শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মবিশ্বাসী 'টলিউড কুইন'

ম তারার মেলা ডেস্ক
  ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
কোয়েল মলিস্নক

মহালয়া দিয়ে শুরু হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। করোনার প্রকোপ কিছুটা স্তিমিত হয়ে যাওয়ায় গতবারের তুলনায় এবারের উৎসব নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস কাজ করছে সবার মনে। প্রায় সবখানেই চলছে সাজ-সাজ রব। সেসঙ্গে চলছে প্রস্তুতিও। পাশাপাশি থেমে নেই সিনেমা মুক্তির প্রক্রিয়াও। শারদীয় উৎসব উপলক্ষে এরই মধ্যে টলিউডে সিনেমা মুক্তির এক রকম যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। সেই যুদ্ধে দেব-জিতের সঙ্গে লড়বেন 'টলিউড কুইন' খ্যাত কোয়েল মলিস্নক। পূজায় মুক্তি পাচ্ছে তার বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা 'বনি'। পূজা ও সিনেমা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এ তারকা। পাশাপাশি পূজায় পুরনো স্মৃতিতেও হারিয়ে যান তিনি।

মহামারি-পরিস্থিতি এবং পূজায় নিজের সিনেমা মুক্তির প্রসঙ্গে কোয়েল মলিস্নক বলেন, 'পুজো এবং নিজের সিনেমা মুক্তির বিষয়টা আমার কাছে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তারপরও পুজো এলে একটা নস্ট্যালজিয়া কাজ করে সব সময়। আমাদের বাড়ির ক্ষেত্রে পুজোর মেজাজটা একটু অন?্যরকমের। ছোটবেলায় মেজমার সঙ্গে বেরিয়ে পড়তাম। অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো প?্যান্ডেল হপিং বেশি হয়। কিন্তু আমাদের বাড়িতে যেহেতু পুজো হয়, তাই ছোট থেকেই বিরতিহীন বাড়িতেই থাকা হতো পুজোর সময়। কিন্তু চারদিনের মধ্যে বাংলা সিনেমা দেখা রীতিমত নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। মানে সন্ধিপুজোর সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেরিয়ে পড়তাম সিনেমা দেখতে। এখন পুজোয় যখন আমার ছবি মুক্তি দিই, আমি ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়ায় ফিরে যাই। যেহেতু আমাদের বিশাল বড় পরিবার, জেঠিমারা, দাদারা, কাকিমারা, ভাইবোনেরা সবাই মিলে

সিনেমা দেখতে যেতাম।'

কোয়েল বলেন, ঠিক সেই নস্ট্যালজিয়াই আজও ফিরে আসে। মহামারি করোনার কথা বলছি। কারণ, গত বছরও আপনি প্যানডেমিকে রিলিজ দিয়ে ফাইট দিয়েছিলেন। সেবার 'রক্তরহস্য' ছিল, এবার 'বনি' আসছে সিনেমা হলে। হঁ্যা, আমার মনে হয় চ্যালেঞ্জ নিতেই হয়। চ্যালেঞ্জ না নিলে জীবনে মজা থাকে না। তবে আমার মনে হয়, সিনেমা যদি ভালো হয়, সেটা যে কোনো সময়ই সেরা সময়। পয়লা বৈশাখ, পুজো বা ক্রিসমাসের ছুটি- সব সময়ই ভালো ব্যবসা করবে। তাছাড়া আমার নিজেরও এ সিনেমাটি নিয়ে যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাস রয়েছে। এটা নিয়ে কখনওই চিন্তায় ছিলাম না। আমার নিজেরও তো পরিবার আছে, সেই কনসার্ন থেকে বলতে পারি, সাবধানতা ও সুরক্ষা বজায় রেখে সিনেমা হলে এসে ছবিটা দেখুন। হুড়মুড় করে এসে ভিড় জমানোর দরকার নেই। ছবি দেখে সুস্থ থেকে বাড়ি ফেরে যেন সবাই। এটুকু জানানো আমার কর্তব্য মনে করি। করোনা এখনো পুরোটা চলে যায়নি। ভয় অনেকটা কেটে গিয়েছে। আনন্দ করুন কিন্তু সাবধানতা বজায় রেখে।'

তবে এবার বড় ব?্যাপার হলো, ত্রিমুখী লড়াই। দেব-জিতের সঙ্গে ময়দানে কোয়েলের সিনেমা। এর মধ্যে সঙ্গে মিমি-অঙ্কুশও রয়েছেন। এ বিষয়ে কোয়েলের সোজাসাপটা বক্তব্য, 'লড়াই বা যুদ্ধ বড় শক্ত কথা, এভাবে না বলাই ভালো। কারণ, আমার মনে হয়, জীবনটা খুব ছোট। সেখানে দর্শকের জায়গা অনেক বড়। আমি চাই, দর্শক হলে আসুক, ছবি দেখুক। একদম মন থেকে বলছি, চাই সবার ছবি ভালো চলুক। সেই সঙ্গে আমাদের ছবিটাও দেখুক। তবে বাকি ছবিগুলোর থেকে 'বনি' ঘরানার নিরিখে আলাদা। এটা সাই-ফাই থ্রিলার। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ?্যায়ের উপন?্যাস অবলম্বনে তৈরি এ ছবি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এই ছবির অন্যতম বড় শক্তি। তার নাম যখন একটা ছবির সঙ্গে যুক্ত করা হয়, তখন আলাদা একটা মর্যাদা পায়। এত বড় একজন লেখক! এই ব?্যাপারে আমি খুব লাকি। আই ফিল অনার্ড। তার উপন?্যাস অবলম্বনে ছবিটা এবং আমি তার একটা অংশ। তারপরে অবশ?্যই সাই-ফাই ঘরানার কথা বলব, বাংলায় খুব একটা সায়েন্স ফিকশন হয় না। কাজেই এটা একটু স্পেশ্যাল। একটা উদাহরণ দিই। আমরা যেমন- অনলাইন শপিং করি যখন, একটা জিনিস হয়তো দেখলাম। কিন্তু কিনলাম না। বেরিয়ে গেলাম ওই সাইটটা থেকে। তারপর হয়তো ইউটিউব খুললাম, নিচে দেখি অনবরত সাজেশন্‌স আসছে। ওই ধরনের জিনিসের, যা আমি কিনিনি অথচ দেখেছি। তার মানে কেউ আমাদের নজরে রাখছে, এমন একটা সিস্টেমে আছি যেখানে আমাদের অবজার্ভ করা হচ্ছে। এই বিষয়টা নিয়েই ছবিটা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বড় ভূমিকা রয়েছে ছবিতে। সাই-ফাই তো বটেই, বাকি থ্রিলের জায়গাটায় ইন্টেলেক্টের বড় ভূমিকা রয়েছে। ইন্টেলিজেন্স নিয়ে খেলা করা হয়েছে। যেখানে আবেগের ভাগ অনেকটা। ফাইনালি সন্তানকে বাঁচানোর জন্য বাবা-মায়ের লড়াই দেখা যাবে। এক 'বিস্ময় শিশু'কে কেন্দ্র করে গল্প দানা বাঁধবে।'

এখানে ইমোশনের জায়গাটা কীরকম? জবাবে কোয়েল বলেন, 'একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের আবেগ। তার জীবন নিয়েই প্রশ্ন। সে নরমাল, না অ্যাবনরমাল- কোন দিকে যাচ্ছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। এখানে আমি রয়েছি মায়ের ভূমিকায়। এবারে বেশ অভিনয়নির্ভর মনে হচ্ছে ছবিটা। অঞ্জন দত্ত, কাঞ্চন মলিস্নকের মতো অভিনেতারা রয়েছেন। এই ছবিটা ঠিক ওই নাচ-গান রোমান্সের নয়। ইতালিতে শুটিং হয়েছে ঠিকই, যতটুকু আছে, আমার আর পরমব্রতর সম্পর্কটা প্রতিষ্ঠা করার জন?্য। তিনটে গান আছে। অনুপম (রায়) খুব সুন্দর গান লিখেছে। সংলাপে যা বলার কথা সেটাই গানে আছে খুব সুন্দর ভাবে। ছবির আরেকটা আকর্ষণ অনুপমের মিউজিক। আর অবশ্যই অভিনয়ের জায়গাটা খুব শক্ত। এই প্রথম আমি অঞ্জন দত্তের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করলাম! কাঞ্চনদাও টেরিফিক অভিনেতা। পরমব্রত এত সুন্দরভাবে সবক'টা চরিত্র ভেবেছে, কী বলব! একজন প্রফেসর, একজন কেরানি। সবকটা চরিত্র খুব যত্ন নিয়ে তৈরি করেছে। এই প্রথম আমি পরমব্রতর ডিরেকশনে কাজ করলাম। পরিচালনার দিকে ওর ঝোঁকটা দুর্দান্ত। সব মিলিয়ে ভীষণ আশাবাদী আমি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে