নায়িকা লেডি গাগা

বিশ্বখ্যাত পপ তারকা লেডি গাগা। সুরের মূছর্নায় অনেক আগেই জয় করেছেন সংগীতপিপাসুদের অন্তর। সেই সঙ্গে বিচিত্র সাজ-পোশাকে হয়ে উঠেছেন অনন্য এক তারকা। ফ্যাশনবোদ্ধাদের কাছেও প্রিয় নাম লেডি গাগা। সব অজর্নকে পেছনে ফেলে এবার নতুন পরিচয়ে আবিভ‚র্ত হচ্ছেন এই হলিউড সুন্দরী। আগামীকাল আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাচ্ছে তার প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র ‘আ স্টার ইজ বনর্’।

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

প্রীতি প্রাপ্তি
লেডি গাগা
পুরোদস্তুর নায়িকা হিসেবে নিজের প্রথম ছবি নিয়ে বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মাকির্ন গায়িকা লেডি গাগা। কদিন আগেই ৭৫তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন তার ছবি ‘আ স্টার ইজ বনর্’ নিয়ে। এরপর তিনি কানাডায় গেলেন একই ছবি নিয়ে টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৮-তে। এবার আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাগ্রহে দেখা মিলবে তার। কেননা আগামীকালই মুক্তি পাচ্ছে তার প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র ‘আ স্টার ইজ বনর্’। আর বিশ্বব্যাপী ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ৯ অক্টোবর। মাকির্ন অভিনেতা ব্র্যাডলি কুপারের বিপরীতে এই ছবিতে জুটি বেঁধেছেন তিনি। জানা গেছে, ১৯৩৭ সালের ছবি ‘আ স্টার ইজ বনর্’ এর রিমেক করছেন কুপার। সেই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় অনবদ্য অভিনয় করেছেন গাগা। শুধু অভিনয়ই নয়, ছবির জন্য গানও গেয়েছেন গাগা। এই ছবির মাধ্যমে লেডি গাগা যেমন প্রথমবারের মতো নায়িকা হলেন তেমনি প্রথমবারের মতো পরিচালনায় নাম লেখালেন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ব্র্যাডলি কুপার। গত বছর ক্যালিফোনির্য়ায় শুরু হয় ছবির কাজ। এর আগে ‘অ্যা মেরিকান হরর স্টোরি দ্য হোটেল’ শোয়ের জন্য গোল্ডেন গেøাব পুরস্কার জিতেছিলেন লেডি গাগা। ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে হয়েছে এ বছরের অন্যতম আলোচিত হলিউড ছবি ‘আ স্টার ইজ বনর্’-এর উদ্বোধনী প্রদশর্নী। তারকাবহুল উদ্বোধনী প্রদশর্নীর আগে ছবির পরিচালক ও অভিনেতা ব্র্যাডলি কুপার এবং নায়িকা লেডি গাগা অংশ নিয়েছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে লেডি গাগা সাংবাদিকদের বলেন, ছবিতে তাকে নেওয়া হয় একটি শতের্। আর সেটা হলো মেকআপ না করার শতর্! ব্র্যাডলি কুপার প্রথম যেদিন পরিচালক হিসেবে দেখা করতে আসেন লেডি গাগার সঙ্গে, সেদিনের কিছু স্মৃতি সাংবাদিকদের শোনান তারা। লেডি গাগা বলেন, ‘ছবির স্ক্রিপ্ট আমার পছন্দ হয়েছিল। এটা জেনে ব্র্যাডলি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আমি একটা গাউন পরে রানির মতো সেজেগুজে তার সামনে যাই। সঙ্গে সঙ্গেই ব্র্যাডলি একটা রুমাল নিয়ে আমার মুখের মেকআপগুলো মুছতে শুরু করেন। আর বলেন যে মেকআপ ছাড়া ক্যামেরার সামনে দঁাড়াতে পারলে তিনি আমার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। আমার কিছু করার ছিল না। গল্পটা আমার এত পছন্দ হয়েছিল যে মেকআপ না করার শতর্টা মানতেই হয়।’ গাগা আরও বলেন, ‘আমার পরিচালক আমার ওপর আস্থা রেখেই মেকআপ ছাড়া অভিনয়ের কথাটি বলেছেন। তাই আমিও তার ওপর আস্থা রেখেই সব মেনে নিয়েছি। তিনি আমার ভেতরের শক্তি দেখতে পেয়েছিলেন বোধ হয়।’ অভিনেতা ও নিমার্তা ব্র্যাডলি কুপারও সেদিনের অনেক ঘটনা সাংবাদিকদের শোনান। তিনি বলেন, ‘প্রথম যেদিন গাগাকে মেকআপ ছাড়া দেখেছেন, সেদিনই নাকি ওই সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রীর চোখ আর হাসির প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন।’ ‘আ স্টার ইজ বনর্’ ছবিটি দুজন সংগীতশিল্পীর জীবন নিয়ে তৈরি। এই দুই শিল্পীকেই ছবিতে দেখা যাবে জীবনের নানা বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করতে। একজনকে সাফল্যের আশায় বিষণœতায় ভুগতে দেখা যাবে, আরেকজনকে দেখা যাবে খ্যাতি সামাল দেওয়ার জন্য মাদকে আসক্ত অবস্থায়। লেডি গাগাও তো একজন বিশ্বখ্যাত তারকা। ছবির সঙ্গে তিনি নিজেকে কতটা মেলাতে পেরেছেন? টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবের সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে গাগা বলেন, ‘খ্যাতি সামাল দেওয়ার জন্য অনেক শিল্পীই নানাভাবে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে তাদের জীবনে কাছের মানুষগুলো যদি সময় থাকতেই তা বুঝতে পারে, তাহলে তাদের ফিরিয়ে আনা যায়।’ খ্যাতি কি গাগার জীবনকেও বদলে দিয়েছিল কোনো সময়? গাগা বলেন, ‘সত্যি বলতে, যে তারকা হয়ে যায়, সে কখনো বদলায় না। বদলে যায় তার চারপাশ, চারপাশের মানুষ। আর এই বদলে যাওয়ার সঙ্গেই অনেক সময় মানিয়ে নেয়া যায় না। আমার সঙ্গেও এমন হয়েছে।’ গাগা বিনোদনজগতের মানুষদের প্রতি অনুরোধ করেন, ‘খুবই ভালো হয়, যদি এই ক্ষেত্রে কাজ করতে আসা নতুনদের পুরনোরা সহযোগিতা করে, পথ দেখায়। তাহলে বিপদগ্রস্ত হওয়া থেকে বঁাচতে পারবে অনেকেই। মানসিক রোগ ও হয়রানি থেকে বেঁচে যাবে অনেকে।’ প্রযোজনা সংস্থা ওয়ানার্র ব্রস জানিয়ে দিয়েছে, ছবির যে চরিত্র, তাতে গাগাকেই মনে হয়েছে সবচেয়ে যোগ্য। তা ছাড়া এটি মিউজিক্যাল সিনেমা। এ তো আর বলিউড নয় যে, এখানে নায়িকা ঠেঁাট মেলাবেন। আসল নায়িকাকেই গাইতে হবে। গানের ও চরিত্রের ধরন, সেই সঙ্গে কাহিনী মিলিয়ে নাকি গাগার ছবিই ভেসে উঠেছে পরিচালকের মনে। গাগার জন্য অভিনয় একেবারে নতুনও নয়। নিজের মিউজিক ভিডিওর জন্য অভিনয় তো আছেই; সবের্শষ ‘আমেরিকান হরর স্টোরি’র পঞ্চম মৌসুমেও দেখা গেছে। এ ছাড়া দুটি সিনেমাতেও কাজ করেছেন। যদিও এর কোনোটাতেই তার চরিত্র মুখ্য ছিল না। অন্যদিকে কুপার আমেরিকান হাসেল, হ্যাংওভার-এর মতো ছবির জন্য বিখ্যাত। তার সিলভার লাইনিংস প্লেবুকের কারণেই তো জেনিফার লরেন্স পেয়েছিলেন অস্কার।