ঈদে জাহিদ হাসানের রাজত্ব!

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

মাসুদুর রহমান
জাহিদ হাসান
'এখন তো অনেকটাই সুস্থ আছি। তবে জ্বর আসাতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কারণ এই সময় জ্বর হওয়া আতঙ্কের বিষয়। তাই করোনা পরীক্ষা করি। রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু জ্বর থাকাতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক শাকুরের শরণাপন্ন হই। তার পরামর্শ মতো চলে এখন অনেকটাই সুস্থ।' কথাগুলো বলছিলেন অভিনেতা জাহিদ হাসান। করোনাভাইরাসের কারণে কয়েক মাস শুটিং বন্ধ থাকার পর শুটিংয়ে ফেরেন তিনি। একের পর এক ঈদের নাটকে অভিনয় করেন। টানা দেড় মাস শুটিং করে গত ১১ জুলাই অসুস্থ হয়ে পড়েন জাহিদ হাসান। এরপর থেকে তিনি বাসাতেই আছেন। কেমন আছেন তা জানতেই গতকাল যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। ফোন রিসিভ করে খবরাখবর নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান যায়যায়দিনকে। তার কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছিল শারীরিকভাবে যাই হোক মানসিকভাবে যথেষ্ট সুস্থ আছেন টিভি নাটকের এই অভিনেতা। জাহিদ হাসান শেষ শুটিং করেন ১১ জুলাই। সেদিন শুটিং শেষে রাতে বাসায় ফেরার পর গায়ে জ্বর চলে আসে। তিনি বলেন, 'করোনার ফল নেগেটিভ এলেও আমার জ্বর কমছিল না। চিকিৎসক আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষা দিলেন। এর মধ্যে ইউরিন পরীক্ষা, বস্নাডের বেশ কয়েকটি পরীক্ষাসহ আরও শারীরিক পরীক্ষা দিলেন। সেগুলো খুব দ্রম্নতই করালাম। তেমন কিছুই পাওয়া গেল না। বুঝলাম বৃষ্টির পানি মাথায় পড়ে হয়তো ঠান্ডা লেগে জ্বর চলে এসেছে।' তবে সুস্থতা বোধ করলেও ঈদের আগে শুটিংয়ে ফিরছেন না বলে জানালেন। এই সময়টায় বাসাতেই থাকবেন পরিবারের সঙ্গে। শুটিংয়ে ফেরা নিয়ে জাহিদ হাসান বলেন, 'আপাতত শুটিংয়ে ফিরছি না। এখন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। ঈদের আগে ফেরার কোনো উপায় নেই। যদিও আমার ওপর কেউ কেউ মনক্ষুণ্ন হয়েছেন। কিন্তু উপায় কি? শরীরকে তো বিশ্রাম দিতে হবে।' হিমু আকরামের পরিচালনায় 'গফুর কাকার তরমুজ' নামের একটি ঈদের নাটকের শুটিং চলাকালীনই অসুস্থবোধ করেন তিনি। এ নাটকে তিনি প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন কালো চেহারার চরিত্রে। এই নাটকের পর অভিনয় করার কথা ছিল আরও বেশকিছু নাটকে। ২৬ জুলাই পর্যন্ত সিডিউল ছিল এই অভিনেতার। ঈদের আগে আর ক্যামেরার সামনে না দাঁড়ালেও বরাবরের মতো এবারের ঈদেও টিভি পর্দায় রাজত্ব থাকছে জাহিদ হাসানের। কারণ ক্যারিয়ারের লম্বা একটা সময় পেরুলেও ভাটা পড়েনি চাহিদার। কমেনি বিন্দুমাত্র আবেদন। অভিনয়ে জাহিদ হাসান এমন এক ঘরানার সৃষ্টি করেছেন যে, তার অভিনয়শৈলীর কারণেই তাকে ছোট পর্দার নবাব বলেও কেউ কেউ ডাকেন। তাই সারা বছর অভিনয় করলেও ঈদের সময়ে যারপরনাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই অভিনেতা। ঈদের নাটক মানেই যেন জাহিদ হাসান। তাকে ছাড়া যেন ঈদের নাটকই জমে উঠে না। আর এই চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রতি ঈদেই এই চিরসবুজ তারকাকে নিয়ে নির্মিত হয় ঈদের বিশেষ নাটক কিংবা টেলিফিল্ম। প্রতিবারের মতো এবারও বেশ কয়েকটি নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। সবগুলো নাটকেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কখনো রোমান্টিক, কখনো সিরিয়াস আবার কখনো নরমাল। সবগুলো নাটকই গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে জানালেন জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, 'একেকটা গল্প একেক রকম। লোকেশন এবং চরিত্রও আলাদা। সব মিলিয়ে আমার বিশ্বাস, ঈদে সব নাটক থেকেই পরিপূর্ণ বিনোদন পাবে দর্শক।' এবারের ঈদে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক পরিচালনারও পরিকল্পনা ছিল জাহিদ হাসানের। কিন্তু শেষতক আর হলো না। তবে এর আগে তার পরিচালিত নাটক-টেলিছবিগুলো প্রশংসিত হয়েছে দর্শক মহলে। তিনি জানান, কাজের ক্ষেত্রে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত টানা শিডিউল ছিল তার। এছাড়া স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। সে পরিকল্পনাও ভেস্তে গেছে। জীবনে এমন সময় আসবে তা কল্পনাও করিনি। আমার কর্মজীবনে এত অবসর আগে পাইনি। নতুন অভিজ্ঞতা যেন আর দীর্ঘ না হয় সেই প্রার্থনাই করছি।'