ফেসবুক ব্যবহারে সতকর্তা

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

পাবর্নী দাস
এখনকার সময় হাতে স্মাটের্ফান আছে অথচ ফেসবুক ব্যবহার করেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। ফেসবুক ব্যবহার এখন অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা শেয়ার না করলে যেন দিনটা মোটেও ভালো কাটতে চায় না। কিন্তু আপনার এ ভালো লাগার ফেসবুক কতটা নিরাপদ? সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হচ্ছে। ফলে অনেকেই বিপদে পড়ছেন। কেন হচ্ছে এমন? কীভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে? দ্বিস্তর ভেরিফিকেশন বিপদের হাত থেকে কিছুটা নিরাপদ রাখতে ফেসবুক ‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ সুবিধা চালু করেছে। এটি ব্যবহার করলে প্রতিবার নতুন ডিভাইস/ব্রাউজারে আপনার কাক্সিক্ষত সেবায় (উদাহরণস্বরূপ ফেসবুকে) সাইন-ইন করার সময় ইউজারনেম-পাসওয়াডর্ ইনপুট করার পরেও সেখানে আরেকটি পিন কোড দিতে হবে। এই কোডটি মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে আসে। এগুলোকে সিকিউরিটি কোডও বলা হয়, যা প্রতিবারই সাভার্র থেকে পাঠানো হয়। ইউজারনেম, পাসওয়াডর্ এবং সেলফোন নম্বর দ্বিস্তর ভেরিফিকেশন সক্রিয় থাকা যে কোনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে চাইলে কমপক্ষে তিনটি বিষয় দখলে থাকতে হবে। সেগুলো হচ্ছে ইউজারনেম, পাসওয়াডর্ এবং যে মোবাইল নম্বরে সেবাটি রেজিস্ট্রেশন করা আছে/সিকিউরিটি কোড। ইউজারনেম-পাসওয়াডর্ নিয়ে নিলেও একই সময়ে আপনার মোবাইল ফোনটি হ্যাকারের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই ফেসবুকে সাইন-ইন করার সময় সিস্টেম যখন মোবাইলে এসএমএসে আসা পিন চাইবে তখন সেটি তাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব হবে না। আর এই যাত্রায় আপনার অ্যাকাউন্টটিও হ্যাকিংয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। লগইন অ্যাপ্রæভাল চালু করতে চাইলে প্রথমে আপনার ফেসবুকে সাইন-ইন করুন। এরপর ফেসবুক অপপড়ঁহঃ ঝবঃঃরহমং > ঝবপঁৎরঃু সেকশনে থাকা খড়মরহ অঢ়ঢ়ৎড়াধষং-এর জবয়ঁরৎব সব ঃড় বহঃবৎ ধ ংবপঁৎরঃু পড়ফব বধপয ঃরসব ধহ ঁহৎবপড়মহরুবফ পড়সঢ়ঁঃবৎ ড়ৎ ফবারপব ঃৎরবং ঃড় ধপপবংং সু ধপপড়ঁহঃ-এ চেক মাকর্ করুন। এবার ঘবীঃ ক্লিক করে মোবাইলে ঝগঝ এ প্রাপ্ত কোড লিখে ঘবীঃ চাপুন এবং ঝধাব বাটনে ক্লিক করুন। বিনামূল্যে নোটিফিকেশন সুবিধা ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে টেক্সট মেসেজ নোটিফিকেশন সুবিধা প্রদান করছে ফেসবুক। যখন কোনো কম্পিউটার অথবা মোবাইল থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢোকা হবে তখন টেক্সট মেসেজ নোটিফিকেশন আপনার কাছে পেঁৗছে যাবে। এরপর বুঝতে পারবেন কে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করছে। তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহারে সতকর্তা ফেসবুকে আরও আকষর্ণীয় করার জন্য তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশনের অভাব নেই। কিন্তু হ্যাকাররা অ্যাপসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর আইডির নিয়ন্ত্রণ কব্জা করে থাকে। অনেক অ্যাপ কোনো নিদির্ষ্ট সময়ে এগুলো ব্যবহার করে থাকি কিন্তু ব্যবহার শেষে সেগুলো মুছে ফেলতে কিংবা নিষ্ক্রিয় করতে ভুলে যাই। তৃতীয় পক্ষের অ্যাপটি কতটুকু নিরাপদ তা ব্যবহারের আগে ভালো করে যাচাই করে নিন। এন্টিভাইরাস ব্যবহার আপনার পিসির জন্য কিলগার অথবা রিমোট অ্যাকসেস ট্রোজান [জঅঞ] খুবই বিপজ্জনক। এগুলোর হাত থেকে বঁাচার জন্য সঠিক অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। বিজ্ঞাপনে সতকর্তা বিজ্ঞাপনে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে উল্লেখ করে কিছু লিখতে পারবেন না। মনে করুন, আপনি শাটর্ বিক্রি করেন। বিজ্ঞাপনে এই ‘শাটির্ট ভালো’ বলার সুযোগ থাকলেও ‘শাটির্ট ভালো গ্রেগ’ লেখার সুযোগ নেই। এ ছাড়া কোনো লিঙ্কে ক্লিক করলে কোনো শপিং ওয়েবসাইট বা বিজ্ঞাপনের পাতায় পৌঁছে যেতে পারেন। আপনাকে সেখানে নিয়ে ফেলতে পারলে তাতেও সাইবার দুবৃর্ত্তদের যথেষ্ট লাভ। কারণ কোনো বিজ্ঞাপন প্রদশর্ন বা ওয়েবসাইটে ক্লিক বাড়াতে পারলেই প্রতি ক্লিকের জন্য অথর্ পায় তারা। সঙ্গে বহুক্ষেত্রে সেই ওয়েবপেজের হাতে চলে আসতে পারে আপনার গোপন নথিও। যারা না জেনেই ক্লিক করে ফেলেন, তারা ভাবেন হয়তো ভুল করে অন্য সাইটে ঢুকে পড়েছেন, তাই দ্বিতীয়বার একই চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু একই জিনিস হয় আবারও। স্ক্যাম মেইলে আসা যে কোনো লিঙ্কে ক্লিক করলেও একই ঘটনা ঘটে। একাধিক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ একই ব্যবহারকারীর একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলা আগেও নিষিদ্ধ ছিল। তবে খুব একটা কড়াকড়ি ছিল না। এখন এ বিষয়ে ফেসবুক খুব কঠোর নিয়ম মেনে চলছে। ফলে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে সতকর্ থাকুন। ছবি পোস্টে সতকর্তা ফেসবুক ছবির ব্যাপারে ভীষণ সেনসেটিভ। ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার মাতৃদুগ্ধ পান করানোর ছবিকেও নগ্নতা বলে গণ্য করে। লরেন ফেরারি নামের এক ব্যবহারকারী ফেসবুকে তার পঁাচ বছরের শিশুর ছবি দিয়েছিলেন, যেখানে সে নাসের্র ভ‚মিকায় অভিনয় করছে। এমন নিরীহ ছবি পোস্ট করাও এখন অনেক ঝামেলার। গত বছরের নভেম্বরে প্যারিস হামলার পরে জেসন ম্যানফডর্ নামের এক ব্যবহারকারীর ফেসবুক প্রোফাইল ছবি বেশ কয়েকবার সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ তার সে ছবিতে নানা রঙে বেশ কয়েকটি বাক্য লেখা ছিল। ফেসবুক ব্যবহারের নীতিমালায় উল্লেখ আছে, আপনি এমন কোনো বিষয়বস্তু পোস্ট করতে পারবেন না, যাতে ভয়ভীতি, ঘৃণা কিংবা অপ্রীতিকর কিছু প্রকাশ পায়। এমন কোনো ছবি পোস্ট করতে পারবেন না, যা দৃশ্যমান সহিংসতা কিংবা নগ্নতা প্রকাশ করে। ফেসবুকের এই নিয়ম এমনিতে ঠিকঠাক মনে হলেও অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, তারা অনেক ব্যক্তিগত কথাও লিখতে পারছেন না। স্বাধীন মত প্রকাশেও বাধা তৈরি করছে বলে অভিযোগ অনেকের। ফেসবুকের মেইল থেকে সতকর্ ফেসবুক থেকে কোনো মেইল এলে সতকর্ থাকুন। ইনবক্সে ঢুকেই যদি মেলে থাকা লিঙ্কে ক্লিক করে বসেন, বিপদে পড়বেন। কারণ ওই মেইল হয়তো ফেসবুক থেকে আসেইনি। এক আন্তজাির্তক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, ইদানীং কিছু অত্যাধুনিক কৌশল কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা ওঁৎ পেতে রয়েছে আপনার সবর্স্ব হাতানোর জন্য। সে?াশ্যাল নেটওয়াকির্ং সাইটে আপনার গতিবিধির ওপর সবর্ক্ষণ নজর রাখছে তারা। ফেসবুক প্রোফাইলে আপনার উপস্থিতি কিছুদিন টের না পেলেই একটি বিশেষ ধরনের মেইল ও তার সঙ্গে লিঙ্ক পাঠাচ্ছে আপনার ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত মেইল আইডিতে। সেই মেইলে লেখা থাকছে, ‘আপনি বেশ কিছুদিন ফেসবুকে ছিলেন না। আপনার মেসেজগুলো শিগগিরই ডিলিট হতে চলেছে’। এর সঙ্গেই আপনাকে দুটো অপশন দেয়া হবে। ‘ভিউ মেসেজ’ এবং ‘গো টু ফেসবুক’। এর কোনো একটিতে ক্লিক করলেই আপনার যাবতীয় তথ্য চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। বাড়তি সতকর্তা -পারিবারিক ঠিকানা ফেসবুকে না দেয়াই ভালো কিংবা প্রোফাইলে নিজের সেলফোন নম্বর উল্লেখ করা ঠিক নয়। -কখনো অপরিচিতদের থেকে পাঠানো বন্ধুত্বের অনুরোধ ভালোমতো না দেখেই গ্রহণ করবেন না। -ছোট কিংবা সহজ পাসওয়াডর্ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। পাসওয়াডর্ দেয়ার সময় নম্বর, অক্ষর, চিহ্ন ব্যবহার করতে পারেন। -আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি কতটা নিরাপদ সেটি জানতে লগ-ইন অবস্থায় যঃঃঢ়://ড়হ.ভন.সব/১ছঈ৬াটখ ঠিকানায় যান।