সা ক্ষা ৎ কা র

টিভি নাটকের নতুন বরপুত্র

কয়েক বছর ধরে টিভি নাটকে আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। অনবদ্য অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে চলেছেন দর্শক হৃদয় থেকে হৃদয়ে। যাত্রার শুরুটা সুখকর না হলেও ধীরে ধীরে ছোটপর্দায় নিজের জায়াগা পাকাপোক্ত করেছেন তিনি। একটা সময় তার বিপরীতে অনেকের আপত্তি থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন তারকাদের একজন। সময়ের আলোচিত নায়িকারা এখন তার সঙ্গে পর্দায় জুটি বাঁধছেন। নির্মাতাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছেন ফারহান। বছর জুড়েই গল্পনির্ভর নাটকে তার আধিপত্য। বিশেষ করে বিশেষ দিবসের নাটকে তার শিডিউল পাওয়া দায়। সম্প্রতি তারার মেলার মুখোমুখি হয়েছিলেন এই অভিনেতা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মুশফিক আর ফারহান
কোন নাটক দিয়ে বছর শুরু করলেন? বছর শুরু জাকারিয়া সৌখিনের 'মায়া' নাটক দিয়ে। এর শুটিং হয়েছে ৩ জানুয়ারি পুরান ঢাকায়। শুটিং পুরান ঢাকায় হলেও গল্পটা কিন্তু পুরান ঢাকার নয়। গল্পের আবহ ও দৃশ্যায়নের জন্য এমন জায়গার প্রয়োজন ছিল। নাটকটি গল্পনির্ভর। এতে আমার সহশিল্পী কেয়া পায়েল। হাতে নিশ্চয়ই অনেক কাজ রয়েছে? অনেক নয়, তবে অনেক কাজের প্রস্তাব আসে। আমি বরাবরই কম কাজ করি। কম কাজেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। অনেক গল্প থেকে বাছাই করে মানসম্মত নাটকগুলোতে নিজেকে উপস্থাপন করি। এই মুহূর্তে ভালোবাসা দিবসের ৭টি নাটকের কাজ হাতে রয়েছে। ভালোবাসা দিবসের প্রচুর কাজের প্রস্তাব এসেছিল। প্রায় ৭শ' নাটকের। সেখান থেকে ৭টি নাটকের চিত্রনাট্য আমার ভালো লেগেছে। একক নাটকে নিয়মিত থাকলেও ধারাবাহিকে নেই কেন? আমি ধারাবাহিক নাটক করি না। একক নাটকেই অভিনয় করতে আমার ভালো লাগে। ধারাবাহিকে একই গল্পের একটি চরিত্র নিয়ে লম্বা সময় চলতে হয়। চরিত্র ভাঙার কোনো সুযোগ থাকে না। আর একক নাটকে একেক গল্পে একেক চরিত্র। নিজেকে বারবার ভাঙার সুযোগ থাকে অনেক। চরিত্রে বৈচিত্র্য পাওয়া যায়। ধারাবাহিক নাটক দেখা হয়? যেহেতু আমি অভিনয়ের মানুষ, তাই নাটক তো দেখতেই হয়। শুটিং না থাকলে নাটক দেখি। নিজের ও অন্যের নাটকও দেখা হয়। তবে ধারাবাহিক দেখা হয় না। একক নাটকই দেখা হয়। নিজের নাটকে ভুল ধরার চেষ্টা করি আর অন্যের নাটক দেখে সিনিয়রদের থেকে অভিনয় শিখি। চরিত্রের বৈচিত্র্যকে কতটা গুরুত্ব দেন? আমি সব সময়ই গল্পনির্ভর বৈচিত্র্যময় চরিত্রে আগ্রহী। একঘেয়েমি চরিত্র আমার ভালোলাগে না। ভালো লাগে ব্যতিক্রম সব চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপনের অদম্য চেষ্টায় ডুবে থাকতে। সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং চরিত্রকে প্রাধান্য দিই। ১০টি সহজ চরিত্রের চেয়ে একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ ধরনের চরিত্রের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হলেও একটা আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাই। কষ্টের মাধ্যমে অর্জিত জিনিসের আলাদা কদর থাকে। আজকের অবস্থানে আসতে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে? খুব সহজেই আজকের এই অবস্থানে আসা হয়নি। এর জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ২০১৭ সালে মাবরুর রশিদ বান্নাহর 'তিন মাসে গল্প' নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে আসা। আমার কোনোরকম পস্ন্যাটফরম ছিল না। অন্যের সহযোগিতা, তদবিরও ছিল না। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এতদূর আসতে পেরেছি একমাত্র সৃষ্টিকর্তার করুণায়। অনেক ধর্য ধরেছি, পরিশ্রম করেছি, ভেঙে না পড়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। তবে দর্শক আমার অভিনয় পছন্দ করেন, ভালোবাসেন বলেই এতদূর আসতে পেরেছি। এছাড়া নির্মাতাদের কাছেও কৃতজ্ঞ আমার ওপর তাদের আস্থা রাখার জন্য। \হ এখনকার নাটক নিয়ে তো অনেক অভিযোগ। আপনার মন্তব্য কি? এক সময় ভালো নাটক হতো এখন হয় না বলে অনেকের অভিযোগ। আসলে এখন প্রচুর নাটক হচ্ছে। এর মধ্যে ভালো-মন্দ দুটোই আছে। সময়ের সঙ্গে নাটকের গল্পেও পরিবর্তন এসেছে। সেই গল্পটাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। স্বর্ণ বিক্রির জায়গা যেমন কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার নয়, তেমনই মোবাইলে আপলোড প্রচুর ভিউ হওয়া ছোটছোট ভিডিওতে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পীকে দেখা যায় না। সবকিছুর একা ক্লাস আছে। ভালো জিনিস সব সময় ভালোই থাকে। দর্শকও তা গ্রহণ করেন। আর দর্শক একই ঘরানার নাটক দর্শক দেখতে পছন্দ করেন না। একটা সময় কমেডি নাটক খুব চলেছে। কমেডি নাটক কমে এখন সিরিয়াস গল্পের অনেক নাটক হচ্ছে। কমেডি, সিরিয়াস সব ধরনের গল্পই চান দর্শক। সিনেপর্দা নিয়ে কোনো ভাবনা আছে কি? সিনেপর্দায় আসার কোনো তাড়াও নেই। সত্যি বলতে, আমার নায়ক হওয়ার ইচ্ছে নেই। তবে সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে আছে। সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, তবে সব দিক না মেলায় এখনো করা হয়নি। নাটকে যেমন আমি একজন শিল্পী, সিনেমায়ও সেটাই থাকতে চাই। আমি শুধু বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করতে চাই; সেটা যেমনই হোক, যদি আমাকে প্রভাবিত করতে পারে, আমি সেটা করব।