নতুন বছর নতুন সিদ্ধান্ত

‘চাইলে যে কোনো ভালো প্রযোজনা সংস্থাই আমাকে নিয়ে কাজ করতে পারেন। আমার যদি গল্প, চরিত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় মনের মতো হয় তাহলে অবশ্যই আমি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করতে চাই। তবে চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পযর্ন্ত আমি ছোটপদার্য় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাই। কারণ এই মাধ্যমটিই আমাকে আজকের তানজিন তিশাতে পরিণত করেছে।’

প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

জাহাঙ্গীর বিপ্লব
তানজিন তিশা
মিডিয়াতে এখন অনেকগুলো তিশা। এত তিশার ভিড়েও কেউ কেউ আবার একনামেই পরিচিত। এই তো কয়েক বছর আগেই তিশা বললে কেবল একজনকেই ধরে নিতেন দশর্ক কিংবা পাঠক। কিন্তু দশর্ক প্রশ্ন করেন, কোন তিশা? তানজিন তিশা! হ্যঁা, নতুন প্রজন্মের কাছে এখন তানজিন তিশাই যেন একমাত্র তিশা। সাবলীল অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়ে শোবিজে নিজের একটা শক্ত জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। নাটকের পাশাপাশি মডেলিং এবং স্বল্পদৈঘর্্য চলচ্চিত্রেও অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। দেখতে অভিনয়ে তার পথচলার পঁাচ বছর পার হয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু ৫ বছর পর তার চাহিদার এতটুকু ভাটা পড়েনি। বরং এখনো ভালো কিছু নাটকের ক্ষেত্রে নিমার্তারা প্রাথমিকভাবে তিশার কথাই চিন্তা করেন। এমনকি তানজিন তিশাকে কেন্দ্র করেই অনেক নাটকের গল্পও লিখছেন নাট্যকাররা। কিন্তু নিমার্তাদের অনেকটা হতাশ করে দিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিশা। নতুন বছরে নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেন এই অভিনেত্রী। বললেন, ‘এখন আমার একটাই লক্ষ্য, সেটা হলো চলচ্চিত্র। একজন অভিনয় শিল্পীর স্বপ্ন হলো বিনোদনের সবচয়ে বড় মাধ্যমে কাজ করা। আমিও সেই লক্ষ্যেই মিডিয়ায় এসেছি। গত ৫ বছর আমি ছোটপদার্য় কাজ করে নিজেকে তৈরি করে নিয়েছি। আমার মনে হচ্ছে চলচ্চিত্রে কাজ করার এখনই মোক্ষম সময়। চলচ্চিত্রের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতও আমি।’ তিশা যে চলচ্চিত্রের জন্য মুখিয়ে আছেন, এটা বোঝা গেছে গত বছরের শেষের দিকে যখন তিনি ধারাবাহিক নাটকে কাজ না করার ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে তিশা বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের জন্য সময়ই করে উঠতে পারছি না। বেছে বেছে ভালো ভালো গল্পের খÐ নাটকগুলোর কাজ করছি। এরই মধ্যে ধারাবাহিকের কাজ হাতে নিলে খুব চাপ পড়ে যায়। তাই ধারাবাহিক থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছি। তবে বিশেষ দিবসের বিশেষ নাটকে অভিনয় করর।’ তিশা বলেন, ‘চাইলে যে কোনো ভালো প্রযোজনা সংস্থাই আমাকে নিয়ে কাজ করতে পারেন। আমার যদি গল্প, চরিত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় মনের মতো হয় তাহলে অবশ্যই আমি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করতে চাই। তবে চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পযর্ন্ত আমি ছোটপদার্য় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাই। কারণ এই মাধ্যমটিই আমাকে আজকের তানজিন তিশাতে পরিণত করেছে।’ যদি ওয়েব সিরিজের প্রস্তাব পান, তখন কি করবেন? জবাবে তিশা বলেন, ‘হ্যঁা, অবশ্যই ওয়েব সিরিজে কাজ করব। কিন্তু তার গল্প, লোকেশন ভালো হতে হবে এবং আমার চরিত্রটিও মনের মতো হতে হবে। ওয়েব সিরিজ এখন দশর্কদের বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমাদের পাশের দেশেও বড় বড় তারকারা ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছেন। আমাদের দেশেও দশর্কদের কাছে এটি দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সময়ের সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তাই ওয়েব সিরিজে অভিনয়ে আমার আপত্তি নেই।’ তাহলে আগামী দিনগুলোতে আপনাকে নিয়মিতই অভিনয়ে পাওয়া যাবে? তিশার জবাব, ‘যতদিন দশের্কর প্রিয় হয়ে থাকব ততদিনই অভিনয় করব। যদি আমার কাজের প্রতি দশের্কর আর ভালোলাগা বা ভালোবাসা না থাকে, আমিও কাজে থাকব না। কারণ দশের্কর পছন্দের তালিকায় থাকা একজন অভিনেত্রীর জন্য কতটা ভালো লাগারÑ তা বলে বোঝাতে পারব না। ভালো লাগার এ ধারাবাহিকতাটা আমার কাজ দিয়ে ধরে রাখতে চাই। আজীবন দশের্কর মনের মধ্যে বাসাবেঁধে বেঁচে থাকতে চাই।’ হঠাৎ করে যদি এখন আপনার বিয়ে হয়ে যায়, তাহলেও কী নিয়মিত থাকবেন? হেসে উত্তর দিলেন তিশা। বললেন, ‘জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যখন চাইবেন তখনই তো বিয়ে হবে। এ ক্ষেত্রে আমারও তো একটা পরিকল্পনা আছে।’ কিন্তু বিয়ের পর যদি আপনার স্বামী আপনাকে অভিনয় করতে না দেন? ‘আমি তেমন কাউকেই বিয়ে করব, যিনি আমার কাজকে, আমাকে মূল্যায়ন করবেন যথাযথভাবে। তবে এটাও ঠিক, বিয়ের পর মেয়েদের সংসারও একটা মুখ্য বিষয়। পেশা এবং সংসার দুটিই যদি ঠিক রেখে চলতে পারি সেটাই হবে আমার জন্য সুখের পৃথিবী।’ বললেন তিশা। তিশা আরও বলেন, ‘আমি আগে অনেক আবেগী ছিলাম, বাস্তবতা কম বুঝতাম। কিন্তু এখন আমি অনেক বেশি বাস্তববাদী। আবেগীও বটে, তবে আবেগটা আগের চেয়ে একটু কম। আমার মনে হয়, আমি এখন সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমি একজন সত্যিকারের অভিনেত্রী হতে চাই। হতে চাই বাবা-মায়ের একজন ভালো সন্তান, একজন ভালো স্ত্রী, একজন ভালো মা, সবোর্পরি একজন ভালো মানুষ।’