সাবিলা ছুটছেন নিজস্ব ছন্দে

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাবিলা নূর কাজে ফিরেছেন বেশ কিছুদিন আগে। ধারাবাহিকের পাশাপাশি সম্পন্ন করেছেন একাধিক খন্ডনাটকের কাজ। এরই মধ্যে টিভি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন ছোটপর্দার এ মডেল-অভিনেত্রী।

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

রায়হান রহমান
সাবিলা নূর
কদিন আগে একটি টেলিকম কোম্পানির বিজ্ঞাপনের কাজ সম্পন্ন করেছেন সাবিলা নূর। আদনান আল রাজীবের পরিচালনায় নির্মিত বিজ্ঞাপনটি এখন সব চ্যানেলেই প্রচারিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর রাজীবের সঙ্গে কাজ করে সাবিলা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনই দর্শকরাও খুশি। কয়েক সেকেন্ডের প্রচারণায় সাবিলার উপস্থাপন ছিল বলার মতোই। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি। সাবিলার ভাষ্যমতে, 'ঈদের পর বিরতি নিইনি, বরং কাজটা সচল রেখেছি। অনেকদিন পর আদনান আল রাজীবের পরিচালনায় কাজ করলাম। কাজের অভিজ্ঞতা খুবই দারুণ ছিল। বিজ্ঞাপনটির কনসেপ্ট অন্যরকম। ফলে দর্শকরাও লুফে নিয়েছে।' \হছোট পর্দায় সাবিলার ছুটে চলা আট/ দশজনের মতো নয়। বৈচিত্র্যময় ও ব্যতিক্রমী চরিত্রে কাজ করা যেন রীতিমতো তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গল্পের প্রয়োজনে কখনো ভূত হয়েছেন, কখনো মধ্যবিত্ত পরিবারের লাজুক ও ঘরকোণো স্বভাবের মেয়ে হয়েছেন, কখনো বা আলালের ঘরে দুলালী। রোমান্টিক চরিত্রগুলোতেও তাকে পাওয়া গেছে গতানুগতিক ধারার বাইরে। ক্যারিয়ারের দিনক্ষণ যতই বেড়েছে, সাবিলার অভিনয়ে ততই পরিপক্বতার ছোঁয়া লেগেছে। এরকম অসংখ্য নিত্যনতুন চরিত্র দিয়ে বরাবরই দর্শককে চমকে দিয়েছেন মিনি পর্দার এই তারকা অভিনেত্রী। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক- গত বছরের শেষ দিকে সাবিলা অভিনীত 'উবার' নাটকটি ছিল আলোচনার তুঙ্গে। মধ্যবিত্ত জীবনের হাজারো টানাপড়েন নিয়ে বহু নাটক নির্মিত হলেও 'উবার' নাটকটি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে দেখা যায়, বাবা সরকারি চাকরি করেন। মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। আসা-যাওয়ায় কষ্ট হওয়ায় বাবার কাছে আকুল আবেদন, একটা স্কুটি চাই। মেয়ের আবদার রাখতে, বাবা অফিস শেষে 'উবার' চালানো শুরু করেন। এদিকে অধৈর্য মেয়ে বাবার আশায় না থেকে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালান। উঠেন উবারে। অদ্ভুতভাবে সেই উবার চালক ছিলেন মেয়েটির বাবা। এভাবেই চলতে থাকে হৃদয়বিদারক নাটকটি। চরিত্রের প্রয়োজনের সাবিলাকে ভূতও হতে হয়েছে। শহুরে দস্যি মেয়েটা একটি ওয়েব সিরেজের জন্য সত্যি সত্যি ভূত সেজে দর্শকের সামনে হাজির হয়েছিলেন। এ নিয়ে সাবিলার বক্তব্য, 'আমি ভূত অনেক ভয় পাই। তাও চরিত্রের জন্য ভূত হয়েছি। আর চরিত্রটিকে একদম ন্যাচারাল রাখার জন্য এখানে কোনো গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়নি। সবটা অভিনয় দিয়েই ফুটিয়ে তোলতে হয়েছে। আমরা পুরো ইউনিট মিলে গাজীপুরের একটি পুরানো বাড়িতে এই ভূতের দৃশ্যায়ন করেছি। সত্যিই অভিজ্ঞতাটা চমৎকার।' বর্তমানে সাবিলা বহুল আলোচিত ধারাবাহিক 'ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজিন ৩'- এর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এছাড়াও সম্প্রতি 'ডুপিস্নকেট', 'শশুর সাহেবের আগমন', 'অপরাধী', মধ্যবিত্ত হওয়াটা পাপ', 'গার্লফ্রেন্ডের চাপ' ও 'হোয়াই'সহ বেশ কয়েকটি খন্ডনাটকের কাজ করেছেন। এসব নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও ফারহান আহমেদ জোভান। সাবিলা বলেন, 'বরাবরই বেছে বেছে কাজ করি। স্ক্রিপ্ট পড়ে ভালো না লাগলে কাজ করি না। সামনেও ভালো ভালো স্ক্রিপ্ট ও নির্মাতার কাজ করব। দর্শকদের কোনোভাবেই হতাশ করতে চাই না।' চলতি বছরের শুরুতে বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা থাকলেও করোনার কারণে সব ভেস্তে গেছে। মহামারির কারণে টানা চার মাস ঘরবিন্দ ছিলেন এই অভিনেত্রী। অনাকাঙ্ক্ষিত এ অবসর কাটিয়েছেন বিভিন্ন উপায়ে। 'মাঙ্কি বিজনেস' খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, 'সে সময়টাতে প্রচুর বই পড়ছি। সিনেমা দেখছি। অনলাইন থেকে কিবোর্ড বাজানো শিখেছি। পাশাপাশি নতুন একটি ভাষাও আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি। আর নিয়মিত নামাজ পড়েছি।' এদিকে গত বছরের গোড়ার দিকে দীর্ঘদিনের প্রেমিক নেহাল সুনন্দ তাহেরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন সাবিলা। দুই পরিবারের সম্মতিতেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সংসার জীবন নিয়ে আছেনও বেশ। 'আলহামদুলিলস্নাহ, আমরা বেশ ভালো আছি। সবার দোয়ায় সংসার জীবন ভালোই কাটছে'- জানান সাবিলা।