অলরাউন্ডার সাফা কবির

‘অবশ্যই চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছে আছে। যখন মনের মত গল্প পাব এবং অনেক মেধাবী, গুণী একজন পরিচালকের নিদের্শনায় কাজ করার সুযোগ মিলবে, তখনই চলচ্চিত্রে কাজ করব। তবে গল্পটা হতে হবে একেবারেই নতুন। চাই চরিত্রনিভর্র ভিন্নধারার একটি চলচ্চিত্র।’

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা রিপোটর্
সাফা কবির
একাধারে তিনি মডেল, অভিনেত্রী এবং উপস্থাপক। তবে মডেল কিংবা উপস্থাপক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে রাজি নন। যদিও মডেলিং দিয়েই আলোচনায় আসেন তিনি। কিন্তু অভিনয়কে ঘিরেই তার সব ধ্যান-জ্ঞান। হোক সেটা চলচ্চিত্র, নাটক কিংবা ওয়েব সিরিজ। পুরো মাসজুড়েই ব্যস্ততা থাকত তার। হ্যঁা, সাফা সাফা কবিরের কথাই বলা হচ্ছে। ছোটপদার্য় তিনি এখন অনেকটাই পরিচিত মুখ। গত বছর অনেকগুলো নাটক, স্বল্পদৈঘর্্য চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজ, গান ভিডিওতে কাজ করে নিজেকে পরিণত অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। বলা যায়, অনেকখানি সফলও হয়েছেন। অভিনয়ের ফঁাকে ফঁাকে মডেলিং ও উপস্থাপনা করেছেন। আলাপনের শুরুতেই প্রশ্ন তোলা হয়, ২০১৮ সাল কেমন গেল? জবাবে অনেকটা সাফল্যের হাসি হেসে সাফা কবির বললে, ‘‘অনেক কিছুর সাক্ষী ছিল গত বছর। এক কথায়, গত বছর আমি নিজেকে অনেকখানি ভেঙেছি। তাই কাজের দিক থেকে ২০১৮ সাল আমার জন্য ছিল খুব সাফল্যের বছর। কাজের অভিজ্ঞতাও খুব ভালো ছিল। কয়েকটি নতুন নতুন চরিত্রে কাজ করেছি। আগে গ্রামের মেয়ের চরিত্রে কখনো কাজ করিনি। কিন্তু গত বছর করেছি। ওই চরিত্র দিয়ে আমি পরীক্ষা করতে পেরেছি। বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রচার হওয়া কাজী সাইফ পরিচালিত ‘পতাকা’ নামে একটি নাটকে কাজ করেছিলাম। সেখানে আমার চরিত্র ছিল একেবারেই আলাদা। ভিকি জাহেদের পরিচালনায় ওয়েব সিরিজ ‘বাঘবন্দী’-তে কাজ করেছিলাম। ওটা ছিল আমার অভিনীত প্রথম ওয়েব সিরিজ। একেবারেই ভিন্ন চরিত্র। স্বল্পদৈঘর্্য চলচ্চিত্রেও কাজ করেছি। এমন আরও অনেক নতুন নতুন চরিত্রে কাজ করেছি যেগুলোর নাম মনে আসছে না।’’ দেশীয় শোবিজ অঙ্গনে গতবছরই ওয়েব সিরিজ নিমাের্ণর ধুম পড়ে যায়। পিছিয়ে ছিলেন না সাফাও। ওয়েব সিরিজের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলতেই সাফা জানালেন, ‘বাঘবন্দী’, উষ্ণের আত্মহত্যা এই দুটো ওয়েব সিরিজ অনেক আগেই করেছি। আমি যখন কাজ করেছি, তখন সেভাবে কেউ ওয়েব সিরিজ করত না, এখন যেভাবে করছে। এই দুটো ওয়েব সিরিজ খুবই ভালো গেছে। নাটক, ওয়েব সিরিজ, স্বল্পদৈঘর্্য যাই হোক; ইউটিউবে যা আছে সেখান থেকে ভালো সাড়া পাই। টিভিতে যখন নাটক প্রচার হয় তখন বুঝি না ক’জন দেখছে। কিন্তু ইউটিউবে যখন আসে, তখন বুঝতে পারি কজন দেখল, কতজন পছন্দ করল, অপছন্দ করল, কিংবা কে কি বলল? এ কারণে ইউটিউবে কোনো কাজ এলে আমি বেশি সাড়া পাই। উপস্থাপনা নিয়ে সাফা কবীর বলেন, ‘আমি কিন্তু নিয়মিত উপস্থপনা করি না। এর আগে দুটো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছি। একটি ছিল শিশুদের, অন্যটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার। এ বছরের প্রথম দিনেই নতুন একটি কাজ করেছি উপস্থাপনায়। অনুষ্ঠানের নাম ‘তীর লিটিল শেফ’। এখানে ছোট ছোট বাচ্চারা মজার মজার রান্না করে। বেশ গোছানো এবং মজার একটি অনুষ্ঠান।’ নাটকের চলমান অবস্থা নিয়ে সাফা বললেন, ‘সমস্যা হলো, টিভি নাটকের চেয়ে অনলাইনে কাজের বাজেট বেশি থাকছে, সাড়াও বেশি আসছে। টিভির বাজেট ঠিক না থাকলে কিছু করার নেই। এ কারণে অনলাইনের নাটকগুলোতে বেশি আগ্রহ আমার। তবে ধারাবাহিক নাটকে কাজ করতে ভালো লাগে না। যা করেছি দুবছর আগে। শুরুতে গল্প একভাবে শুরু হয়। কিছুদিন পর গল্প পরিবতর্ন হয়ে যায়। সবকিছু মিলিয়ে ধারাবাহিক নাটকে কোনোকিছুই ভালো লাগে না আমার।’ অভিনয়ের পাশাপাশি এবিসি রেডিওতে সপ্তাহের প্রতি শনিবার রাত ৯টা থেকে ১১টা পযর্ন্ত ‘লাভ স্ট্রাক বাই সাফা কবির’ নামের একটি অনুষ্ঠানে জকি হিসেবে কাজ করছেন সাফা কবির। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খুব উপভোগ করছি। আমি মনে করি, যত কাজ করব, ততো মানুষ পযর্ন্ত পৌঁছাবে। ভক্তরাও চায় আমার সঙ্গে যুক্ত হতে। এই কাজের মাধ্যমে সেটা পারছে। তারা আমাকে খুদেবাতার্ পাঠায়। আমার সম্পকের্ জানতে পারছে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। এর মাধ্যমে বুঝতে পারছি দিন দিন আমার কাজের দশর্ক বাড়ছে। সবশেষে সাফা জানালেন, চলতি বছরের তার কিছু পরিকল্পনার কথা। বললেন, ‘নতুন বছরটি আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। বছরটি নিয়ে আমার মনের অনেক পরিকল্পনা আছে। এ বছরে নিজেকে আরও ভাঙতে চাই। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের একটা সম্ভাবনা আছে। অবশ্যই চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছে আছে। যখন মনের মত গল্প পাব এবং অনেক মেধাবী, গুণী একজন পরিচালকের নিদের্শনায় কাজ করার সুযোগ মিলবে, তখনই চলচ্চিত্রে কাজ করব। তবে গল্পটা হতে হবে একেবারেই নতুন। চাই চরিত্রনিভর্র ভিন্নধারার চলচ্চিত্র।’