অ¤øান অমলিন মেহজাবিন

না, কোনোরকম গুঞ্জন-গুজব নেই, নেই বিয়ে কিংবা প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে কোনো রসায়ন। অন্যদের মতো হুটহাট সিদ্ধান্ত বদল করার পক্ষেও তিনি নেই। নেই চলচ্চিত্র কিংবা টিভি উপস্থাপনার ঝেঁাকও। বছরে দুয়েকটা বিজ্ঞাপনচিত্র ছাড়া ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একমনে কেবল নাটকেই অভিনয় করে যাচ্ছেন তিনি। ঠিক যেন বহতা নদীর মতো নিজস্ব গতিতে ছুটে চলছেন এই লাক্সসুন্দরী। চলতে চলতে এরইমধ্যে নিজেকে বেশ বড়সড় একটা প্লাটফমের্ নিয়ে গেছেন তিনি। মেহজাবিন চৌধুরী যেন বতর্মান টিভি নাটকের অপরিহাযর্ একটি নাম। লিখেছেন মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মেহজাবিন চৌধুরী
সাদামাটা, মিষ্টভাষী মেহজাবিন কেবল হাস্যোজ্জ্বল মুখচ্ছবি দিয়ে নয়, সাবলীল আর অনবদ্য অভিনয় দিয়েই দশের্কর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন। নিজস্ব যোগ্যতা-দক্ষতার মাধ্যমেই নিমার্তাদের আগ্রহের তালিকার শীষের্ অবস্থান করছেন তিনি। নিমার্তারাই বলেন, তার অভিনয়ে নাকি আলাদা মুগ্ধতা আছে। এ কারণে খুব সহজেই দশের্কর মনে স্থান করে নিতে পেরেছেন মেহজাবিন।। বছর দুই আগে প্রচারিত ‘বড় ছেলে’ নাটকে তার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হননি এমন দশর্ক হয়তো খুঁজে পাওয়া কঠিন। গেল বছরেও অভিনয়ের সুভাষ ছড়িয়েছেন ‘বুকের বা পাশে’, ‘ঘুরে দঁাড়ানোর গল্প’, ‘বাবা আসবে’ নাটকের মতো অনেক নাটকে। সব মিলিয়ে ছোটপদার্য় গত বছরটা বেশ ভালোই কেটেছে তার। এ বছরও সেভাবেই ভালো কাজ দিয়ে আলোচনায় থাকতে চান তিনি। সম্প্রতি কাজও শুরু করেছেন নতুন বছরে। নতুন বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ক্যামেরার সামনে দঁাড়ান দশর্কপ্রিয় এ অভিনেত্রী। সজীব মাহমুদের নিদের্শনায় একটি খÐ নাটকের শুটিং দিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু করেন তিনি। এটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ। এদিকে আসছে ভালোবাসা দিবসের জন্য ‘এই শহরে ভালোবাসা নেই’ শিরোনামের একটি নাটকেও অভিনয় করলেন মেহজাবীন। এটিতে তিনি জুটি বেঁধেছেন আফরান নিশোর সঙ্গে। এভাবেই নতুন বছরে তার ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। গত বছরের মতো নতুন বছর নিয়েও তার প্রত্যাশা অনেক। মেহজাবিন বলেন, গেল বছরে আমি বেশ কিছু ডিফরেন্ট চরিত্রে অভিনয় করেছি। সেই চরিত্রগুলোতে আমি নিজেকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছি। গেল বছরের চেয়ে তাই নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা একটু বেশি। আমি আশা করব নিমার্তারা আমাকে নিয়ে একটু ভাববেন। আমি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি একজন নিমার্তা একজন শিল্পীকে দশের্কর কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন। আমি আমার পরিচালকদের কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছি, গেল বছরে আমাকে নানা রকম চরিত্রে অভিনয় করানোর জন্য। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অভিনয়ে আসেন মেহজাবিন। তার অভিনীত প্রথম নাটক ছিল ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘তুমি থাকো সিন্ধুপারে’। এ নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহফুজ আহমেদ। ২০১৭-এ মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় বড় ছেলে’তে অভিনয় করে আরেক ধাপ এগিয়ে যান এই অভিনেত্রী। তার ও অপূবর্র অভিনয় দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়। গল্পের প্রয়োজনে নানা চরিত্রেই অভিনয় করতে হয়। এক চরিত্র থেকে বের হয়ে অন্য একটি চরিত্রে প্রবেশ করতে গিয়ে কখনও কি বাধা দিয়েছে আগের চরিত্রটি? এমন প্রশ্নের জবাবে মেহজাবিন বলেন, এরকম অনেক চরিত্রই থাকে যেগুলো করতে গিয়ে মনে হয়, এটা তো আমার ব্যক্তিগত গল্পের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। শুধু যে চরিত্র তাই নয়। অনেক সময় স্ক্রিপ্টের সংলাপ মিলে যায়। নাটকের নাম ঠিক মনে পড়ছে না। কিন্তু অনেক ভালোবাসার গল্পে অভিনয় করতে গিয়ে দেখলাম সংলাপ, দৃশ্য মিলে যাচ্ছে আমার সঙ্গে। এটা শুধু আমি না। আমার মনে হয় প্রায় সব মানুষই সম্পকের্র জায়গা থেকে নাটকগুলো দেখার পর মনে করেছে। আহ্ এটা তো আমার জীবনের সঙ্গে মিলে গেল। নতুন বছরে চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে টিভি নাটকের শুটিং শুরু করেছেন নিমার্তারা। এটিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন বলে জানালেন এই গø্যামারকন্যা। তার মতে, চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে নাটকের শুটিং হলে নিমার্তা-শিল্পী সবার জন্য ভালো। কোনো একটি সমস্যা হলে সেটির সঠিক সমাধান করা যায়। নতুন বছরে নিমার্তাদের সময়ের দিকেও গুরুত্ব দেয়ার আহŸান জানান, মেহজাবিন। অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় মেহজাবিন চৌধুরী। প্রথম বিজ্ঞাপনে মডেল হন আবিদ মল্লিকের নিদের্শনায়। এর পর আদনান আল রাজীবের নিদের্শনায় ‘বাংলা লিংক’, ‘সেভেন আপ’, ‘ভাটিকা’, ‘ম্যাগি’, ‘ওমেরা এলপিজি গ্যাস’, ‘ড্যানিস টি’, ‘প্রাণ চুইংগাম’, ‘গø্যাক্সেজ-ডি’ ইত্যাদি বিজ্ঞাপনে মডেল হন। সম্প্রতি বিগ বাজেটের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন তিনি। ‘উজালা পেইন্টস’র একটি বিজ্ঞাপনে একেবারেই নতুনরূপে হাজির হয়েছেন। এর শুটিং হয়েছে ভারতের গোয়ায়। দীঘির্দন ধরে ছোটপদার্য় সফলতার সঙ্গে অভিনয় করলেও চলচ্চিত্রে দেখা নেই মেহজাবিনের। সুদশর্ন এই অভিনেত্রী কেনই বা রুপালিপদার্য় অনুস্থিত! টিভি নাটকের অনেকেই নিজেকে চলচ্চিত্রে জড়ালেও ক্যারিয়ারে এখনো দেখা যায়নি তাকে। উত্তরে মেহজাবিন বলেন, ‘প্রত্যেকটা অভিনয় শিল্পীরই একটা স্বপ্ন থাকে চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছে বরাবরই ছিল। তবে এমন কোনো চিত্রনাট্য দিয়ে শুরু করতে চাই, যা দশর্কদের মনে গেঁথে থাকবে। নাটক বাছাইয়ের সময়েও তেমনটাই আমি খেয়াল রাখি। বড়পদার্র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভালো কোনো চিত্রনাট্য পেলে এ বছর দশর্করা আমাকে বড়পদার্য় দেখতে পারবেন আশা করি।’ নাচেও সরব মেহজাবিন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ করেন। নাচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখনও নাচ শিখছি। সবাই কিছু না কিছু একটা আলাদাভাবে করে। আমি আমার অভিনয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে নাচ শিখি এবং নাচি। অনেকেই অনেক কিছু করে মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার জন্য। নাচ আমার এমনই একটি কাজ, যে কাজটি করলে আমি মানসিকভাবে শান্তি পাই। আর যেখানে আমি নাচি বিশেষ করে নাচের স্টেজে যখন আমি উঠি, তখন আমি অন্যরকম একটা অনুভ‚তি পাই। এতগুলো মানুষের সামনে আমাকে নাচতে হবে। আমার নাচ সবাই দেখছে, এই যে একটা ভালো লাগা, এটা আসলে বলে বোঝানোর মতো আমার কাছে কোনো ভাষা নেই। নাচটা আমি সারাজীবন করে যেতে চাই।’ গেল বছরের শেষের দিকে মিডিয়া পাড়ায় বিয়ের ধুম পড়েছে। তার রেশ ধরে গুঞ্জন রয়েছে নতুন বছরে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন মেহজাবিন। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন আমার কাজে বেশ মনোযোগী। নতুন বছরেও ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। পরিবার থেকে বিয়ের জন্য কোনো চাপ প্রয়োগ করে না। আমি যখন চাইবো তখন বিয়ে হবে। আমি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হলেই বিয়েটা করব। কখন বিয়ে করব তার সঠিক তারিখ বলতে পারছি না এখন।