ক্যারিয়ারের ২১ বছরে দীপা

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা রিপোর্ট
দীপা খন্দাকার
সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না- উপদেশমূলক এ বাক্যগুলো অন্য সবার মতো ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছেন তিনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে চলতে গিয়ে দীপা কখনও নিজের ব্যক্তিত্বকে বিসর্জন দেননি। এগিয়ে চলেছেন আপন গতিতে। আর সময়ের ঘড়িতে চলতে চলতে ক্যারিয়ারের ২১ বছরে পদার্পণ করলেন তিনি। একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য দীর্ঘ ২১ বছর সফলতার সঙ্গে পথচলা কিন্তু চারটিখানি কথাও নয়। বলা হচ্ছে, মডেল অভিনেত্রী দীপা খন্দকারের কথা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখনও নিজেকে মেলে ধরেছেন সাবলীলভাবে। টিভি নাটক, মডেলিং, উপস্থাপনায় এখনও সমুজ্জ্বল তিনি। সুঅভিনয় দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। ২০১৯ সালের জুন মাসে এই অভিনেত্রী ক্যারিয়ারের ২০ বছর পূর্ণ করবেন। পা দেবেন ২১ বছরে। দীর্ঘ এ সময়ের অভিজ্ঞতা ও সফলতা-ব্যর্থতা প্রসঙ্গে দীপা খন্দকার বলেন, একজন শিল্পী আসলেন আর কয়েকটা হিট নাটক উপহার দিয়ে হারিয়ে গেলেন এটিতে কোনো অর্জন নেই। একজন শিল্পী কতদিন তার ক্যারিয়ারকে সফলতার সঙ্গে টেনে নিতে পারেন সেটিই দেখার বিষয়। সূবর্ণা আপা আমাদের আদর্শ। আমারও ২০১৯ সালে ২১ বছর পদার্পণ করব, এই সময়ের অনেকের কাছে এটি নিশ্চয় বড় একটি বিষয়। কারণ এই সময়ের বেশিভাগ অভিনেত্রী ক্যারিযারে এত লম্বা সময় পান না। তারা আসেন তারপর আবার হারিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, আমি যখন অভিনয় শুরু করি, তখন ক্যামেরাম্যান, নির্মাতাসহ অনেকেই আমার বড় ছিলেন। কিন্তু এখন যাদের সঙ্গে আমি কাজ করি তাদেও বেশির ভাগই বয়সে আমার ছোট। সত্যি এটিকে আমি দারুণ উপভোগ করি। সবাইকে আমি অনেক আদর করি। শুটিং স্পটে তাদের আমার অনেক আপন আপন লাগে।' একদিকে ২০ পেরিয়ে ২১-এ পড়ছে ক্যারিয়ারের বয়স, অন্যদিকে নিজের বয়স পৌঁছে যাচ্ছে চলিস্নশ পেরিয়ে একচলিস্নশে। তবে চলিস্নশেও চালসে নন তিনি। বরং চলিস্নশকে একটি পরিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ সময় বলেই উলেস্নখ করলেন তিনি। বললেন, চলিস্নশ হলো সবার জন্য পরিপূর্ণতার বয়স। সেই দিক থেকে হিসেব করলে এটি আমারও পরিপূর্ণতার বছর। চলিস্নশের পর থেকে সব মানুষের মধ্যে একটা পরিবর্তন আসে। একজন মানুষের মধ্যে ম্যাচিউরিটির প্রতিফলন ঘটে। আমারও তাই হয়েছে। অনেক নির্মাতা এখন আমাকে এমন কিছু চরিত্রের জন্য ভাবেন যেটি আগে ভাবা হতো না।' গত বছরটি কেমন গেল? উত্তরে দীপা জানান, এক কথায় বলতে পারি, বছরটা আমার ক্যারিয়ার এবং নিজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বছর ছিল। অনেক ঘটনাবহুল ও ব্যস্ততাপূর্ণ একটি বছর কেটেছে আমার। চলচ্চিত্র, নতুন কয়েকটি বিজ্ঞাপন ও নতুন ধরনের কয়েকটি নাটকে অভিনয়- সবমিলিয়ে ২০১৮ সালটি ছিল আমার জন্য সফল একটি বছর। বিশেষ করে এ বছর আমার অভিনীত চলচ্চিত্রটি দেখার পর আমার প্রতি সবার দৃষ্টিভঙ্গির দারুণ পরিবর্তন হয়েছে। অভিনয় করছি অনেক বছর হলো। অনেক সিনেমার প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু কাজ করিনি। কারণ মনের মতো চরিত্র পাইনি। গল্প ভালো লাগেনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে মনের মতো একটি চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। 'ভাইজান এলোরে' ছিল সেরকমই একটা স্বপ্নের ছবি। এরকম ছবি পেলে আবারও হয়তো চলচ্চিত্রে দেখা যাবে আমাকে। নিজেকে প্রকাশ করার মতো কোনো চরিত্র যদি না পাই, তাহলে অভিনয় করার কোনো মানে হয় না।' বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে দীপা খন্দকার জানালেন, তিন-চারটি বিজ্ঞাপন চিত্রের কাজ শেষ করে বর্তমানে ধারাবাহিক নাটক নিয়েই বেশি ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। এর মধ্যে গোলাম সোহরাব দোদুলের পরিচালনায় 'সত্য মন্ত্র', মীর সাব্বিরের 'মালেক হতে সাবধান' নাটক দুটির প্রচার শুরু হয়েছে দীপ্ত টিভিতে এবং এল রুমার প্রযোজনা ও জাহানারা আহমেদের রচনায় নির্মিত নাটক 'লকেট' প্রচার হচ্ছে বিটিভিতে। আর প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে সাগর জাহানের রচনায় ও এ আর আকাশ-রতন হাসান পরিচালনায় 'আক্কেলগঞ্জ হোম সার্ভিস' মিজানুর রহমান লাবুর 'প্রিয় পরিবার', ইসমত আরা শানির 'হাজার রকম ভালোবাসা'। এ ছাড়া বিশেষ দিবসের একক নাটক ও টেলিছবিতেও কাজ করছেন তিনি। অভিনয়ের বাইরে স্বামী সন্তান ও পরিবারকে নিয়েই সময় কাটে দীপার। স্বামী শাহেদ আলী, ছেলে আদ্রিক ও মেয়ে আরোহীকে নিয়ে তার স্বপ্নের ভুবন। সব কাজ শেষে তাদের সান্নিধ্যে খুঁজে পান জীবনের নতুন মানে। হিসাবের ছক কষলে কোনো দিকেই অপূর্ণতা নেই তার। এরই মধ্যে বিবাহিত জীবনের ১২ বছর পার করলেন শাহেদ আলী ও দীপা খন্দকার দম্পতি। গত ২৭ মে এক যুগ পেরিয়েছে এই দুই তারকার যুগল জীবন। দীপা বলেন, ফুলের বিছানায় শুয়ে বসে জীবন পার করতে পারিনি, কেউই পারে না। খুব সহজ ছিল না আমাদের এই পথচলা। অনেক কঠিন, মাঝে মাঝে মনে হতো অসম্ভব। তারপর ভেবেছি আমাকে পারতেই হবে। শেষ পর্যন্ত পেরেছি। এভাবে বাকি জীবন থাকতে চাই, দোয়া করবেন সবাই।'