বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

'সৌন্দর্য থাকে হৃদয়ে'

তারার মেলা ডেস্ক
  ২০ মে ২০২১, ০০:০০
আলমা আন্দ্রে মেজা কারমোনা

'কী দারুণ মুহূর্ত! এই পথচলার জন্য আমি তৈরি। মেক্সিকো, আমার এই বিজয় তোমাদের বিজয়। এই বিজয় আমার জীবনে বাস্তবে ধরা দেওয়া স্বপ্নের মতো। আশা করছি, আগামীর পৃথিবীতে সমতার জন্য কাজ করে যাব।' নতুন মিস ইউনিভার্স-এর বিজয় মুকুট পরার পর এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন আন্দ্রে মেজা। রোববার রাতে (বাংলাদেশ সময় ১৭ মে) ফ্লোরিডার হলিউডে হার্ড রক হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনোতে বসেছিল মিস ইউনিভার্সের ৬৯তম আসর। সারা বিশ্ব থেকে ৭৩ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরার মুকুট জেতেন ২৬ বছর বয়সি মেক্সিকোর এ সুন্দরী। মিস মেক্সিকোই জিতে নিলেন মিস ইউনিভার্সের মুকুট। মেক্সিকো এ বছরের বিজয়ী মিলিয়ে মোট তিনবার মিস ইউনিভার্সের খেতাব জিতে নিল। এর আগে ১৯৯১ সালে লুপিটা জোনস এবং ২০১০ সালে জিমেনা নাভাররেতে মিস ইউনিভার্স হয়েছিলেন। এবারের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন মিস ব্রাজিল জুলিয়া গামা এবং তৃতীয় হয়েছেন মিস পেরু জ্যানিক মাসেতা দেল কাসিলো। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয় এই অনুষ্ঠান। প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স দক্ষিণ আফ্রিকার জোজিবিনি তুনঝি অ্যান্দ্রের মাথায় মিস ইউনিভার্সের মুকুট পরিয়ে দেন। মিস ইউনিভার্সের টুইটার পেজে শেয়ার করা হয়েছে গোটা অনুষ্ঠানের ঝলক। অ্যান্দ্রেকে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেছেন গোটা বিশ্বের মানুষ। ইতিমধ্যেই মিস ইউনিভার্স ২০১৫ পিয়া আলোনজো ওয়ার্টসবাচ অ্যান্দ্রেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, 'শুভেচ্ছা অ্যান্দ্রে মেজা! আমাদের নতুন মিস ইউনিভার্স, তোমার নতুন জার্নিটা দেখার জন্য অপেক্ষা ধরে রাখতে পারছি না। শুভেচ্ছা মেক্সিকো।'

আন্দ্রে মেজার সুবাদে ১০ বছর পর মিস ইউনিভার্সের মুকুট এলো মেক্সিকোতে। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোর লুপিটা জোন্স প্রথমবার নিজের দেশকে মুকুট এনে দেন। সবশেষ ২০১০ সালে হিমেনা নাভারেতে খেতাবটি পান। ফ্লোরিডা থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে গিয়ে বিভিন্ন জনদরদি সংস্থার পক্ষে কাজ করবেন আন্দ্রে মেজা। বিজয়ের পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, '৭৩ জন অসাধারণ তরুণীর সঙ্গে নির্বাচিত হওয়ায় আমি সম্মানিত। মিস ইউনিভার্স মুকুট জয়ে স্বপ্ন সত্যি হলো আমার। আশা করি, আগামীতে সমতার জন্য অবদান রেখে বিশ্বের সেবা করতে পারব।'

আন্দ্রে মেজার চোখে সৌন্দর্যে সংজ্ঞা কী? প্রতিযোগিতা চলাকালে তিনি এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা এখন অনেক আধুনিক সমাজে বসবাস করি। আজকাল সৌন্দর্য শুধু সুন্দর মুখের বৃত্তে আটকে নেই, সৌন্দর্য কেবল চেতনায় নয়, আমাদের হৃদয়ে থাকে। আমরা যেভাবে ভাবি, সেভাবেই তা ছড়ায়। কখনো কাউকে বলার সুযোগ দেবেন না যে, আপনি অর্থহীন।'

৬৯তম আসরের চূড়ান্ত পর্বে একজন বিচারক জানতে চেয়েছেন, দেশের প্রধান হতে পারলে কীভাবে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা করবেন? জবাবে আন্দ্রে মেজা বলেন. 'আমার মনে হয়, এমন কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জুতসই কোনো পথ নেই। তাই করোনা ছড়িয়ে পড়ার আগে দ্রম্নত লকডাউন আরোপ করব। কারণ আমরা অনেককে হারিয়েছি, এই শোক সইবার মতো নয়। মানুষের যত্ন নিতে হবে আমাদের সবাইকে।'

১৯৯৪ সালের ১৩ আগস্ট মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়া সিটিতে বাদামি রঙা চোখজোড়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন আলমা আন্দ্রে মেজা কারমোনা। তার পূর্বপুরুষরা এশীয়। বাবা সান্তিয়াগো মেজা, মায়ের নাম আলমা কারমোনা। তিন বোনের মধ্যে আন্দ্রে সবার বড়। তাদের মোট ৪০ জন কাজিন। ২০১৭ সালে অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব চিহুয়াহুয়া থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি নেন ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার এই তরুণী।

শুধু রূপে নয়, পড়াশোনায়ও মেধাবী আন্দ্রে মেজা। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি আছে তার। সনদপ্রাপ্ত রূপসজ্জা শিল্পী তিনি। নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলা এই তরুণী বর্তমানে মিউনিসিপ্যাল ইনস্টিটিউট ফর উইমেন-এর সঙ্গে লিঙ্গ সহিংসতা রোধে কাজ করছেন। পৃথিবীকে সুন্দর রাখতে ও প্রাণীদের কল্যাণে নিরামিষভোজী তিনি। চিহুয়াহুয়ার পর্যটনের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্দ্রেয়ার গান গাইতে ভালো লাগে। তিনি মনে করেন, অনুভূতি প্রকাশে এর চেয়ে জুতসই মাধ্যম আর হয় না। শরীরচর্চায় ২৬ বছর বয়সি এই তরুণীর গুণ হলো, টানা তিন মিনিট পস্ন্যাঙ্ক করতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে