মহাকাশে গ্যাস স্টেশন

প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

শার্লিং সুবর্ণ
মহাকাশে এবার গ্যাস স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকরা। পরিকল্পনা সফল হলে নভোযানে আর অতিরিক্ত জ্বালানি বহন করার প্রয়োজন পড়বে না। মহাকাশ অভিযানে বা চাঁদ ভ্রমণের পথে অতিরিক্ত জ্বালানি এখান থেকেই সংগ্রহ করা যাবে। তখন জ্বালানির পরিবর্তে প্রয়োজনীয় গবেষণা যন্ত্রপাতি বহন করতে পারবে নভোযান। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। গবেষকদের মতে, পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের যে অঞ্চলে মহাকর্ষ টানের ভারসাম্য রয়েছে সে অঞ্চলে এ জ্বালানি ডিপো তৈরি করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে আরো একটা সুবিধার সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। গ্যাস স্টেশনটি তৈরি করা গেলে এবং সফলভাবে স্থাপন করা গেলে মহাকাশযানগুলোকে আর অপ্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার ঝক্কি পোহাতে হবে না। তারা চাইলে গ্যাস স্টেশন হয়েই নিজ গন্তব্যে চলে যেতে পারবে। কয়েক দশক ধরেই গবেষকরা মহাকাশ থেকে জ্বালানি সংগ্রহের নানারকম নকশার কথা বলে আসছেন। কিন্তু সেখানে এ ধরনের গ্যাস স্টেশন তৈরির খরচের বিষয়টি সব সময়ই বড় বাধা হয়ে সামনে আসে। সম্প্রতি এমআইটির গবেষকরা সাশ্রয়ী গ্যাস স্টেশন তৈরির দুটি নকশা করেছেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, মহাকাশের ল্যাগরেঞ্জ অঞ্চলে এ ডিপো স্থাপন করা যেতে পারে। কারণ এ অঞ্চলটিতে মহাকর্ষ ভারসাম্য বিদ্যমান। গবেষকরা জানিয়েছেন, মহাকাশ অভিযানের সময় যাতে খরচ, পরিশ্রম ও ওজন কমানো যায়, তার জন্য সেখানকার উপাদান কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা তৈরি করে নিতে পারলে ভালো। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশযাত্রায় সুফল পাবেন নভোচারীরা। তাদের মতে, পৃথিবী থেকে জ্বালানি, পানিসহ অন্যান্য উপকরণ বয়ে নেয়া মানে অতিরিক্ত ভার বহন করা। এসব উপাদানের বদলে যদি বাড়তি কম্পিউটার কিংবা অন্যান্য গবেষণার উপাদান পাঠানো সম্ভব হয়, তবে মহাকাশ মিশন বেশি কার্যকর হতে পারে। চিন্তার কারণ- ময়লার মধ্যে স্ক্রু, বল্টু থেকে শুরু করে রয়েছে রকেটের ভেঙে যাওয়া বড় বড় টুকরা।?বিজ্ঞানীদের হিসাবে সংখ্যাটা হবে প্রায় তিন লাখ?আর কক্ষপথে সেগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে দ্রম্নতগতিতে। ফলে মহাকাশে থেকে স্যাটেলাইটগুলোর সঙ্গে ওই জঞ্জালগুলোর যে কোনো সময় সংঘর্ষ বাধার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর সে কারণেই যত দ্রম্নত সম্ভব আবর্জনা পরিষ্কারের দাবি উঠেছে। জার্মান বিজ্ঞানীরা মহাকাশের ময়লা সরাতে লেজার রশ্মিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।?একই বিষয়ে গবেষণা করছেন অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানীও। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ স্কুল অব অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের পরিচালক ম্যাথু কোলেস মনে করছেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে লেজার রশ্মি দিয়ে মহাকাশের আবর্জনা পরিষ্কার সম্ভব হতে পারে। তিনি বলেন, এটা সম্ভব হওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কেননা তা না হলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই ময়লার সঙ্গে স্যাটেলাইটের সংঘর্ষ লাগার ঘটনা ঘটা শুরু হবে। ইতোমধ্যে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার সঙ্গে চুক্তি করেছে অস্ট্রেলিয়ার আওতায় 'মাউন্ট স্ট্রমলো অবজারভেটরি'-তে ইনফ্রা-রেড লেজার সংবলিত টেলিস্কোপ দিয়ে আবর্জনার অবস্থান নির্ধারণের কাজ চলছে?