বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বহুমাত্রিক অভিনয়ে বাপ্পী

সর্বশেষ তার অভিনীত সিনেমা মুক্তি পায় অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত কমেডি ঘরানার সিকুু্যয়েল সিনেমা 'শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২'। প্রথম সিনেমাটির মতো না হলেও ছবিটি মোটামুটি দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে। তবে প্রশংসিত হয় বাপ্পী-অপু জুটির অভিনয়
ম মাতিয়ার রাফায়েল
  ০২ জুন ২০২২, ০০:০০

শাকিব খানের পর ঢাকাই সিনেমায় যে ক'জন নায়কের আগমন ঘটেছে তাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেয়া এবং ইউল্যাব থেকে সাংবাদিকতায় পড়াশোনা করা নায়ক বাপ্পী চৌধুরী। সেই যে ২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রথম ডিজিটাল চলচ্চিত্র 'ভালোবাসার রং' দিয়ে শুরু হয়েছিল বাপ্পী চৌধুরীর এখনো যেন সেই রং ছড়িয়ে যাচ্ছেন তার প্রতিটি ছবিতে। সর্বশেষ তার অভিনীত সিনেমা মুক্তি পায় অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত কমেডি ঘরানার সিকুু্যয়েল সিনেমা 'শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২'। প্রথম সিনেমাটির মতো না হলেও ছবিটি মোটামুটি দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে। তবে প্রশংসিত হয় বাপ্পী-অপু জুটির অভিনয়।

বাপ্পীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার আরও বেশ কয়েকটি সিনেমা। পাশাপাশি শুটিং করে যাচ্ছেন আরও কিছু সিনেমায়। এছাড়া শুটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকটি সিনেমা। এভাবে বর্তমানের ব্যস্ত অভিনেতাদের মধ্যে বাপ্পী চৌধুরী যেন রেসের দৌড়েই আছেন। অভিনয় করে যাচ্ছেন একের পর এক সিনেমায়। এ পর্যন্ত অনেকগুলোই দর্শকনন্দিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এই ছবিগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে- 'অনেক সাধের ময়না', 'সুলতানা বিবিয়ানা', 'সুইটহার্ট', 'আমি তোমার হতে চাই', 'নায়ক', 'দাগ হৃদয়ে' ও 'অন্য রকম ভালোবাসা'। অভিনয়ে এ পর্যন্ত যত সিনেমা করেছেন তার বেশির ভাগ সিনেমাই রোমান্টিক। তবে ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ অভিনেতা এখন শুধু রোমান্টিক বা কমার্শিয়াল সিনেমাতেই নয় নন-কমার্শিয়াল সামাজিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, বিকল্পধারা, আর্টফিল্মসহ সব ধরনের চলচ্চিত্র বা চরিত্রে অভিনয় করতে ইচ্ছুক। ভালো চরিত্র ও কন্টেন্ট পেলে অভিনয় করতে ইচ্ছুক ওটিটি পস্ন্যাটফর্মেও। নিজের অভিনয়কে ভার্সেটাইল বা ভেরিয়েশন দিতেই এই ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। বর্তমানে তার মুক্তির অপেক্ষায় থাকাসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র আছে যেগুলোর কিছু শুটিং চলছে অথবা শুটিং থেমে আছে কিংবা শুটিং শুরু হবে। আশরাফ শিশিরের '৫৭০' (মুক্তির অপেক্ষায়), বেলাল সানীর 'ডেঞ্জার জোন', দীপঙ্কর দীপনের 'ঢাকা ২০৪০', অপূর্ব রাণার 'যন্ত্রণা' ও 'গিভ অ্যান্ড টেক', সাফিউদ্দিন সাফির 'সিক্রেট এজেন্ট', গাজী জাহাঙ্গীরের 'প্রেমের বাঁধন', শাহীন-সুমনের 'কুস্তিগীর', সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের 'কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ', সৈকত নাসিরের 'আ জার্নি উইথ ইউ' এবং কাজী হায়াতের 'জয়বাংলা'। ছবিগুলো সম্পর্কে বলতে গিয়ে বাপ্পী চৌধুরী তারার মেলা'কে বলেন, 'দেশমাতৃকানির্ভর জয়বাংলা স্স্নোগান নিয়ে আসলে নতুন করে বলার কিছু নেই। একজন শিল্পীর জন্য এটা কত বড় অর্জন হতে পারে আমি জানি না। মনে হয় আমার জীবনের সেরা অর্জনটাই পেয়ে গেছি। 'জয়বাংলা' নামটি আমার অভিনীত বাকি সব ছবির সঙ্গে জোড়া লেগেছে। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে স্বাধীনতা সংগ্রামের একমাত্র স্স্নোগান 'জয়বাংলা'। সেই প্রেক্ষাপটে কাজ করা আমার গোটা ক্যারিয়ারেই সবচেয়ে বড় অর্জন। আমি জানি, একজন শিল্পীকে মৃতু্যর আগ পর্যন্ত অভিনয় করতে হয়। কিন্তু এই ছবিটা যতদিন আর্কাইভে, ইন্ডাস্ট্রিতে থাকবে, যতদিন একটি মানুষও 'জয়বাংলা' শব্দটি উচ্চারণ করবে, ততদিন আমার নামটিও থাকবে- এটাই আমার বড় অর্জন এবং খুব শান্তির। 'জয়বাংলা'র পাশাপাশি আমি এটাও বলব, তাৎপর্যের দিক থেকে দেশমাতৃকা নিয়ে তৈরি করা আশরাফ শিশিরের '৫৭০' সিনেমাটিও ডিফারেন্ট ছবি। এটা এমন এক উচ্চতার সিনেমা, 'জয়বাংলা'র পাশাপাশি এই ছবিটাও আর্কাইভে থাকবে বলে আমি মনে করি।' 'জয়বাংলা' স্স্নোগানটির যে রকম ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে সেরকম প্রেক্ষাপটনির্ভর আবহটি রূপালি পর্দায় তুলে ধরা কম কথা নয়। এরকম সিনেমায় রোমান্টিক সিনেমার নায়ক হিসেবে ইমেজবন্দি হয়ে পড়া একজন অভিনেতার পক্ষে হুবহু চরিত্রায়ন করাও খুবই চ্যালেঞ্জিং। এরকম চ্যালেঞ্জে বরং স্টার বা সুপারস্টারের তুলনায় ক্যারেক্টার আর্টিস্ট বা চরিত্রাভিনেতারাই সাফল্যের পরিচয় দিয়ে আসছেন। বাপ্পী চৌধুরী তাতে কতটা সফল হবেন বলে মনে করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'শুধু চরিত্রাভিনেতারাই কেন, নায়করাও অবশ্যই পারেন। কারণ, নায়করা তো 'অল রাউন্ডার' হিসেবে তৈরি হয়। নাচ, গান, ফাইটিং, ড্রামা- একটি ছবিতে যা যা থাকে সবকিছুই তাকে জানতে হয়। চলচ্চিত্রের সবকিছু মিলিয়েই তারা তো পুরো প্যাকেজ একটা। একজন অভিনেতাকে নায়ক হওয়ার আগেই আর্টিস্ট হতে হয়- অর্থাৎ আপনি যা বললেন সেই ক্যারেক্টার আর্টিস্টই হতে হয়। তারপরই কেউ নায়ক কেউবা অন্যান্য চরিত্রে পারফর্ম করেন। তবে নায়ককেন্দ্রিক চরিত্রে কাজে সুদর্শন হতে হয়। বাংলাদেশে খুব কম নায়কই আছেন যাদের উপাধি নায়ক চরিত্রে আছে। যেটা আমার চরিত্রে আছে। তাই আমার নামের সঙ্গে 'নায়ক' শব্দটি যোগ করে সবাই বলেন, 'নায়ক বাপ্পী চৌধুরী'। কাজেই আমি মনে করি,

ঐতিহাসিক চরিত্র প্রতিটা নায়কের জন্য আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং।' কিন্তু অনেক 'নায়ক' ঐতিহাসিকসহ শত-শত ছবি করলেও পুরস্কারের ঝুলি প্রায় শূন্য আর চরিত্রাভিনেতারা স্বল্প কিছু করেই..... প্রশ্নটা থামিয়েই বাপ্পী বলেন, 'এটা আমার নিজের জন্যও অস্বস্তিকর। আমি এখনো কোনো পর্যায়েরই অ্যাওয়ার্ড পাইনি। আগামীতে 'জয়বাংলা', '৫৭০' ছবিতে কতটা কী হবে জানি না। তবে অনেক খাটাখাটি করছি। সাধ্যমতো সবরকম চেষ্টা করছি। এর মধ্যে আমার 'ডেঞ্জার জোন' আছে, 'দিপু নাম্বার টু' আছে- দেখা যাক কি হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে