কাপুর পরিবার নয়, তারকা হয়েছি নিজের যোগ্যতায়

আমি ইন্ডাস্ট্রিতে ২১ বছর ধরে কাজ করছি। স্বজনপোষণের সুবিধা ব্যবহার করে এত দিন টিকে থাকা যায় না। - কারিনা কাপুর খান

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

তারার মেলা ডেস্ক
বলিউডে স্বজনপোষণ ও বংশপরম্পরায় তারকা হওয়া ডালভাতে পরিণত হয়েছে। সেখানে খান, কাপুর ও কুমার পরিবারের দৌরাত্ম্য কারও অজানা নয়। এসব কারণে 'স্টার কিডস'রা নেটিজেনদের কূট মন্তব্যেরও শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান। বলিউডে কাপুর পরিবারের রাজত্ব দীর্ঘদিনের। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা ও প্রযোজক এই পরিবার থেকেই হয়েছেন। কার্যতই কাপুর পরিবারের প্রতি স্বজনপোষণের অভিযোগ নেহাত গুঞ্জন নয়। বলিপাড়ার শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী কারিনা কাপুর এই কাপুর পরিবারের কন্যা হওয়ার সুবাদে খানিকটা সুবিধা তো পেয়েছিলেনই; নেটিজেনরা এমনটাই মানছেন। যদিও একটা সময় কাপুর পরিবারের মেয়েদের সিনেমায় অভিনয় করা নিয়ে আপত্তি ছিল। কারিশমা কাপুর প্রথম সেই প্রথা ভেঙেছিলেন, তার পর কারিনা। এখনো নানা ধরনের কথা শোনতে হয় এ অভিনেত্রীকে। এ বিষয় ভারতীয় গণমাধ্যমকে কারিনা বলেন, 'আমি ইন্ডাস্ট্রিতে ২১ বছর ধরে কাজ করছি। স্বজনপোষণের সুবিধা ব্যবহার করে এত দিন টিকে থাকা যায় না। এমন অনেক তারকা সন্তান আছেন, যারা বিনোদন জগতে সুবিধা করতে পারেননি। আবার অনেকেই স্টার কিড না হয়েই বলিউড কাঁপিয়েছেন। সত্যিকার অর্থেই স্বজনপোষণ বলে কিছু নেই।' সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃতু্যর পর থেকে তারকা সন্তানরা সাধারণ দর্শক থেকে নেটিজেন; সবার রোষের শিকার হচ্ছেন। ট্রোলের শিকার হয়ে সোনাক্ষী সিনহা, আলিয়া ভাট, সোনম কাপুরের মতো অভিনেত্রীরা ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলের কমেন্ট বক্স বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই তালিকায় ছিলেন কারিনা কাপুর খানও। সম্প্রতি তিনি এই ফিল্টার উঠিয়ে দিয়েছেন। কারিনার কথায়, 'স্ট্রাগল আমাকেও করতে হয়েছে। কিন্তু যে পকেটে ১০ টাকা নিয়ে সব ছেড়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার জন্য এসেছেন, তার স্ট্রাগলের তুলনায় আমারটা নগণ্য। কিন্তু তাতে আমার অপরাধবোধে ভোগার অর্থ হয় না। আমাদের তৈরি করেছেন দর্শক। তাদের জন্যই আমরা স্টার। মানুষ কেন স্টার কিডদের নিয়ে এত নেতিবাচক মন্তব্য করে, আমি জানি না। এটা তো কোনো অন্যায় কিংবা অপরাধ নয়। তাহলে কূট মন্তব্যের কেন শিকার হচ্ছি?' কারিনা আরও বলেন, 'একটা সিনেমার কিংবা একজন অভিনয় শিল্পীর ভবিষ্যৎ কী হবে সেটা নির্ভর করছে তার যোগ্যতার ওপর। আমার সিনেমা দিনের পর দিন হিট হয়েছে। কেন হয়েছে? নিশ্চয় দর্শকের কাছে আমার অভিনয় ভালো লেগেছে। না হলে তো আমার ছবি দেখতে যেতেন না। নাকি আমি স্টার কিড, তাই আমার সিনেমা হলে চলতো? সত্যিই মাঝে মাঝে কিছু মানুষের উদ্ভট কর্মকান্ডে আমি সবকিছু গুলিয়ে ফেলি। এসব বন্ধ করা উচিত।' নেপোটিজমের উল্টো স্রোতে সফল অভিনেতাদের উদাহরণে শাহরুখ খান, অক্ষয় কুমার, আয়ুষ্মান খুরানা ও রাজকুমার রাওয়ের নাম উলেস্নখ করেছেন কারিনা। কারিনার মতে, 'এদের সবাইকে দর্শক তৈরি করেছে। এরা সবাই কিন্তু আউটসাইডার। তারা সফল, কারণ তারা খেটেছেন। সে রকমই আলিয়া ভাট বা কারিনা কাপুরও তাদের পেশার পেছনে সময় দেন, খাটেন। দর্শক আমাদের ছবি দেখতে চায়, কারণ তারা আনন্দ পায় সে সব ছবি দেখে।' বলিউডে কারিনার দুই দশক চলে। ২০০০ সালে তার প্রথম ছবি 'রিফিউজি' মুক্তি পায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেন, 'বেশি দিন টিকে থাকার রহস্যটা হচ্ছে আরও খেটে কাজ করা এবং এগিয়ে চলা। কাপুর পরিবারের জন্য নয়, আমি তারকা হয়েছি নিজের যোগ্যতায়। লড়াই আমাকেও করতে হয়েছে। হঁ্যা, সেই গল্পটা হয়তো অতটা চিত্তাকর্ষক নয়, কিন্তু স্টার কিডদেরও টিকে থাকতে লড়াই করতে হয়। আসলে কে সফল হবে সেটা দর্শকই বিচার করে।