জিন গবেষণায় বিজ্ঞানীদের মনোযোগ

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

নাহিদা নিশা
হ্যাপি ফেস নিয়ে আরো একটি গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। তারা দেখিয়েছেন, গান আমাদের ইমাজিনেশন ও পারসেপশন ক্ষমতায় ভূমিকা রাখে। তারা গবেষণা করে দেখান, মানুষের যখন আনন্দ জেগে ওঠে, তখন এমন ধরনের গান গায় যে মস্তিষ্কে আনন্দের ছবিগুলো ভেসে ওঠে আর যখন কষ্টের গান শোনে তখন দুঃখময় ছবিগুলো ভেসে ওঠে। এক বা একাধিক সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যখন বেশ কিছু স্নায়ু পরস্পরের সঙ্গে সিন্যাপস বরাবর সংযুক্ত হয় তখন ওই সংযুক্ত স্নায়ুগুলোকে একত্রে স্নায়বিক সার্কিট বলে। স্নায়বিক সার্কিট কাজ করে সার্কিটে থাকা স্নায়ুগুলোর মধ্যে বিরাজমান জিনগুলোর সাহায্যে। তাই কোনো স্নায়বিক সার্কিট সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হলে ওই স্নায়বিক সার্কিটের সঙ্গে জড়িত জিনগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। মনোযোগের স্নায়বিক সার্কিটের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৮৫টি জিন আবিষ্কারে ভূমিকা রেখে মিখাইল পসনার কতটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এভাবে মনোযোগ প্রক্রিয়াকে বিশ্লেষণ করার পর পসনার তার গবেষণায় নিয়ে আসেন আবেগ প্রক্রিয়াকে। তিনি দেখান, মনোযোগের সঙ্গে আবেগের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। কোনো একটি সময়ে কোনো মানুষের সামনে অসংখ্য উদ্দীপক থাকলে সে অবশ্যই আবেগ-উদ্দীপক বিষয়ের দিকে নিরপেক্ষ বিষয়গুলোর তুলনায় বেশিক্ষণ মনোযোগী হবে। পসনার মনোযোগের সঙ্গে আবেগের সম্পর্ক তুলে ধরতে গিয়ে স্পটলাইটের ধারণা নিয়ে আসেন। তিনি একে বলেন মেন্টাল স্পটলাইট। আবেগসংক্রান্ত উদ্দীপকের ক্ষেত্রে এ মেন্টাল স্পটলাইটটি ছোট পরিসরে থাকে। স্পটলাইটের ক্ষেত্রে যা হয়- স্পটলাইট যত ছোট হয় আলোর তীব্রতা তত বেশি হয়। তেমনি আবেগ-উদ্দীপক বিষয়ের ক্ষেত্রে মেন্টাল স্পটলাইট ছোট থাকে তাই এ ক্ষেত্রে মনোযোগ থাকে তীব্র। নিরপেক্ষ বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে মেন্টাল স্পটলাইট বিস্তৃত থাকে। তাই নিরপেক্ষ বিষয়ের ক্ষেত্রে মনোযোগ বিস্তৃত বা হালকা থাকে। জিন সার্কিটের ধারণা আণবিক জীববিজ্ঞানীরা এ ভাবনা থেকে এনেছিলেন যে, একটি ক্রোমোজোমের জিনগুলো এককভাবে কাজ করে না। বরং এদের মধ্যে সমন্বয় রয়েছে। এ সমন্বয় একটি কোষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমে অবস্থিত অসংখ্য জিনের মধ্যে হতে পারে। আরো সমন্বয় হতে পারে একটি কোষের বাইরে অন্য একটি কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ক্রোমোজোমের জিনগুলোর মধ্যে। এভাবে নির্মিত জিন সার্কিটে অস্বাভাবিকতা আসতে পারে সুনির্দিষ্ট একটি জিনে বা কয়েকটি জিনে সিকোয়েন্সের পুনর্বিন্যাসের জন্য। জিনের সিকোয়েন্স ভেঙে গেলেও এরূপ অস্বাভাবিকতা দেখা যেতে পারে। জিন সার্কিটের এ অস্বাভাবিকতা ব্রেস্ট ক্যান্সারের সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি জিনের সিকোয়েন্সে পরিবর্তনের কারণে ক্যান্সার জিন সক্রিয় হয়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এ তথ্যটিও মাইক স্ট্রাটোন এবং অ্যান্ডি ফুট্রেয়ালের দৃষ্টি এড়ায়নি। ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এ রকম হতেই পারে। বিআরসিএ-১ ও বিআরসিএ-২ জিনের পুনর্বিন্যাস এবং হেরাসিপটিন হরমোনের সঙ্গে ব্রেস্ট ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে এটা বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েক বছর হলো আবিষ্কার করেছেন। এ আবিষ্কারের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে মাইক স্ট্রাটোন ও অ্যান্ডি ফুট্রেয়ালের জিনোম পুনর্বিন্যাস বা জিন সার্কিট পুনর্বিন্যাসবিষয়ক আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে।