জীবনে নতুন মোড়

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

রায়হান রহমান
নুসরাত ফারিয়া
'তখন তোমার একুশ বছর বোঁধ হয়, আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়'- চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়ার জীবনের সঙ্গে গানের লাইনটি অনেকাংশে মিলে যায়। তারও যে মনের মানুষের সঙ্গে সখ্য অষ্টাদশীর ছোঁয়াতেই। ফারিয়ার ভাষায়, 'রনির (রনি রিয়াদ রশিদ) সঙ্গে আমার সম্পর্ক অর্ধযুগের বেশি সময়ের। পইপই করে হিসাব করলে সময়টা সাত বছর। মাত্র উনিশ বছর বয়সে ওর সঙ্গে সম্পর্কে জড়াই।' কোনো রকমে একটু দম নিয়ে ফারিয়া আবার বলতে শুরু করেন, 'সত্যিকার অর্থেই আমি ভাগ্যবতী। কারণ এই মানুষটি আমার জীবনে এসেছেন অনেকটা অভিবাবকের মতো হয়ে। আমার ভালো ও মন্দ উভয় সময়েই তিনি পাশে ছিলেন এবং আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছেন। বিশেষ করে আমার ক্যারিয়ারবিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো তাকে ছাড়া কখনোই যুতসইভাবে নিতে পারিনি।' ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ফারিয়াকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে হয়েছিল। ভেবে পাচ্ছিলেন না উপস্থাপনা চালিয়ে যাবেন নাকি অভিনয়ে যুক্ত হবেন। সে সময়ও রনি অভিভাবকের পরিচয় দিয়েছেন। পথ দেখিয়েছেন, পাশে থেকেছেন। ফলে এমন মানুষের সঙ্গে সারাজীবন একই ছাদের নিচে থাকতে ফারিয়ার আপত্তি নেই। উল্টো হাতে হাত রেখে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে প্রস্তুত তিনি। তাই করোনাকালের অবসরটুকুকেই কাজে লাগালেন ব্যক্তিগত জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি অতিক্রম করতে। ফারিয়ার ভাষায়, 'করোনা শুরু হওয়ার কয়েকদিন যেতে না যেতেই মা বলল, 'তোমরা তো অনেক দিন ধরে রিলেশনশিপে আছ। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়া দরকার।' মায়ের কাছে এমন কথা শুনে আমিও বিষয়টি নিয়ে ভাবলাম। ঠিকইতো গত সাত বছর নিজের ক্যারিয়ারকেই গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু এখন এই মানুষটিকে গুরুত্ব দেওয়া সময় এসেছে।' ঘটনাটা এরপরেই ঘটে। ২১ মার্চ দুই পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাগদান সম্পন্ন হয়। রনি ফারিয়াকে আংটি পরিয়ে দেন। ঘরোয়াভাবে আয়োজন ফারিয়ার বাসাতে হয়। ফরিয়া বলেন, 'যেহেতু করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে অনুষ্ঠানটি করা, তাই আয়োজন ছিল ছোট পরিসরে। রনি আর আমার পরিবারের অনেক নিকটাত্মীয়ও অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি।' বাগদানতো হলো। স্বাভাবিকভাবেই এরপর প্রশ্ন আসে, বিয়েটা কবে? এ প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন 'বিবাহ অভিযান' ছবির নায়িকা। তিনি বলেন, 'আমার হাতে একটি বিশেষ কাজ আছে। কাজটি অক্টোবর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর নভেম্বর মাসে বড় আয়োজন করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেছে। এখন নতুন করে ভাবতে হবে। তার আগে আমার হবু বরের পরিবার চায় আমার পড়াশোনাটা শেষ হোক। তারা আমার পড়াশোনার বিষয়ে খুবই আগ্রহী।' তবে বিশেষ কাজটি কী, সে বিষয় ফারিয়া মুখ না খুলেই আন্দাজ করা যায় প্রজেক্টটা বড়োসড়ো। মার্চের শুরুতেই ফারিয়া মুম্বাই গিয়েছিলেন একটি ছবির লুক সেট করতে। সেখানে আশানুরূপ ফল পেয়েছেন বলেও তখন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। এখন দুইয়ে দুইয়ে চার মিলে গেলে হয়তো বলিউডের ছবিতেও দেখা যেতে পারে অভিনেত্রীকে। তার আগে বাংলাদেশের প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে বলিউডের বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন তিনি। এদিকে করোনাভাইরাসের শুরুর সময় থেকেই ময়মনসিংহ আছেন ফারিয়া। ফারিয়া বলেন, '১ এপ্রিল থেকেই পরিবারের সবাইকে নিয়েই এখানে চলে এসেছি। আমার মনে হয়েছে, ঢাকা থেকে এটিই বেশি বেশি নিরাপদ। যতদিন পর্যন্ত দেশের অবস্থা বিশেষ করে ঢাকার অবস্থা স্বাভাবিক না হবে, ততদিন পর্যন্ত এখানেই থাকব বলে ঠিক করেছি।'