পেস্নব্যাকেই স্বাচ্ছন্দ্য কনার

সিনেমার পেস্নব্যাক হোক কিংবা মিউজিক ভিডিও অথবা টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠান- সব মিলিয়ে কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনার ব্যস্ততা পাহাড় সমান। সেই সঙ্গে সদ্য শুরু করা ঘরসংসার তো আছেই। এক কথায় দম ফেলার ফুরসত নেই 'রেশমি চুড়ি' খ্যাত এই শিল্পীর। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও তিনি ছুটছেন আপন গতিতে।

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

রায়হান রহমান
দিলশাদ নাহার কনা
'দিয়েছি তোকে দিল দিল দিল/ তোকে ছাড়া বাঁচা মুশকিল' গেয়ে শুধু হইচই-ই নয়, দেশীয় পেস্নব্যাক গানের সর্বোচ্চ ভিউয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন কনা। এরপর 'রেশমি চুড়ি', 'ছিপ নৌকো'র মতো গান গেয়ে পেয়েছেন ঈর্ষণীয় দর্শকপ্রিয়তা। কনার এই ক্রেজ ক'বছর ধরেই চলছে। পেস্নব্যাকের পাশাপাশি মিউজিক ভিডিও, নাটকের গান এমনকি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলেও কনার উপস্থিতি বেশ সরব। করোনাকালের আগে স্টেজ মাতাতেও দেখা গেছে প্রজন্মের অন্যতম শ্রোতাপ্রিয় এই শিল্পীকে। চলতি বছর করোনা মহামারির তান্ডবে প্রায় পাঁচ মাস ঘরবন্দি ছিলেন তিনি। গাজীপুরের খামার বাড়িতে বরের সঙ্গে কাটিয়েছেন এই সময়টা। তবে ঘরবন্দি থাকলেও হাত গুটিয়ে বসে থাকার জো ছিল না তার। সেখান থেকেই বিভিন্ন টিভি শো ও করোনাকালীন যৌথ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কনা। গেয়েছেন 'তোমরাই বন্ধু, প্রকৃত বন্ধু, বাংলাদেশ পুলিশ'। 'জ্যামিতিক ভালোবাসা'র গায়িকা এখন আর ঘরবন্দি নেই। আগস্ট থেকে ছুটছেন পুরানো গতিতে। পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হওয়ায় তার নাকি 'করোনা পেনিক' কেটে গেছে। তাই বাসা থেকে বের হচ্ছেন, নতুন গানে কণ্ঠও দিচ্ছেন। কনার ভাষায়, 'এখন তো সবকিছু স্বাভাবিকই হয়ে গেছে। তবে কাজের সংখ্যা কিছুটা কম। শো নেই, কিন্তু টুকটাক রেকর্ডিং চলছে। আমিও যেসব কাজের প্রস্তাব পাচ্ছি, সবগুলোই করছি। কারণ অনেক দিন তো হলো, এভাবে কাজ বন্ধ করে চলতে থাকলে মুশকিল। তাছাড়া প্রথম দিকে করোনার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতাম, এখন তেমনটা হয় না। এরপরেও পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছি। স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় দিলে সমস্যাটা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।' কাজে ফিরেই রেকর্ড করেছেন নির্মাতা সাইফ চন্দনের নতুন একটি সিনেমার গান। অনেক চেষ্টা করে সিনেমার নামটি মনে করতে না পারলেও কনা বলেন, 'দুদিন আগেই আমি আর ইমরান একটি পেস্নব্যাকে কণ্ঠ দিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজটি করেছি। সিনেমাটির নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। তবে এটি নির্মাণ করছেন সাইফ চন্দন।' সমসাময়িক অনেক শিল্পীই যেখানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে হাজারো অনুযোগ-অভিযোগ পুষে রেখেছেন। সেখানে তার দ্বিতীয় অ্যালবাম 'সিম্পলি কনা'র মতোই কনা কাজ করে যাচ্ছেন অবলীলায়। নেপথ্য যুক্তিও আছে। গানটাকেই যে ভালোবাসেন তিনি। এর বাইরে সাত-পাঁচের ধার ধারেন না কনা। মাত্র চার বছর বয়সে গানের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার। সেটার স্বচিত্র প্রতিফলন ঘটে ২০০০ সালে। পেশাগতভাবে গান শুরু করার পর। এর ঠিক ছয় বছর পর প্রকাশিত হয় প্রথম অ্যালবাম 'জ্যামিক ভালোবাসা'। সেই থেকেই শুরু। ছুটছেন তো ছুটছেনই। একে একে গেয়েছেন 'তোমার ইচ্ছেগুলো', 'মেয়েদের মন বোঝা', 'চেয়েছি ছোট্ট নদী', 'ধিমতানা', 'মন বলেছেন', 'পাড়াতে মাঝ রাতে', 'প্রেমের রাজা', 'ও ডিজে ও ডিজে'র মতো অবসম্ভব দর্শকপ্রিয় গান। পাশাপাশি পাঁচ শতাধিক বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন কনা। গেয়েছেন হিন্দি ভাষার গানও। 'আভি তো লামহে' শিরোনামে গানটি গেয়েই বসে থাকেননি তিনি। সিংহলি এবং আরবি ভাষাতেও ছড়িয়েছেন সুরের মূর্ছনা। কনা বলেন, 'অনেকেই বর্তমান গান নিয়ে নেতিবাচক কথা বলে। তবে আমার কাছে মনে হয় এখন দর্শকের রুচি ও পছন্দসই গান তৈরি হচ্ছে এবং গানগুলো দর্শক বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করছে। একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ভালো গান ও কম ভালো গান সবসময়ই তৈরি হয়েছে। তবে দর্শকরা ভালো গানই শোনেন। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সামনেও হবে।' কথায় কথায় এই শিল্পী জানান, পেস্নব্যাক তাকে রোমাঞ্চিত করে। এই একটি জায়গাতেই নাকি তিনি নিজের মনের মতো করে গাইতে পারেন। পাশাপাশি স্টেজ শোটাও উপভোগ করেন। তবে করোনার মধ্যে বন্ধ থাকায় কিছুটা মর্মাহতও বটে।