শেষের কবিতার অপেক্ষায় ঐন্দ্রিলা

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ম তারার মেলা রিপোর্ট
বহু গুণের অধিকারী সুদর্শনা এবং সুকণ্ঠী ঐন্দ্রিলা আহমেদ। বাবা প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা বুলবুল আহমেদের হাত ধরে শোবিজে পথচলা শুরু হলেও পরবর্তীতে নিজেই নিজের আলাদা একটা অবস্থান তৈরি করে নেন তিনি। এক সময় অভিনয়ে যারপরনাই ব্যস্ত থাকা এ মডেল অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ের পাশাপাশি গানও গাইতেন। তবে এখন গানেও কিছুটা অনিয়মিত। এই অনিয়মের মধ্যেই ঐন্দ্রিলা নতুন গানে কণ্ঠ দিলেন। জানালেন, শিগগিরই আসছে তার এই গান। নতুন এই গানের নাম 'শেষের কবিতা'। ফয়সাল আহমেদের কথা ও সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন আমজাদ হোসেন। গানটি প্রকাশের জন্য অনেক দিন অপেক্ষায় রয়েছেন উলেস্নখ করে ঐন্দ্রিলা বলেন, 'এই গানের কথা আমার মনকে ছুঁয়ে গেছে। কথার সঙ্গে সুরও হয়েছে চমৎকার। ফয়সাল ভাই ও আমজাদ ভাই খুবই ভালো কাজ করেছেন।' তিনি আরও বলেন, 'এর আগেও বেশকিছু মৌলিক গান করা হয়েছে আমার। বিশেষত নাটকে গান করেছি আমি। তবে আয়োজন করে এবারই প্রথম আমার মৌলিক গান করা। গানের কথা ও সুর আমার কাছে ভালো লেগেছে। কিন্তু করোনার কারণে গানটির মিউজিক ভিডিও করা হয়নি। যেহেতু আয়োজন করে এটা আমার প্রথম মৌলিক গান, তাই আমিও চাচ্ছি গানটি যথাযথভাবে মিউজিক ভিডিও আকারেই প্রকাশ করা হোক। আমার বিশ্বাস, যথাযথভাবে গানটির মিউজিক ভিডিও করে ইউটিউবে প্রকাশ করা হলে, গানটি শ্রোতা দর্শকের ভালো লাগবে।' ঐন্দ্রিলা জানান, ছোটবেলা থেকেই গান ও অভিনয়ের সাথে সম্পৃক্ত তিনি। তবে গানের চেয়ে অভিনয়েই তার সরব উপস্থিতি দেখা গেছে নানান সময়ে। অনেক দিনের পরে হলেও আবার একটি নতুন মৌলিক গান নিয়ে উপস্থিত হওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বসিত তিনি। তাহলে অভিনয় কী একদম কমিয়ে দিচ্ছেন? জবাবে ঐন্দ্রিলা বলেন, 'না, এমনটা নয়। মূলত এখন অভিনয়ের প্রতি তেমন একটা আগ্রহ নেই। এখনকার বেশিরভাগ নাটকেই প্রাণ নেই। ভালো গল্প, চিত্রনাট্য ও চরিত্রের অভাব। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি নাটকে কাজ করার প্রস্তাবও পেয়েছি। তবে কোনো গল্পই পছন্দ হচ্ছে না। এ কারণে আপাতত নাটকে কাজ করা হচ্ছে না। মানহীন নাটকে কাজ করার চেয়ে না করা ভালো। তাছাড়া এখন যেভাবে কাজ হচ্ছে, এভাবে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। একটা নাটকে দুই-তিনজন শিল্পীর বেশি থাকছে না। অথচ একটা সময় একটি নাটকে অনেক শিল্পী অভিনয় করতেন। শুটিংয়ে আমাদের কত মজা হতো। আনন্দের মধ্য দিয়ে আমরা কাজ শেষ করতাম। এখন কয়েকজনকে নির্ভর করে নাটক নির্মাণ হচ্ছে।' তাহলে কি আবারও অভিনয়ে বিরতি টানবেন? তার ভাষ্য, 'সত্যি বলতে কোনো বিরতি হবে না। ভালো গল্প ও মনেরমত চরিত্র ও নির্মাতা পেলে অবশ্যই অভিনয় করব। তবে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে নেই।' গেল ঈদে ঐন্দ্রিলা অভিনীত 'কলঙ্ক', 'ফেকলাভ' ও 'চিলে কোঠার সংসার' নাটক প্রচারিত হয়েছে। ঐন্দ্রিলা জানান, এ নাটকগুলোর শুটিং ঈদের অনেক আগে করা থাকলেও কিন্তু প্রচার হচ্ছিল না। পরবর্তীতে এবারের ঈদে প্রচার হয় নাটকগুলো। করোনার কারণে অবশ্য অনেক কাজ থেকে তাকে বিরত থাকতে হয়েছে দুই সন্তানের কথা মাথায় রেখে। বাংলাভিশনে তার উপস্থাপনায় রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠান 'সেফ'সি কিচেন' বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার ঠিক আগে নাগরিক টিভিতে তার উপস্থাপনায় 'রান্নার এক্সপার্ট' অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। তারও আগে এসএটিভি এবং চ্যানেল আইতেও একই ধরনের অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন ঐন্দ্রিলা। বেশ কিছুদিন অভিনয়ে বিরতিতে থাকার পর অপূর্ব'র বিপরীতে রুবেল হাসানের নির্দেশনায় 'বিলাভড' নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন ঐন্দ্রিলা। এর পরপরই তিনি মাবরুর রশীদ বান্নাহর 'সাংসারিক ভালোবাসা', পৃথুরাজের 'জলপুকুরে ডুব'সহ আরও বেশকিছু নাটকে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হন। নাফিজের নির্দেশনায় বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেও আলোচনায় আসেন ঐন্দ্রিলা। একজন বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসেবেও তিনি তার অভিষেক ঘটিয়েছেন 'ই-লার্নিং'র উপর চারটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে। বর্তমানে ঐন্দ্রিলা আহমেদ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কর্মরত রয়েছেন। ১০ বছর বিরতির পর ২০১৭ সালে বছরের শেষের দিকে অভিনয়ে ফেরেন এ মডেলকন্যা। অভিনেতা অপূর্বর সঙ্গে 'বিলাভড' শিরোনামের একটি নাটকের মধ্য দিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করেন তিনি। ভবিষ্যতে তার বাবা মহানায়ক বুলবুল আহমেদকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ইচ্ছে রয়েছে বলে জানান ঐন্দ্রিলা আহমেদ।