দীঘির অন্য অধ্যায়
দীঘি জানান তার ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার। অভিনয়ের পাশাপাশি আর্কিটেক হওয়ার স্বপ্ন ছিল বলে বিজ্ঞান বিভাগে পড়েছেন। কিন্তু জীবন গতিতে অনেক কিছুর দিক বদলায়। তারই ধারাবাহিকতায় এই অভিনেত্রী এখন মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজমের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে বেশ খোশ মেজাজেই আছেন দীঘি
প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
ম মাসুদুর রহমান
এক যুগেরও বেশি সময় আগে ছোট ও বড় পর্দায় রীতিমত হইচই ফেলে দিয়েছিলেন এক শিশুশিল্পী। বিশেষ করে 'ময়না পাখি'খ্যাত গ্রামীণ ফোনের আলোচিত বিজ্ঞাপন তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। এরপর 'কাবুলিওয়ালা', 'চাচ্চু', 'এক টাকার কাবিন', 'দাদীমা', 'অবুঝ শিশু'সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও তাক লাগান। শিশুশিল্পী হিসেবে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হাতে তুলে নেওয়া সেই খুদে তারকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি এখন আর ছোট নয়। অনেক আগেই চিত্রনায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। এবার শুরু করছেন নতুন এক অধ্যায়। স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষায় যাত্রা শুরু হলো চলতি বছরের এই সময়ে। মঙ্গলবার রাজধানীর ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগে স্নাতক সম্মানে ভর্তি হয়েছেন দীঘি। তিনি বলেন, 'এ বিষয় নিয়ে ভর্তি হওয়ার কারণ ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া নিয়ে অনেক বেশি জানতে পারব। এ বিষয়ে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারব তত বেশি উন্নতি করতে পারব। আর সাংবাদিকতা আমার জন্য এডিশনাল মজার ব্যাপার। ভবিষ্যতে সাংবাদিক হতে চাইলে তখনও করতে পারব। মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করতে পারা আমার জন্য পরিপূর্ণ।' দীঘি জানান তার ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার। অভিনয়ের পাশাপাশি আর্কিটেক হওয়ার স্বপ্ন ছিল বলে বিজ্ঞান বিভাগে পড়েছেন। কিন্তু জীবন গতিতে অনেক কিছুর দিক বদলায়। তারই ধারাবাহিকতায় এই অভিনেত্রী এখন মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজমের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে বেশ খোশ মেজাজেই আছেন দীঘি। বলেন, 'ভালো লাগছে এখন থেকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। জীবনের নতুন অধ্যায়। নতুন পরিবেশে কাটবে কয়েকটা বছর।'
চলতি বছর রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.৭৫ পেয়েছিলেন দীঘি। তার আগে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় স্ট্যামফোর্ড স্কুল থেকে পেয়েছিলেন জিপিএ ৩.৬১। পড়াশোনার জন্যই প্রায় এক দশক আগে অভিনয় থেকে বিরতিতে যান শিশুশিল্পী দীঘি। ফিরেন নায়িকা হয়ে গত বছর। তাও একটি নয় দুটি সিনেমা নিয়ে। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা 'তুমি আছো তুমি নেই' এবং 'টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই' মুক্তি পায় গত বছরে। পাশাপাশি 'শেষ চিঠি' নামে একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করে নতুন আলোচনার জন্ম দেন দীঘি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত একাধিক সিনেমা। শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিকে অভিনয় করেছেন দীঘি। অন্যদিকে 'টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই'-এর দ্বিতীয় পার্ট 'মুজিব ভাই'-এর কাজ শেষ করেছেন। অপরটি হচ্ছে ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস অবলম্বনে 'শ্রাবণ জোসনায়'। সিনেমা তিনটি নিয়ে দীঘি বলেন, 'মুজিব ভাই'-এর কাজ শেষ কবে নাগাদ মুক্তি পাবে বলতে পারছি না। আর 'শ্রাবণ জোসনায়' কয়েকটি গানের শুটিং বাকি আছে। দুটি সিনেমা নিয়েই আমি আশাবাদী।' নতুন সিনেমার কাজ না থাকায় লাইট-ক্যামেরার বাইরে সময় কাটছে দীঘির। অবসরে তার সময় কীভাবে কাটে জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, 'অবসরে ট্রাবেল করি। এটা আমার খুব পছন্দ। পরিবারের কাজ করি। এছাড়া মুভি দেখি, গান শুনি এবং কখনো কখনো গুনগুনিয়ে কণ্ঠে গান তোলার চেষ্টা করি। সিনেমার পাশাপাশি দীঘি টিকটকেও বেশ সাড়া ফেলেছেন। তবে অনেকে বিষয়টি বাঁকা চোখেও দেখছেন। টিকটকই তার সিনেমায় পথের কাঁটা বলে মন্তব্য করেছেন সিনেবিশ্লেষকদের কেউ কেউ। অতি সম্প্রতি তাকে নতুন টিকটকে দেখা না যাওয়া টিকটক থেকে সরে গেছেন বলে অনেকের ধারণা। এ নিয়ে দীঘি বলেন, 'টিকটক বাদ দিচ্ছি না। আসলে সময় হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় কমিয়ে দিয়েছি।' শিশুশিল্পী হিসেবে যতটা সাড়া পড়েছিল নায়িকা হয়ে ততটা আলোকিত হয়ে ওঠেননি দীঘি। যদিও নায়িকা হিসেবে সবেমাত্র তার যাত্রা শুরু। পথ এখনো অনেক বাকি। ক্যারিয়ারের সফলতা, ব্যর্থতা নির্ভর করছে আগামীতে। ক্যারিয়ার নিয়ে দীঘি বলেন, 'শিশুশিল্পী হিসেবে অর্জন অনেক থাকলেও নায়িকা দীঘির এখনও অনেক কিছু করার বাকি আছে। নায়িকা হিসেবেও দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই। এগিয়ে যেতে হবে অনেক দূর। নিজের ওপর সেই বিশ্বাস আছে।'