তারকার পূজা...

মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেছে শারদীয় দুগোর্ৎসব। কদিন বাদেই পাড়ার মÐপে মÐপে ছড়িয়ে পড়বে খুশির জোয়ার। ঢাকঢোলের বাদ্য আর সুরের মূছর্নায় মুখরিত হয়ে উঠবেন সবাই। আট-দশজনের মতো শোবিজ তারকারাও মেতে উঠবেন উল্লাসে।

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

মাসুদুর রহমান
কিরণ চন্দ্র রায় আর ফিরে পাওয়া যাবে না ছোটবেলার দিনগুলো ঢাকাতেই পরিবারের সবার সঙ্গে পূজা উদযাপন করব। ইতিমধ্যে পূজার ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। পূজা উপলক্ষে নিমির্ত একাধিক টিভি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। সামনে আরও বেশকিছু গানের অনুষ্ঠান করব। মঞ্চেও ব্যস্ততা থাকবে। তবে পূজার আনন্দটা এখন আগের মতো পাই না। ছোটবেলায় পূজার সময় যেমনটা আলোড়িত হতাম, এখন তা হয় না। সারা বছর পূজার জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করতাম। মাস খানেক আগে থেকেই পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যেত পাড়ায় পাড়ায়। কারণ পূজা এলে সারাপাড়ায় উৎসব শুরু হয়ে যেত। নতুন জামা, দূর-দূরান্তে প্রতিমা দেখতে মÐপে মÐপে ঘুরে বেড়ানো, নানা ধরনের খাবার- এসব ছিল অভাবনীয়। এখন সেই বিষয়গুলো খুব মনে পড়ে। ছোটবেলার ফেলে আসা সেই দিনগুলো ইচ্ছে করলেই আর পাওয়া সম্ভব না। কুমার বিশ্বজিৎ আকষর্ণ করত ঢাকের আওয়াজ আগের মতো এখন আর মÐপে গিয়ে পূজায় আনন্দ করা হয়ে ওঠে না। তবুও চেষ্টা করি মÐপে যাওয়ার। ছোটবেলার পূজার আনন্দটা ছিল অন্যরকম। সবচেয়ে বেশি আকষর্ণ করত ঢাকের আওয়াজ। এক কথায় ঢাকের আওয়াজ আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখত। জানি না এর প্রতি আমার এত আগ্রহ কেন ছিল? পূজার কটা দিন ঢাকীদের সঙ্গেই থাকতাম। আমি যেহেতু বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র-সন্তান, তাই আমাকে সবাই চোখে চোখে রাখত সব সময়। স্কুল থেকে এসে কোনোরকম একটু খেয়েই পূজামÐপের পাশে ঢাকীদের কাছে চলে যেতাম। ওদের সহকারীর মতো কাজ করতাম। এটি আবার মা-বাবা পছন্দ করতেন না। তবুও আমি ঢাকীদের পিছু ছাড়তাম না। এখনো ঢাকের আওয়াজ আমাকে আকষর্ণ করে। চঞ্চল চৌধুরী প্রতিদিন দজিের্ক জিজ্ঞেস করতাম কাপড় বানানো হয়েছে কিনা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গ্রামেই পূজা উৎযাপন করব। কারণ আমার বাবা-মা এখনো সেখানেই থাকেন। আমরা আট ভাই-বোন। স্ত্রী-সন্তানসহ সবাই পূজায় একত্র হই। এই সময়ে বাড়িটা যেন এক মিলনমেলায় রূপান্তরিত হয়। তবে এবার একটু দেরি করে গ্রামে যেতে হবে আমাকে। কারণ পূজা উপলক্ষে আমার অভিনীত ‘দেবী’ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। এ ছবির প্রচারণায় বেশ ব্যস্ত থাকতে হবে পূজার প্রথম প্রহরগুলোতে। তাই বিজয়া দশমীতে সবার সঙ্গে বাড়িতে থাকব। এখন ছোবেলার মতো পূজা উপভোগ করা হয় না। তখন একমাস আগ থেকে অপেক্ষা করতাম পূজার জন্য। নতুন পোশাকের আনন্দ ছিল। জামা-কাপড়ের জন্য এক মাস আগে দজির্ বাড়িতে যাওয়া হতো। প্রায় প্রতিদিন দজির্ চাচাকে একবার করে জিজ্ঞেস করতাম, কাপড় তৈরি হয়েছে কি-না? জ্যোতিকা জ্যোতি পূজার সময় কলকাতায় আমার অভিনীত রাজল²ী শ্রীকান্তের টিজার লঞ্চিং হবে আমার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতেই পূজা উদযাপন করতে পছন্দ করি। কিন্তু এবার পূজার সময় কলকাতায় থাকতে হবে। কারণ ওপার বাংলায় আমার অভিনীত ‘রাজল²ী শ্রীকান্ত’ ছবিটি টিজার লঞ্চিং হবে। বেশ বড় আয়োজনে একটি বড় পূজামÐপে এটি লঞ্চিং হবে। পূজা উপলক্ষে ছবিটির প্রচারণার কাজে সেখানে থাকব। কিন্তু এবার কলকাতায় থাকতে হচ্ছে। তবে সম্ভব হলে বিজয়া দশমীর আগে দেশে চলে আসতে পারি। ছোটবেলার আনন্দ আর এখনকার আনন্দের মধ্যে তফাৎ আছে। ছোটবেলায় প্রতিমা আর মÐপের ঝলমলে সাজসজ্জা দেখলে অবাক হতাম। অন্যরকম খুশি লাগত। এখনো লাগে। তবে তখনকার মতো নয়। অপণার্ ঘোষ অষ্টমীর দিন আমাকে কুমারী সাজানো হয়েছিল বাবা-মাসহ পূজার সময় সাধারণত চট্টগ্রামেই কাটানো হয়। এ জন্য পূজার দু-একদিন আগেই ঢাকা ছাড়ব। চট্টগ্রামে নিজেদের পাড়াতেই পূজা হয়, সেটি কখনো মিস করতে চাই না। ছোটবেলা ছাড়া স্মরণীয় পূজা আসলে নেই। সে সময়টাতেই পূজা বেশি উপভোগ করতাম। ছোটবেলার পূজার একটি ঘটনা খুব মনে পড়ে। অষ্টমীর দিন আমাকে কুমারী সাজানো হয়েছিল। তখন তো বুঝি না কেন আমাকে এভাবে সাজানো হলো? সাজাটাই ছিল গুরুত্বপূণর্। এরপর যখন টেবিলের ওপর বসিয়ে দেয়া হলো, তখন অনেকেই প্রণাম করেছিলেন। সেই সময়গুলোর স্মৃতি এখনো মনে আছে। এখন বড় হয়েছি, কিন্তু ছোটবেলার পূজার সেই আনন্দগুলো পাওয়া যায় না। পূজা চেরি ঢাকাতেই পূজা উদযাপন করব পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা নিয়ে একটু ব্যস্ততা বেশি। তাই এবারের পূজাটা কেমন কাটবে জানি না। তবে পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই পূজা পালন করা হবে। পূজার কয়েকটা দিন সবার সঙ্গে বিভিন্ন পূজামÐপে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। সাধারণত ঢাকেশ্বরী, বনানী ও শঁাখারীবাজারের পূজামÐপগুলোতে যাওয়া হয়। এবারও চেষ্টা করব। সারা বছর প্রচুর নতুন পোশাক কেনা হলেও পূজা উপলক্ষে নতুন পোশাকের আনন্দটাই আলাদা। এবারও পূজায় নতুন পোশাক কিনব।