানিওপেগাস। এই জটিল সমস্যায় শিশুরা তাদের খুলি এবং মগজ শেয়ার করে থাকে একে অন্যের সঙ্গে। ফলে জাডোন এবং অ্যানিয়াস নামক এই যমজ শিশু দুটি জন্মের পর থেকেই শুরু হয় বেঁচে থাকার মরণপণ লড়াই। শরীরের বৃদ্ধির সঙ্গে তাদের জোড়া লাগা মস্তিষ্কের আকার বাড়তে থাকে। চিকিৎসকরা ঝুঁকি নেন বিরলতম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশু দুটির মাথা আলাদা করার। কারণ এ ধরনের ক্ষেত্রে বঁাচার আশা একেবারে ক্ষীণ। ১৪ অক্টোবর নিউইয়কের্র মন্তেফিওর শিশু হাসপাতালে টানা ২০ ঘণ্টা নিরলস পরিশ্রমে মাথা সংযুক্ত এই শিশু দুটিকে সফলভাবে পৃথক করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। এই অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন হয়েছিল ৪০ জন দক্ষ চিকিৎসকের। এই সফল অস্ত্রোপচারটা যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি হলেন পেডিয়াট্রিক নিউরোসাজর্ন ডা. জেমস গুডরিচ। তিনি সিএনএনকে বলেছেন, ‘সুখবর, আমরা এটা করতে পেরেছি।’ যা হোক, হাফিংটন পোস্ট তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই বিষয়ে অনেকে অনেক থিওরি দিয়েছেন যে, কেন এই ধরনের শিশুরা জন্মগ্রহণ করে। ইউনিভাসিির্ট অব মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারের মতে, ‘কনজয়েন্ট টোয়াইন’ তাদের বলা হয় যারা শারীরিকভাবে একসঙ্গে সংযুক্ত থাকে। যেসব টোয়াইনস আলাদাভাবে জন্মগ্রহণ করে তাদের ভ্রƒণ তৈরি হওয়ার সময়ই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি আলাদা ভিন্ন ভিন্ন ভ্রƒণ তৈরি হয়। আর যেসব ভ্রƒণ জন্মগ্রহণের সময় পৃথক হতে গিয়ে সম্পূণর্রূপে হতে পারে না, তারাই পরে কনজয়েন্ট টোয়াইন হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। মায়ো ক্লিনিকের মতে, একটা ভ্রƒণ জন্মগ্রহণের আট থেকে ১২ দিনের মধ্যে আইডেন্টিকাল টোয়াইন আলাদা হতে শুরু করে। এটা ধারণা করা হয় যদি এই প্রক্রিয়াটি ভ্রƒণ গঠনের পরে আরও দেরি করে শুরু হয় আনুমানিক ১৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তাহলেই সম্ভবত কনজয়েন্ট টোয়াইনের জন্ম হয়।