ভালোবাসার গল্প

পদার্য় ভালোবাসার গল্পে এক একটি চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে অভিনয়শিল্পীরাও যে বাস্তবজীবনে কখন ভালোবাসাবাসিতে জড়িয়ে যান, তা অনেক সময় নিজেরাও টের পান না। এই ভালোবাসাটা কখনো তার সহ-শিল্পীদের ওপর পড়ে, কখনো বা একদম বাইরের দুনিয়ার মানুষের ওপর। তবে যার ওপরই দুবর্ল হোন না কেন, তারকাদের জীবনেও আসে প্রেম এবং বিয়ের পবর্। সেই পবর্গুলো নিয়ে তাদের ভক্তদের আগ্রহের কমতি নেই। ব্যক্তিগত জীবনের সেই ভালোবাসাবাসির গল্পগুলো তাদের জবানিতে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোÑ

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জাহিদ হাসান ও মৌ
জাহিদ হাসান আমরা দুজন প্রথম কাজ করেছি একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে। ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’ গানের সঙ্গে দুজনেই পারফমর্ করি। আর সে সময়ই অথার্ৎ শুটিংয়ের সময় থেকেই আমাদের দুজনের মনে দুজনের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। হয়তো গানের কথার কারণেই প্রেম একটু দ্রæত জেগে ওঠে। সমস্যা হচ্ছে, আমার শাশুড়ি তখন কিছুতেই আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিতে পারছিলেন না। অনেক যুদ্ধ কওে মৌকে ঘরে তুলেছি। আমি মনে করি, এখনো আমরা ব্যক্তিজীবনে সফল জুটি। আমাদের ভালোবাসায় দুজন দুজনের প্রতি বিশ্বাস, সম্মান, শ্রদ্ধা আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। ভালোবাসা নিয়ে আমার চিন্তা সরলরৈখিক। মানুষের মৌলিক হৃদয়বৃত্তিই ভালোবাসা । ভালোবাসার কোনো শ্রেণি নেই, থাকা উচিত নয়। ভালোবাসার প্রকাশ থাকা উচিত ৩৬৫ দিনই। বিপাশা হায়াৎ যদিও বিষয়টি একান্ত ব্যক্তিগত। শুধু আমার নয়, সবারই উচিত পরিবারের প্রতি সৎ থাকা, সব ধরনের দায়িত্ব পালন করা। পরস্পরের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আর সে থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব। এ বন্ধুত্বের টানেই ঊনিশ বছর আগে ২০০০ সালের ২৩ জুলাই পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই আমরা। দীঘর্ এ দাম্পত্য জীবনে আমাদের সংসার আলো করে এসেছে আদরের দুই সন্তান। ১৯ দেখতে দেখতে কিভাবে যে ঊনিশটি বছর কেটে গেল, টের পেলাম না। মনে হয়, খুব অল্প সময়ের সংসার। যেন চোখের নিমিষেই দিনগুলো কেটে গেছে। তবে এটা ঠিক, সংসার করব বলেই আমরা একসঙ্গে জীবন শুরু করেছিলাম। এখন দুই সন্তানই আমাদের মূল কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি রয়েছে পেশাগত কাজ। শুরু থেকেই সব ব্যাপারে বন্ধুর মতো তৌকীরকে পাশে পেয়েছি। একজন আরেকজনের কাজ নিয়ে গবেষণা করেছি, সমালোচনা করেছি। এ শ্রদ্ধাবোধ আমাদের মধ্যে সবসময় অটুট। বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবার ভালো থাকুক। মৌসুমী ওমরসানীর সঙ্গে আমার প্রথম প্রেমের সূচনা হয় ১৯৯৩ সালে। তখন দোলা নামের একটি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করি আমরা। কাজ করতে করতেই আমরা একে অপরের প্রতি দুবর্ল হয়ে পড়ি। কিন্তু কেউ মুখে বলতে সাহস পায়নি শুরুতে। তারপর ধীরে ধীরে আমরা বুঝতে পারি আমরা পরস্পরের প্রেমে পড়েছি। আমার সুন্দর এই জীবনের জন্য কৃতজ্ঞ আল্লাহর কাছে, আমার বাবা মায়ের কাছে, তারপরই সানীর কাছে। বিশেষ করে আমার বাবার মৃত্যুর পর সানী আমাদের পুরো পরিবাওে যে ভ‚মিকা রেখে আসছে তার কোনো তুলনাই হয় না। পথচলার ২৫ বছর কীভাবে যে পেরিয়ে গেল তা টেরই পাইনি। সিনেমার পদার্য় জুটি হিসেবে আমাদের পথচলার এতটা সময় পেরিয়ে গেছে সেটা আসলে আলাদা করে ভাবার সুযোগও পাইনি। আমাদের দীঘির্দনের এই পথচলায় যে যার যার অবস্থান থেকে আমাদের পাশে ছিলেন আমরা সবার প্রতিই আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমার সংসার জীবনে, শিল্পী জীবনে সুখে-দুঃখে সবসময়ই সানী আমার পাশে ছিল। এটাও একজন মানুষ হিসেবে, শিল্পী হিসেবে আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। মোশাররফ করিম জুঁইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় ২০০০ সালে। সে সময় আমি জুঁইদের বাসার সামনের গলির একটি কোচিং সেন্টারে পড়াতাম। সেই কোচিং সেন্টারেই জুঁইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। তবে পরিচয়টা কিন্তু ভালোলাগা কিংবা ভালোবাসা কোনো অবস্থানেই ছিল না। কারণ জুঁইয়ের সঙ্গে প্রথম পরিচয় আমার ছাত্রী হিসেবেই। এইচএসসি পাস করার পর জুঁই আমার সঙ্গে একই কোচিং সেন্টারে পড়ানো শুরু করে। আমার ভালোলাগাটা তখন থেকেই শুরু। আমিই প্রথম প্রস্তাব দেই। জুঁই তা ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু কী মনে কওে যেন পরে আবার রাজি হয়। প্রেম চলতে থাকে। জানাজানি হলে আমার বাড়ি বরিশাল হওয়ায় ওর পরিবার প্রথমে রাজি হয় না। কিছুদিন পর রাজি হয়। বিয়েতে আমরা এখনো আগের মতোই সুখী। এখনো আমরা দুজন দুজনকে আগের মতোই ভালোবাসি।’ নাঈম তখন ১৯৯০। প্রয়াত বরেণ্য চলচ্চিত্র নিমার্তা এহতেশাম তার নতুন চলচ্চিত্র ‘চঁাদনী’র জন্য দুজন নতুন মুখ বাছাই করেন। নবাব পরিবারের ছেলে নাঈম আর বিক্রমপুরের মেয়ে আমি। প্রথম ছবিতেই জুটি হিসেবে ব্যাপক সাড়া ফেলি আমরা। এর পর আমরা একসঙ্গে পরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করি। অভিনয় করতে গিয়েই ঘনিষ্ঠ হই পরপস্পরে। ধীরে ধীরে মিডিয়াও জেনে ফেলে আমাদের মধ্যকার প্রেম ভালোবাসার খবর। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনা ভেঙে ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর আমরা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বতর্মানে ঘরে রয়েছে দুই কন্যা সন্তান। বতর্মানে ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় চলচ্চিত্রে সময় দিতে পারছি না। যেটুকু সময় পাই, সেটুকু সময় সংসারে দিই। কারণ, আমার সংসারই আমার পৃথিবী। স্ত্রী সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর মতো সুখ আর পৃথিবীতে আছে কী! সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা সবসময় ভালো থাকি, সুস্থ থাকি। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। রিয়াজ টিনার সঙ্গে আমার পরিচয় কাজের সূত্র ধরেই। নাচের এক অনুষ্ঠানে। আমরা একসঙ্গে পারফমর্ করেছিলাম। সেখান থেকে পরিচয়, অুঃপর প্রেম। প্রেমের প্রকাশ আসলে কোন দিক থেকে আগে হয়েছিল, এটা বলা মুশকিল। আমার তো মনে হয়, আমরা দুজন দুভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি একে অপরকে ভালোবাসি। যেহেতু প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম দুজনেই, তাই প্রকাশ করার তাগিদ ছিল দুজনারই। আমাদের সময়টাতে এখনকার মতো এত ব্যাপকভাবে ভালোবাসা দিবস পালন হতো না। আর আমরা কাজের ব্যস্ততায় পালন করার সুযোগও পাইনি। তবে হ্যঁা, ওর সঙ্গে প্রতিদিনই ফোনে কথা হতো, মাঝে মধ্যে দেখাও হতো। আর ফুল, চকোলেটসহ নানারকম গিফট দেয়া-নেয়া তো হতোই।