প্রণয় থেকে প্রলয় অতঃপর পরিণয়

প্রণয় থেকেই প্রলয়ের সুর বাজে তাদের সম্পকের্র। ২০১০ সালের রোমান্টিক ড্রামা ‘দ্য লাস্ট সং’-এর সেটে অভিনেতা লিয়াম হেমসওয়াথের্র সঙ্গে মাইলি সাইরাসের পরিচয় এবং তারপর অন্তরঙ্গতা। ২০১২ সালে লিয়াম আর মাইলি বাগদানের ঘোষণা দেন...

প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা ডেস্ক
জন্মের পর বাবা-মা শখ করে নাম রেখেছিলেন ‘স্মাইলি’। কারণ তিনি নাকি সব সময় হাসি-খুশি থাকতেন। বড় হয়ে নিজেই নিজের নাম কিঞ্চিৎ পরিবতর্ন করে রাখেন ‘মাইলি’। পুরো নাম ডেসটিনি হোপ সাইরাস। বাবার আশা ছিল, ভবিষ্যতে তার মেয়ে খ্যাতিমান একজন হবেন। হয়েছেনও তাই এবং খুব অল্প বয়সেই। বলছি, আমেরিকান সংগীতশিল্পী মাইলি সাইরাসের কথা। ব্যতিক্রমী গায়কি শৈলী আর নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হতে হয় তাকে। কখনো ইতিবাচকভাবে আবার কখনো নেতিবাচকভাবে। সংবাদে তাকে যেভাবেই দেখা যাক না কেন, মাইলি সাইরাস বতর্মান প্রজন্মের সংগীত পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় আছেন ওপরের দিকেই। গত সপ্তাহে নিজের ইনস্ট্রাগ্রামে আকস্মিকভাবে বিয়ে করার কথা জানিয়ে আবারও হুলস্থুল ফেলে দেন তরুণ এই গায়িকা। ১০ বছরের প্রেমিক লিয়াম হেমসওয়াথের্কই বিয়ে করেছেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ইনস্ট্রাগ্রামে। আর এ বিয়ের মাধ্যমে চুকে গেল মাইলি-হ্যামসওয়াথের্র দীঘির্দনের মান-অভিমান। আর আশা-নিরাশার দোলাচল থেকে ভক্তরাও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। কত রকম ঘটনাই যে ঘটে গেল দুজনার প্রেম নিয়ে। প্রথমে বিয়ের ঘোষণা, পরে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত, পরে আবার একসঙ্গে থাকা, ঘোরাফেরা। তারপর আবার বিচ্ছেদের সুর। অভিযোগ, গুজব, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। শুরু থেকেই শুরু করা যাক। প্রণয় থেকেই প্রলয়ের সুর বাজে তাদের সম্পকের্র। ২০১০ সালের রোমান্টিক ড্রামা ‘দ্য লাস্ট সং’-এর সেটে অভিনেতা লিয়াম হেমসওয়াথের্র সঙ্গে মাইলি সাইরাসের পরিচয় এবং তারপর অন্তরঙ্গতা। ২০১২তে লিয়াম আর মাইলি বাগদানের ঘোষণা দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এক বছর পরই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০১৫তে তারা সন্ধি করেন এবং আবার বাগদান করেন। ওই সময় মাইলি তার হবু বরের সঙ্গে আরও একটি চলচ্চিত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। এরপর মাইলির আঙুলে বাগদানের আংটি উঠলে বিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় জানান, চলতি বছরের গ্রীষ্মে বিয়ে করবেন তারা। হানিমুনের পরিকল্পনাও প্রকাশ করেন। পরে আবারো বিয়ের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে আগের সব খবরকে গুজব বলে উল্লেখ করে মাইলি বলেন, দুই বছর আগে তাদের আংটি বদল হলেও বিয়েটা হয়নি এখনো। তবে এখন আমরা সবচেয়ে রোমান্টিক জুটিগুলোর মধ্যে একটি। বিয়ে না করেই তারা একসঙ্গে বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। কিন্তু তারপর আবার তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। বিয়ে নিয়েও দেখা যায় অনিশ্চয়তা। জানা গেছে, ওই সময় তারা সন্ধি করে আবার হলিউডের পাওয়ার কাপল হিসেবে অধিষ্ঠিত হন আর সবের্শষ কবে তারা সন্তানের মুখ দেখবেন এমন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নিয়ে বিবাদ করে আলাদা হলেন। হেমসওয়াথর্ (২৮) বিয়ে করে দ্রæত সন্তানের বাবা হতে চেয়েছিলেন কিন্তু ২৫ বছর বয়সী মাইলি জানান, মা হওয়ার জন্য প্রস্তুত নন তিনি। এরকম অনেক বিষয়েই তাদের মধ্যে কথার মিল হচ্ছিল না। মাইলির বিয়ে তারিখ পেছানোতে লিয়াম ক্লান্ত আর বিরক্ত হয়ে উঠেছে। এবং আর বিয়েই করতে চাননি। লিয়ামের পরিবার তাকে ধৈযর্ ধরতে বলছিল। কিন্তু ধৈযর্ ধরতে পারছিলেন না লিয়াম। মাইলি পরের সপ্তাহে তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ম্যালিবুতে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যান, আর লিয়াম তার জন্মস্থান অস্ট্রেলিয়াতে রয়ে যান। ২০১৭ সালে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে আবারও ভাঙা সম্পকর্ জোড়া লাগে তাদের। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তাদের ক্যালিফোনির্য়ার বাড়িটি ভয়াবহ দাবানলে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তাদের বিয়েটা হয়েছে টেনেসির ফ্রাংকলিনে সাইরাসের অপর একটি বাড়িতে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়েতে পরিবারের সদস্য এবং অল্প কিছু বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন। সাইরাসের ট্যুইটারে দেয়া ছবিতে দেখা যায়, তারা দুজন আলিঙ্গন করে আছেন। আর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এসে বিয়ের কথা স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে। একটি ছবি শেয়ার করেছেন সাইরাস। লিয়ামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ছবি পোস্ট করে সাইরাস লিখেছেন, ‘১০ বছর পর’। আর তাতেই হইচই পড়ে যায় গোটা দুনিয়ায়। একজন মানুষ কতগুলো গুণের অধিকারী হতে পারেন এবং কতভাবে সংবাদের শিরোনাম হতে পারেন, সেটা মাইলি সাইরাসকে না দেখলে বোঝা বড়ই মুশকিল। গান আর অভিনয় ছিল তার রক্তের ভেতর। আর লেখালেখির গুণ পেয়েছেন ঐশ্বরিকভাবে। তার বাবা বিখ্যাত কাউন্টি গায়ক বিলি রে সাইরাস। মা টিশ সাইরাস অভিনেতা এবং প্রযোজক। দাদা ছিলেন খ্যাতিমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমন পরিবারের মেয়ের পক্ষেই তো নিজ কমর্গুণে বিশ্বজোড়া খ্যাতির মুকুট মাথায় তুলে নেয়াটা মানায়।