এলপিজি প্রযুক্তির সম্ভাবনা

বাংলাদেশে এলপিজির ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। বাজারের যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে বলা যায় সম্ভাবনা আছে, কিন্তু তা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে বাজার বুদ্বুদের মতো ফেটে ধসে যেতে পারে...

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

আইরিন জামান নওরিন
বাংলাদেশের জ্বালানি অভাব পূরণ, এলপিজির নিরাপদ ব্যবহার এবং সর্বত্র এলপিজি পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'সাউথ এশিয়া এলপিজি সামিট-২০১৯'। রাজধানীর বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে ৮০টির বেশি দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এলপিজি ব্যবহারে সুবিধা সম্পর্কে জানানো এবং এলপিজি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করাই সম্মেলনের উদ্দেশ্য বলে জানান আয়োজকরা। সম্প্রতি এই সম্মেলন শুরু হয়। এতে এলপিজি অপারেটরদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশে অন্যতম এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিগ্যাস। এছাড়া বসুন্ধরা এলপিজি, ওমেরা এলপিজি, ওরিয়ন এলপিজি, যমুনা এলপিজি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশে অন্যতম এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিগ্যাস। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশে অন্যতম এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিগ্যাস। সম্মেলনে সেরা স্টলের পুরস্কারজয়ী প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরেই তাদের সব পণ্য নিয়ে বাজারে আসছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা আরও জানান, সর্বোচ্চ গুণগতমান বজায় রেখে গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রতিষ্ঠানটি অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের প্রয়োজন মেটাতে ইউনিগ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা। বাংলাদেশে এলপিজির ব্যাপক সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন লাফ্‌স গ্যাসের চেয়ারম্যান ডাবিস্নউকেএইচ ওয়েগাপিতিয়া। তিনি বলেন, বাজারের যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে বলা যায় সম্ভাবনা আছে, কিন্তু তা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে বাজার বুদ্বুদের মতো ফেটে ধসে যেতে পারে শিল্পের মৌলিক শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে ওয়েগাপিতিয়া মনে করেন, বাংলাদেশের বাজার এখনো শিশু অবস্থায় আছে। এলপিজি ব্যবসায় কিছু স্তর আছে। তার মতে, প্রথমত এই শিল্পের মূল উদ্যোক্তাদের খাতের হালচাল বুঝতে হবে। তা না হলে এই উদ্যোক্তাদের হাতেই বাজারের মৃতু্য হবে। আশঙ্কার কথা হলো, তিনি বলেন, এই বাজার পতনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কারণ, এখানে প্রচুর মুনাফা হবে- এই আশায় বাজারে প্রচুর উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করতে আসছেন। কিন্তু ব্যাপারটা তেমন হবে না। ওয়েগাপিতিয়া বলেন, যারা স্বল্পমেয়াদে মুনাফার জন্য এলপিজির বাজারে আসছেন, তারা দীর্ঘমেয়াদে মার খাবেন। সব পক্ষকে একত্রে কাজ করতে হবে। দায়িত্বশীল মানুষের এই খাতের স্বাস্থ্যকর বিকাশের কথা ভাবতে হবে। আজকের জন্য নয়, তাদের আগামীকালের জন্য মুনাফা খুঁজতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এলপিজির চাহিদা বছরে তিন লাখ মেট্রিক টন থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। ব্যাপারটা ভালো। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে চাহিদা যে এই হারে বাড়বে, তা হলফ করে বলা যাবে না। তাই এই খাতের উদ্যোক্তাদের অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশে সাড়ে তিন বছর আগে লাফ্‌স গ্যাস এলপিজির ব্যবসা শুরু হয়েছে জানিয়ে ওয়েগাপিতিয়া বলেন, তাদের কোম্পানি এখন অবকাঠামো নির্মাণ করছে। একই সঙ্গে বিপণন চ্যানেল তৈরি করছে। ব্যবস্থাপনা উন্নত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, 'আমাদের তাড়াহুড়া নেই। ধীরেসুস্থে এগোনোর চেষ্টা করছি।' ওয়েগাপিতিয়া বলেন, 'আমরা শুধু বাংলাদেশে নয়, টেকসই উন্নয়নের জন্য ভারত মহাসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিনিয়োগ করছি। শ্রীলংকায় এলপিজির বৃহত্তম আমদানি ও রপ্তানি টার্মিনাল করেছি আমরা।' টেকসই উন্নয়নের জন্য সামগ্রিকভাবে চিন্তা করতে হবে।