মাহির অভিনয় বেশি ভালো লাগে

এই সময়ের চলচ্চিত্রে পরিচিত মুখ আইরিন সুলতানা। একসময়র্ যাম্প মডেলিং করলেও বর্তমানে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই ব্যস্ত সময় পার করছেন এই নায়িকা। তার অভিনীত কয়েকটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও কাজ করছেন এ নায়িকা। অভিনয়, ব্যস্ততা ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আইরিন সুলতানা
তারার মেলা : চলমান ব্যস্ততা দিয়েই শুরু করা যাক- আইরিন সুলতানা : চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজ নিয়েই আপাতত ব্যস্ত আছি। এরই মধ্যে কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিং শেষ করেছি। আমিরুল ইসলাম শোভা পরিচালিত 'সেভ লাইফ' চলচ্চিত্রের শুটিং চলছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকান্ড ও এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগের ওপর ভিত্তি করে ছবির গল্প। এতে আমি একজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর চরিত্রে অভিনয় করছি। আমার বিপরীতে দেখা যাবে আনিসুর রহমান মিলনকে। আমাদের দুজনের সিকু্যয়েন্সের শুটিং এখনো শুরু হয়নি। তারার মেলা : এর আগেও তো মিলনের সঙ্গে জুটি বেধেছেন? আইরিন সুলতানা : হঁ্যা, এর আগে সাইফ চন্দনের 'টার্গেট' ছবিতে আনিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছি। তিনি অনেক বড় মাপের একজন অভিনেতা। তার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তবে আমার মুক্তি প্রতিক্ষিত ছবিগুলোর নায়ক ভিন্ন। একক ছবিতে একেক জন। দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত 'আকাশ মহল' ছবিতে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইমন, হারুনুজ্জামানের 'পদ্মার প্রেম' ছবিতে সুমিত, বুলবুল জিলানীর 'রোদ্র ছায়া'তে নিরব, সাইফ চন্দনের 'টার্গেট' ছবিতে আমার নায়ক আনিসুর রহমান মিলন। প্রতিটি ছবিতেই আমাকে ভিন্নরূপে দেখা যাবে। তারার মেলা : দীর্ঘদিন ধরেই প্রেক্ষাগৃহে কোনো নতুন ছবি মুক্তি পায়নি আপনার। দর্শকরা কবে আপনার দেখা পাবে? আইরিন সুলতানা : গত বছর আমার কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। কয়েকটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও তা কবে নাগাদ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে তা আমি বলতি পারছি না। কেন, কি কারণে তা পরিচালক ও প্রযোজকরাই বলতে পারবেন। তবে এ বছরই ছবিগুলো মুক্তি পাওয়ার সম্ভবনা আছে। তারার মেলা : চলচ্চিত্রের এই প্রতিযোগিতামূলক সময়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে কতটা বেগ পেতে হচ্ছে? আইরিন সুলতানা : চলচ্চিত্রে আসা আমার সময় খুব বেশি না। এর মধ্যে যে কটি ছবি মুক্তি পেয়েছে সেগুলো আলোচিত ছবি। মুক্তির পর এসব ছবি থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। আমি খুব বেশি কাজ না করে ভালো মানের কম ছবিতে কাজ করতে চাই। পালস্না দিয়ে বেশি কাজে আমি বিশ্বাসী নই। একের পর এক ছবিতে কাজ করা মানেই নিজেকে চলচ্চিত্রে টিকিয়ে রাখা নয়। গুণগত মানের কাজটাই বড় বিষয়। তারার মেলা: চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিবেশ কেমন মনে হচ্ছে আপনার কাছে ? আইরিন সুলতানা : আমার কাছে ভালো মনে হয়। মাঝ সময়ে খারাপ গেলেও এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে আরও পরিবর্তনের দরকার। ভালো গল্প, ভালো নির্মাণে আরও জোরদার হওয়া দরকার। তারার মেলা : একটু পেছনে যাওয়া যাক। চলচ্চিত্রে আপনার আগমন হয় কিভাবে? আইরিন সুলতানা : ২০০৮ সালের 'প্যান্টেনা ইউ গট দ্য লুক' প্রতিযোগিতার ' সেরা হাসি' পুরস্কার অর্জন করি। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন র?্যাম্প মডেলিং অনুষ্ঠানে অংগ্রহণ করি। পত্রিকায় আমার ছবি দেখে প্রযোজক ও নির্মাতারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মুহাম্মদ আলী পারভেজের পরিচালনায় 'প্রিয়তমা আমি দাড়ি- তুমি কমা' চলচ্চিত্রে প্রথম চুক্তিবদ্ধ হই। আমার সহশিল্পী ছিলেন নিলয়। আমরা ছবিটির ৮ দিন শুটিং করেছিলাম। এরপর ছবিটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সাইফ চন্দনের 'ছেলেটি আবোল তাবোল, মেয়েটি পাগল পাগল' ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হই। এ ছবির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আসেন দেবাশীষ বিশ্বাস। এখানে এসে তিনি জানতে পারেন আমি ছবি করছি। পরে তার ছবি 'ভালোবাসা জিন্দাবাদ' ছবির জন্য আমাকে সিলেক্ট করেন। 'ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল' ছবির আগেই শুটিং শেষ হয়ে মুক্তি পায় 'ভালোবাসা জিন্দাবাদ'। ২০১৩ সালের ৮ নভেম্বর ছবিটি মুক্তি পায়। তারার মেলা: চলচ্চিত্রে সমসাময়িক কার অভিনয় ভালো লাগে? আইরিন সুলতানা : সমসাময়িক সময়ের মাহিয়া মাহির অভিনয় বেশি ভালোলাগে। আর নায়কদের মধ্যে আরেফিন শুভ। তারার মেলা : সম্প্রতি ওয়েব সিরিজে কাজ করলেন। এসব ওয়েব সিরিজ কতটা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন? আইরিন সুলতানা: তিনটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। অনন্য মামুন পরিচালিত 'পার্টনার' ওয়েব সিরিজের শুটিং হয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। এতে মায়া শিকদার নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি।এ মেয়েটির জীবন যুদ্ধের গল্পই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। একই পরিচালকের 'ধোঁকা'র শুটিং পুরোটাই হয়েছে বালিতে। এ ছাড়া সৌকত নাসিরের 'ট্র্যাপেড' নামের একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। তিনটিই ১২ পর্বের। নতুন আরও ওয়েব সিরিজ নিয়ে কথা হচ্ছে কিন্তু এখনই কিছু জানাতে চাই না। তারার মেলা : চলমান এই ওয়েব সিরিজ জোয়ার নিয়ে নিজস্ব মতামত কি? আইরিন সুলতানা : এই মাধ্যমটা অবশ্যই ইতিবাচক। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এর প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশ্ব যখন এগিয়ে চলছে তখন আমরা কেন পিছিয়ে থাকব। আমাদের দেশে এই মাধ্যমের কাজ শুরু হয়েছে অল্পদিন আগে। দিন দিন এই মাধ্যমটি বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখন অনেকেই এই মাধ্যমে কাজ করছেন। তারার মেলা : চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজের মধ্য যদি পার্থক্য জানতে চাই- কিভাবে ব্যাখা দেবেন? আইরিন সুলতানা : চলচ্চিত্রে সাধারণত ৪/৫টা গান থাকে। গান ছাড়া চলচ্চিত্র হয় না। কিন্তু ওয়েব সিরিজে গানকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না। সম্প্রতি শেষ করা ওয়েব সিরিজে মাত্র একটি গান পেয়েছি। ওয়েব সিরিজ পর্ব ভিত্তিক। কিন্তু চলচ্চিত্র তা নয়। তারার মেলা : তাহলে কী ওয়েব সিরিজ ও চলচ্চিত্রের ব্যস্ততায় নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ বন্ধ হয়ে যাবে আপনার? আইরিন সুলতানা : আমি চলচ্চিত্রে কাজ করার পর আর নাটকে কাজ করা হয়নি। ২০০৯ কিংবা ১০ সালের দিকে 'ম্যান পাওয়ার' নামে নাটকে প্রথম কাজ করি। কিন্তু প্রথম প্রচার হয় 'পৌষ-ফাগুনের পালা'। প্রথম রবির বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার পর আরও বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হই। কিন্তু এখন চলচ্চিত্র নিয়েই ব্যস্ত রয়েছি। তারার মেলা : সবশেষে ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রসঙ্গ- আইরিন সুলতানা : আমি আসলে ভবিষ্যৎ নিয়ে ততটা ভাবি না। বর্তমানকেই প্রাধান্য দিই। তবে, ভালো কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে চাই।