তিশমার প্রত্যাবতর্ন

‘আমি আমার মতো করে গান তৈরি করে যাচ্ছি। এ অ্যালবামে কয়েকটি গান নিরীক্ষাধমীর্। যখন মনে করছি, গান প্রকাশের সময় হয়েছে, তখন তা শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি। দুই বছর ধরে নতুন অ্যালবামের গানগুলো তৈরি করেছি। আস্তে আস্তে তা শ্রোতাদের হাতে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করেছি। এখন প্রতি সপ্তাহে অ্যালবামের একটি করে গান প্রকাশের ইচ্ছা আছে।’

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা রিপোটর্
তিশমা
অনেকদিন ধরেই গানের সঙ্গে বসবা তার। শুরুটা জমজমাট হলেও মাঝখানে রহস্যজনক কারণে গান থেকে অনেক দূরে চলে যান এই তরুণ পপতারকা। বছরের শেষ দিনে যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন রক ঘরানার এই গায়িকা। ১২টি গান নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হন তিনি। রক গায়িকা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তিশমা নতুন অ্যালবামের প্রথম গানটি রক ধঁাচের। ‘ফায়ার অ্যান্ড আইস’ নামের এই গানটি তার নিজের লেখা এবং সুর করা। তিশমা বলেন, ‘আমি আমার মতো করে গান তৈরি করে যাচ্ছি। এ অ্যালবামে কয়েকটি গান নিরীক্ষাধমীর্। যখন মনে করছি, গান প্রকাশের সময় হয়েছে, তখন তা শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি। দুই বছর ধরে নতুন অ্যালবামের গানগুলো তৈরি করেছি। আস্তে আস্তে তা শ্রোতাদের হাতে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করেছি। এখন প্রতি সপ্তাহে অ্যালবামের একটি করে গান প্রকাশের ইচ্ছা আছে।’ তিশমা গত কয়েক বছর ধরেই অনলাইনে নিজের অ্যালবাম, গান ও মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করে আসছেন। এই সময়ে বেশ কিছু অডিও কোম্পানি থেকে প্রস্তাব ছিল তিশমার নতুন গান প্রকাশে। কিন্তু সম্মানের সঙ্গে সে সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কারণ গানের স্বত্ব পুরোপুরি দিয়ে আর গান প্রকাশ করতে চান না তিনি। এ বিষয়ে তিশমা বলেন, আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। আমি নিজের গানের স্বত্ব নিজের কাছেই রাখতে চাই। কোনো কোম্পানিকে দিতে চাই না। গত কয়েক বছর ধরেই গান ও অ্যালবাম প্রকাশের প্রচুর প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ, আমি নিজের গান বিলিয়ে দিতে চাই না। অনেক কষ্ট করে একেকটি গান তৈরি হয়। তাই নিজে সে গানগুলো অনলাইনে প্রকাশ করাটাকে আমি সঠিক বলে মনে করি। সামনেও এভাবেই গান প্রকাশ করে যাবো আমি। আশা করছি সবাই বিষয়টি বুঝবেন। এদিকে তিশমা বতর্মানে ব্যস্ত সময় পার করছেন গান নিয়ে। প্রায় প্রতিদিনই নিজের স্টুডিওতে নতুন সব গানের কাজ করছেন তিনি। এরই মধ্যে কয়েকটি নতুন গানের ট্র্যাক তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে তিশমা বলেন, আসলে কাজ জমা পড়ে আছে অনেক। নতুন অ্যালবামের কাজ করছি। সেগুলোর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। চলতি বছরে নিদির্ষ্ট সময় পর পর এ অ্যালবামের গান প্রকাশ করব। এ ছাড়া আগের অ্যালবামের কিছু ভিডিওর কাজও করছি। সেই গানের শুটিং নিয়েও যাচ্ছে ব্যস্ততা। ২০১৬ সালে ‘রয়্যালটি’ নামে তিশমার সবের্শষ একক গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। প্রাশ্চাত্য ধারার গায়কী ও মেকআপ-গেটআপের জন্য সংগীতপ্রেমীদের কাছে তিশমার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে অনেক আগেই। দীঘির্দন তিনি লন্ডন থেকে ঢাকায় যাওয়া-আসার মধ্যেই ছিলেন। যে কারণে অনেক কষ্ট করেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে। তবে তিশমা এখন ঢাকাতেই স্থায়ী হয়েছেন। গান নিয়ে তার আকাশছেঁায়া স্বপ্ন রয়েছে। মানুষ তো কত কিছুই হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তবে যারা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন, তাদের ওপর অবশ্যই বিধাতার কৃপা থাকে। সৃষ্টিকতার্র আশীবাের্দই তিশমা আজ সংগীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। তিশমা বছরের অধের্কটা সময় দেশের বাইরে একাধিক স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। মূলত দেশের বাইরে পারফমর্ করা এবং সংগীতের চচার্ নিয়ে নিজের মতো করে কিছু সময় কাটানোর জন্যই মাঝে খানিকটা বিরতি নিয়েছিলেন তিশমা। এ প্রসঙ্গে তিশমা জানান, ‘বছরের অধের্কটা সময় আমাকে দেশের বাইরে স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ বছরের শুরুতেও আমি ভারত, কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং ইউরোপের একাধিক দেশে কনসাটর্ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’ তিশমা তার শৈশবে বেশির ভাগ সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাটিয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যে। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। মাত্র চার বছর বয়সে পিয়ানো বাজানো শিখেছেন তিনি। এরপর তিনি ইউরোপিয়ান উচ্চাঙ্গসংগীত এবং সংগীত তত্তে¡র ওপর পড়ালেখা করেন। এ ছাড়া ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীতের ওপর ওস্তাদ সঞ্জীব দে, আক্তার সাদমানী এবং শম্পা রেজাসহ আরও অনেকের কাছ থেকে তালিম নেন তিনি। শুধু ক্ল্যাসিকাল মিউজিকই নয়, তিশমা রবীন্দ্রসংগীত এবং নজরুল সংগীত ও লোকগীতির তালিমও নিয়েছেন। এমনকি তার বেশির ভাগ অ্যালবাম প্রকাশ হয় যখন তিনি একজন স্কুলের ছাত্রী। তা ছাড়া গানের পাশাপাশি তিনি পড়ালেখাতেও রেকডর্ ফলাফল অজর্ন করেন। ও লেভেলে ১০টি এ এবং এ লেভেলে ৫টি এ অজর্ন করেন। এ প্রসঙ্গে তিশমা বলেন, ‘আমি মূলত পড়াশোনার পাশাপাশি গান চালিয়ে যাচ্ছি। ফ্যামিলি থেকেও আমার পড়াশোনা নিয়ে সব সময় চাপে থাকি। এরপর বাকি সময়টা গান নিয়ে ব্যস্ত হই।’ তিশমার উল্লেখযোগ্য অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- তারা (২০০২), ছলনার দাবা (২০০৭), মাটির পুতুল (২০০৬), শাম রাখি না কুল রাখি (২০০৬), বাউলা প্রেম (২০০৫), এক্স-ফ্যাক্টর (২০০৮), এক্সপেরিমেন্ট (২০১১) জোজো-রিলোডেড (২০১২) ইত্যাদি। এ ছাড়া ভিডিও অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- ২০১৩-দ্য রক প্রিন্সেস-এক্সপোজড (প্রামাণ্য চিত্র, ২০১৪ সালে প্রকাশিতব্য), প্রজাপতি (২০১০), রক রাজকন্যা (২০০৯), চঁাদের মেয়ে জোসনা (২০০৮) প্রভৃতি।