শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুসময়ের অপেক্ষায়...

বাংলা সিনেমার স্বর্ণালি যুগের কথা এলেই মনে পড়ে সুচন্দার কথা। তার এক সময়ের সাড়া জাগানো অভিনয় সিনেমাপ্রেমীদের মন্ত্র মুগ্ধের মতো টানত। বর্তমান পরিস্থিতিতে এক প্রকার 'ঘরবন্দি' জীবন কাটছে সুচন্দার। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারার মেলার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
মাতিয়ার রাফায়েল
  ২০ মে ২০২১, ০০:০০
কোহিনূর আক্তার সুচন্দা

করোনার মধ্যে কেমন চলছে যাপিত জীবন?

সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ ঋণী, আমি এখনো ভালো আছি, সুস্থ আছি। তবে সুস্থ আছি শারীরিকভাবে। কিন্তু মানসিকভাবে একটা অস্থিরতার মধ্যদিয়েই দিন যাচ্ছে। সেটা হচ্ছে, সবসময়েই একটা আতঙ্কের মধ্যদিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। যখনই ফোনটা বেজে ওঠে তখনই মনে হয়, এই যেন কোনো দুঃসংবাদ আসবে। নিজের আত্মীয়-স্বজনের যারা মুরুব্বি ছিলেন প্রায় সবাই চলে গেছেন, সমবয়সিদেরও অনেকে চলে গেছেন, চলে যাচ্ছেন। তাই এখন সব সময়েই একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যদিয়ে সময়টা চলে যাচ্ছে।

এর মধ্যেও কোনো সুসংবাদের অপেক্ষা করেন না!

কোনো সুসংবাদের আশা করি না, তা না। কিন্তু কোনো সুসংবাদ আসবে কিনা, তাতো বলতে পারি না। আমার যে একটা কর্মজগৎ ছিল সেটার বাইরে তো নিজেকে ভাবতেও পারি না। বর্তমানে চলচ্চিত্রের ওপর দিয়ে যে রকম দুঃসময় যাচ্ছে, কামনা করি এই দুঃসময়টা কেটে যাক। চাই সেখান থেকেও একটা সুসংবাদ আসুক। কিন্তু চাইলেই কি সেই সুসংবাদ আসবে?

একই পরিবারের 'তিনকন্যা'ই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী। আগের মতো এই 'তিনকন্যা'র মধ্যে

যোগাযোগ হয়?

না, এই করোনার পর থেকে আমাদের মধ্যে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে চম্পার সঙ্গে কথা হয় বটে, তবে ববিতার সঙ্গে বা অন্য কারোর সঙ্গে কোনো দেখা-সাক্ষাৎ হয়ই না।

কোলাহলমুখর জীবন শেষে অবসর সময়টা কীভাবে পার করছেন?

সারা জীবনটাই তো আমার গেছে কর্মব্যস্ততার মধ্যে। সেজন্য অলসভাবে বসে থাকাটা একেবারেই সহ্য হয় না। এখনো কোনো না কোনো কাজের ভেতর ডুবে থাকি। এখন ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকলেও রান্নাবান্না থেকে শুরু করে নাতিনাতনিদের সময় দেওয়া ছাড়াও বাকি কাজ বলতে বাগান পরিচর্চা করা। ছাদে বা বাড়ির বারান্দায় ফুল-ফলের গাছ দেখাশোনা করা। ফুল গাছই বলেন আর বনজ গাছই বলেন, এই উদ্ভিদপ্রেমটা আমি পেয়েছি বাবার কাছ থেকেই। পাশাপাশি নিয়মিত ধর্মকর্মেও সময় দিয়ে থাকি। এর সবই তো কাজ, তাই না!

কর্মজীবনের তো অনেকই সুখকর স্মৃতি আছে, পীড়াদায়ক স্মৃতি বলতে কি কিছু আছে?

মানুষের যেমন আনন্দের স্মৃতি আছে তেমন পীড়াদায়ক, কষ্টদায়ক স্মৃতিও থাকে। আমার পীড়াদায়ক, কষ্টদায়ক স্মৃতি বলতে একসময় যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, এফডিসি ঘিরে যাদের সঙ্গে আমার সখ্য ও কর্মচাঞ্চল্য ছিল, সেই হৃদয়গ্রাহী জীবন তো আর কখনো ফিরে পাব না। এটাই এখন আমার জন্য কষ্টদায়ক স্মৃতি। এই যে যারা আমার সহকর্মী ছিল, তাদের অনেকেই তো একে একে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। তাদের কেউই তো আর ফিরবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে