রুনা খান

গল্পের নায়িকা আমি

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা রিপোটর্
রুনা খান
শুরুটা মঞ্চ নাটক দিয়ে। তারপর টেলিভিশন মিডিয়া। এরপর ধীরে ধীরে টিভি নাটকে শক্ত একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন রুনা খান। মাঝে মাঝে চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও ধারবাহিক নাটক নিয়েই বেশি ব্যস্ত এই অভিনেত্রী। সবাই যেখানে ধারাবাহিক নাটক থেকে বেরিয়ে আসার পথ খঁুজছেন, রুনা খান সেখানে একের পর এক নাটকে কাজ করছেন। এ কারণে অনেকেই তাকে ‘ধারাবাহিক কন্যা’ বলেও মন্তব্য করছেন। নাটকে এবং সিনেমায় চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে শুধু দশের্কর কাছেই নয়, সহকমীের্দর কাছেও রুনা খানের এক অন্যরকম গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। নাটক এবং চলচ্চিত্র নিমার্তারাও তাকে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলোতেই নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন সবসময়। রুনা খান নিজেকে একজন ভাসের্টাইল অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করেছেন বলেই দশর্ক, সহকমীর্ ও নিমার্তাদের মধ্যে তাকে ঘিরে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। সহকমীের্দর কেউ কেউ বলেন, রুনা খান শক্তিশালী একজন অভিনেত্রী। অভিনয়ের সময় তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানেন। এই গুণটা সবার থাকে না। নতুন একটি ধারাবাহিক দিয়েই ২০১৯ শুরু হয় ভাসের্টাইল অভিনেত্রী রুনা খানের। ধারাবাহিকের নাম ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’। মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত এই নাটকের শুটিং শুরু হয়েছে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে। নতুন এ ধারাবাহিক নিয়ে রুনা খান বলেন, ‘গত মাসেই এই নাটকের সিডিউল দেয়া ছিল, তাই পরিবারের এমন সমস্যার মধ্যেও আমার স্বামীও আমাকে বলেছেন কাজটি করতে। আমার কাছে সবসময়ই আমার পরিবারের শান্তিটা আগে। তাই পরিবারের ভালো মন্দটাই আমি প্রাধান্য দেই সবার আগে, সবসময়। রাজের নিদের্শনায় এর আগে আমার কাজ করা হয়ে উঠেনি। রাজ নিঃসন্দেহে একজন ভালো নিমার্তা। আশা করছি, তার সঙ্গে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই হবে।’ রুনা খান জানালেন, বতর্মানে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকেরও কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। নাটকগুলো হচ্ছে অনিমেষ আইচের ‘জোছনাময়ী’, ‘গুড ব্যাড আগলি’, অঞ্জন আইচের ‘থ্রি মেড’, যুবরাজ খানের ‘ব’তে বন্ধু’, আল হাজেনের ‘সুখের ভেতর অসুখ’, জুয়েল শরীফের ‘আলিবের অষ্টখÐ’। এ ছাড়াও তিনি জুয়েল হাসানের দুটি খÐ নাটক ‘বৌ ভাগ’ ও ‘বাবার বাদশা’তে অভিনয় করেছেন। গুণী এই অভিনেত্রী এরই মধ্যে জনসচেতনতামূলক একটি তথ্যচিত্রে কাজ করেছেন। বিদেশগামী যাত্রীরা যেন সঠিকভাবে বিদেশ যাওয়ার সব পন্থা জেনে বিদেশ যান সেই বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আর এই তথ্যচিত্রেই অভিনয় করেছেন রুনা খান। এটি নিমার্ণ করেছেন ফারুক আহমেদ টিটু। গত বছরের একেবারে শেষপ্রান্তে তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘হালদা’ এবং বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত ‘গহীন বালুচর’ সিনেমা দুটি মুক্তি পায়। দুটি সিনেমায় রুনা খানের অনবদ্য অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। নাটকের পাশাপাশি মডেলিংয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। বিজ্ঞাপন চিত্রের কাজের ব্যাপারে রুনা খান বলেন, ‘একজন অভিনয়শিল্পী তো বসে থাকতে চায় না কখনোই। আমিও শুরু থেকে নিজস্ব পরিমÐলে সমানভাবে কাজ করছি। নাটক থেকে বিজ্ঞাপনে কাজ করার ক্ষেত্রে আমি একটু সচেতন থাকি। কারণ নাটক একবারই প্রচার হয়। আর বিজ্ঞাপন একদিনেই একাধিকবার প্রচার হয়। দশর্ক মনেও রাখে বেশি। কিছু দিন আগে একটি বেসরকারি ব্যাংকের চারটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। কাজের মান ভালো ছিল। তাই দশের্কর কাছ থেকে ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছি। এ সফলতার সূত্র ধরে নতুন কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজের কথাও চলছে এখন। তাহলে কি মডেলিং, টিভি নাটক আর চলচ্চিত্রের ব্যস্ততায় মূল শেকড় মঞ্চনাটককে গুডবাই জানালেন! জবাবে রুনা বলেন, ‘আমি মঞ্চবিমুখ না। অভিনয় না করলেও কিন্তু বিভিন্ন দলের ভালো কিছু নাটক দেখি নিয়মিতভাবেই। মঞ্চে কাজ করতে হলে প্রচুর সময় দিতে হয়। যেটা এ মুহূতের্ আমার পক্ষে বের করা সম্ভব নয়। সবের্শষ নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের হয়ে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ নাটকটিতে অভিনয় করেছিলাম। মঞ্চের জন্য মন কঁাদে সবসময়। ভবিষ্যতে আবার মঞ্চে কাজ করার ইচ্ছে আছে।’ চলচ্চিত্র নিয়ে রুনার ভাষ্য, আমি গতানুগতিক নায়িকার চরিত্রের মধ্যে নিজেকে রাখতে চাই না। বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার ক্ষুধা আমার আছে। সেই দিক থেকে আমি সব সময় চরিত্রটিকে প্রাধান্য দিয়ে আসছি। চরিত্রের প্রয়োজনে যে কারো সঙ্গে আমি জুটি বঁাধতে চাই। এক কথায় বলব, তথাকথিত নায়িকা নয়, আমি গল্পের নায়িকা হতে চাই। তবে সবকিছুর ঊধ্বের্ আমার পরিবার। আমি আমার পরিবারের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছি। তারা যদি আমাকে অভিনয় ছেড়ে দিতে বলেন, তাতেও আমি রাজি।’