মিঠুর সংস্কৃতি যুদ্ধ

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

তারার মেলা রিপোর্ট
মাহবুব আমিন মিঠু
অনেক মানুষ আছেন, যারা সংস্কৃতি প্রেমিক। সংস্কৃতিকে ভালোবেসে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু সংস্কৃতিযোদ্ধা কজন আছেন- যারা দেশীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও চর্চাকে প্রাণপণ ধরে রাখার জন্য প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছেন! তেমনই এক সংগ্রামী মানুষের নাম মাহবুব আমিন মিঠু। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে সংস্কৃতির সঙ্গে একনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে রেখেছেন। চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশের নিজস্ব সংস্কৃতিকে কীভাবে বিকশিত করা যায়। সে লক্ষ্যেই নিজ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন ঢাকার উত্তরাভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন 'গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমি'। এই একাডেমির পরিচালক মাহবুব আমিন মিঠু। 'সুস্থ সাংস্কৃতিক শিক্ষার লক্ষ্যে' ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের কয়েকজন শিল্পী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলীর সম্মিলনে কণ্ঠসংগীত, নৃত্য, তবলা, গিটার, অংকন, আবৃত্তি ও অভিনয় এবং পরে বেহালা, বাঁশি, সেতার ও আধুনিক নৃত্যে মোট ১১টি বিভাগের সমন্বয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি গীতাঞ্জলির নামনুসারে 'গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমি' উত্তরায় প্রতিষ্ঠিত করেন। দেখতে দেখতে সংগঠনটি ১৬ বছরে পা দিয়েছে। এ ক'বছরে সংগঠনটিতে যোগ হয়েছে অনেক নতুন সংযোজন। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সংযোগ প্রতিবছর এখান থেকে তিনজন গুণি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিকে 'গীতাঞ্জলি সম্মাননা পদক বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া সংগীতশিল্পী, বাদ্যযন্ত্রী, নৃত্যশিল্পীসহ সংস্কৃতিকর্মীদের গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমি ধারাবাহিকভাবে উপহারসামগ্রী প্রদান করে আসছে। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক সংস্কৃতিকর্মীর মধ্যে খাদ্য, অর্থ ও করোনা প্রতিরোধ উপকরণ প্রদান করেছে। সে ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি উত্তরার গীতাঞ্জলি একাডেমি ভবনে সংস্কৃতিকর্মীদের উপহারসামগ্রী প্রদান করেন ব্যবসায়ী শহিদুল আলম বিদু্যৎ। উপহারসামগ্রী প্রদানের ধারাবাহিক কার্যক্রমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, উত্তরা জোনের পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার নাবিদ কামাল শৈবালসহ আরও অনেকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগী এই মানুষটি মনে করেন, 'সাংস্কৃতিক শিক্ষা শুধু একাডেমিক শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি পারফরমিং আর্ট। শিক্ষার্থীরা একাডেমি থেকে যে শিক্ষা গ্রহণ করল তা প্রয়োগের জন্য অবশ্যই একটি পস্নাটফর্ম লাগবে- যা কি না তাদের দর্শক-শ্রোতার কাছাকাছি নিয়ে যাবে। এ লক্ষ্যে গীতাঞ্জলি তাদের কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিত উন্মুক্ত মঞ্চ, বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য টেলিভিশনে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা, একুশে ফেব্রম্নয়ারি, পহেলা বৈশাখ, নজরুল ও রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। গীতাঞ্জলির এই সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের লক্ষ্য সারাদেশের সাংস্কৃতিক জাগরণের পাশাপাশি রাজধানীর উত্তরাকে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সমৃদ্ধশালী করা। তিনি মনে করেন, সবার সহযোগিতা পেলে এ উদ্যোগ আরো সফল হবে।