মানুষের মুখাবয়ব নিয়ে

প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

শিল্পী আহম্মদ
হ্যাপি ফেস নিয়ে আরো একটি গবেষণা করেছেন যুুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। তারা দেখিয়েছেন, গান আমাদের ইমাজিনেশন ও পারসেপশন ক্ষমতায় ভ‚মিকা রাখে। তারা গবেষণা করে দেখান, মানুষের যখন আনন্দ জেগে ওঠে, তখন এমন ধরনের গান গায় যাতে মস্তিষ্কে আনন্দের ছবিগুলো ভেসে ওঠে আর যখন কষ্টের গান শোনে তখন দুঃখময় ছবিগুলো ভেসে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানা সম্ভব হয়েছে যে, সুখী চেহারাবিশিষ্ট মুখের দিকে মানুষ কতটুকু তাকায় তা জিনের সঙ্গে সম্পকর্যুক্ত। মানুষ হিসেবে আমরা অন্য মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই, মিশি, সম্পকির্ত হই। এ সম্পকের্র মানুষের দিকে আমরা তাকাই। তাকানোর পর তার মনোভাব বুঝে প্রতিক্রিয়া দেখাই। এই যে মানুষের মুখের দিকে তাকানো এবং তাকানোর পর অন্যের মনোভাব বোঝা ও নিজের মধ্যে একটি উপলব্ধি আসাÑ এ বিষয়টিও এখন বিজ্ঞানের গবেষণায় চলে এসেছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করে নিয়ে এসেছেন যে, মানুষের হাস্যোজ্জ্বল মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার পরিমাণের দিকটি জিনের সঙ্গে জড়িত। এ জিনটির নাম হচ্ছে ক্যানাবিনয়েড রিসেপ্টর জিন (সংক্ষেপে সিএনআর১ জিন)। সূ² এ বিষয়টি স্পষ্ট হয় অটিজম রোগীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের তাকানোর ও মনোযোগের পাথর্ক্য তুলনা করলে। ক্যানাবিনয়েড রিসেপ্টর জিনটি অটিজম রোগীদের ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা পরিবতির্ত থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত বিজ্ঞানী ড. বিসমাদেভ চক্রবতীর্ ক্যানাবিনয়েড রিসেপ্টর জিন আবিষ্কার করেন। তিনি দীঘির্দন ধরে মস্তিষ্কের সন্তুষ্টি ও প্রাপ্তির অনুভ‚তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যতম জায়গা স্ট্রাটিয়াম নিয়ে কাজ করছিলেন। তার গবেষণা কাযর্ক্রমে অটিজম রোগটিও জড়িত ছিল। অটিজম রোগীরা অন্য মানুষের মুখের দিকে বেশিক্ষণ মনোযোগ দিতে পারে না। পাশাপাশি তারা অন্য মানুষের মুখ যে আবেগ প্রকাশ করে তা ধরতে পারে না। ফলে ড. চক্রবতীর্ ও তার সহকমীর্ গবেষকদের একটি অন্বেষা আগ থেকেই ছিল যে, একজন মানুষ অন্য মানুষের মুখের দিকে কত সময় তাকিয়ে থাকে, অন্যের মুখের মাঝে বিরাজমান আবেগ কতটুকু ধরতে পারে তার কোনো জেনেটিক ভিত্তি আছে কি না। এ অন্বেষা থেকে তাদের যে দীঘর্ গবেষণা তা-ই নতুন এ তথ্য উন্মোচনে সহায়তা করে। অন্যদিকে, বায়োলজিক্যাল সাইকিয়াট্রি নামক আন্তজাির্তক গবেষণা প্রবন্ধে গবেষক অ্যাডাম ডি গোয়েস্টেলা এমন একটি হরমোনের উল্লেখ করেছেন যা হ্যাপি ফেসের মেমোরি বাড়িয়ে দেয়। এ হরমোনটির নাম অক্সিটোসিন। উল্লেখ্য, এ হরমোনটির আরো কিছু ব্যবহার ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে। যেমনÑ প্রেম ও হিংসা কাযর্ক্রমে ভ‚মিকা রাখা, শিশুদের মায়ের সঙ্গে যে আবেগময় মুহ‚তর্ সেই স্মৃতি বাড়িয়ে তোলা ইত্যাদি। এভাবে মুখাবয়বের সঙ্গে অক্সিটোসিন হরমোনের যে সম্পকর্ বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, তা নতুন বেশকিছু সম্ভাবনা মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে। সামাজিক সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসায় এ তথ্য কাজে লাগবে বলে তারা জানিয়েছেন।