দিন বদলের পরিক্রমায় হারিয়ে যেতে বসেছে টাইপ রাইটার

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক্ক
টাইপ রাইটার বা টাইপ মেশিন এমন একটি যন্ত্র যার সাহায্যে বোতাম টিপে কাগজে লেখা যায়। এটি যান্ত্রিক বা বৈদু্যতিন মেশিন যা প্রিন্টারের চলমান ধরনের দ্বারা উৎপাদিত অনুরূপ অক্ষরগুলো লেখার জন্য ব্যবহৃত একটি যন্ত্র। এই যন্ত্রটির সাহায্যে আমরা বর্ণ বা অক্ষর টাইপ করতে পারি। সাদা কাগজের ভাঁজে ভাঁজে কার্বন কাগজ রেখে রেখে এক সঙ্গে চার-পাঁচটি করে কপি টাইপ করা যায়। টাইপ করা অক্ষরগুলো ছাপার অক্ষরের মতো মনে হয়। হাতে লেখার চেয়ে টাইপে লেখা দ্রম্নততর হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, টাইপ রাইটার শব্দটি এমন একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়েছিল যিনি টাইপিং মেশিন ব্যবহার করেছিলেন। প্রথম বাণিজ্যিক টাইপ রাইটারগুলো ১৮৭৪ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল। তবে ১৮৮০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অফিসগুলোতে সাধারণ হয়ে ওঠেনি। টাইপ রাইটার দ্রম্নত ব্যক্তিগত হাতের লিখিত চিঠিপত্র ছাড়া অন্যসব লেখার জন্য একটি অনিবার্য সরঞ্জাম হয়ে ওঠে। এটি লেখক লেখার ক্ষেত্রে, অফিসে এবং ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ের চিঠিপত্রের লেখার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে। টাইপ রাইটারগুলো ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত বেশির ভাগ অফিসে একটি স্ট্যান্ডার্ড ফিক্সিং ছিল। এরপরে, তারা কম্পিউটারগুলোর মাধ্যমে বড় আকারে আরোপ করা শুরু করে। তবুও, বিশ্বের বিভিন্ন অংশে টাইপ রাইটারগুলো সাধারণ রয়ে গেছে, কয়েকটি নির্দিষ্ট অ্যাপিস্নকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়, এবং নির্দিষ্ট উপগোষ্ঠীতে এটি জনপ্রিয়। টাইপ রাইটারদের জন্য তৈরি ছডঊজঞণ কি-বোর্ড লেআউটটি কম্পিউটার কি-বোর্ডের মান হিসাবে রয়ে গেছে। উলেস্নখযোগ্য টাইপ রাইটার প্রস্তুতকারকদের মধ্যে- রেমিংটন অ্যান্ড সন্স, আইবিএম, গোদ্রেজ, ইম্পেরিয়াল টাইপ রাইটার সংস্থা, অলিভার টাইপ রাইটার সংস্থা, অলিভটি, রয়েল টাইপ রাইটার সংস্থা, স্মিথ করোনা, আন্ডারউড টাইপ রাইটার সংস্থা, অ্যাডলার টাইপ রাইটার সংস্থা এবং অলিম্পিয়া ওয়ার্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রথম উদ্ভাবিত টাইপ রাইটারে বিদু্যতের ব্যবহার ছিল না। পরবর্তীতে বৈদু্যতিক টাইপ রাইটার আবিষ্কৃত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন যন্ত্র প্রকৌশলী ক্রিস্টোফার শোলস? ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম আধুনিক ধাঁচের টাইপ রাইটার নির্মাণ করেন। ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রেমিংটন রান্ড কোম্পানি সাধারণ মানুষের জন্য শোলস অ্যান্ড গিস্নডেনস? ব্র্যান্ডের প্রথম টাইপ রাইটার বাজারজাত করে। পরে বাজারে আসে আরও উন্নত ধরনের অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক টাইপ রাইটার। টাইপ রাইটারের প্রযুক্তিতেই উন্নতভাবে কাগজে ঝকঝকে ছাপা পাওয়া যায়। \হটাইপ রাইটারের উন্নতি বর্তমান যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্বপূর্ণভাবে সাহায্য করেছে। আমাদের জীবনের প্রতি পদক্ষেপকে সে প্রভাবান্বিত করেছে। যদিও দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে এই যন্ত্রটির ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে। বর্তমান বিশ্বে টাইপ রাইটারের ব্যবহার প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। মূলত, কম্পিউটারের কি-বোর্ডের নকশা কিন্তু টাইপ রাইটার থেকেই নেওয়া। সুতরাং টাইপ রাইটার হচ্ছে কম্পিউটার চালানোর প্রথম ধাপ। কম্পিউটার পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে টাইপ রাইটারের পরিবর্তে।