হেইলি বাল্ডউইন ও জাস্টিন বিবার
নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাগদান সারলেন কানাডীয় সংগীতশিল্পী, গীতিকার এবং সংগীত প্রযোজক জাস্টিন বিবার। দীঘির্দনের প্রেমিকা মাকির্ন টেলিভিশন অভিনেত্রী ও মডেল হেইলি বাল্ডউইনের সঙ্গে গত ৭ জুলাই বাহামাসের একটি রিসোটের্ বাগদান সম্পন্ন করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে শুরুতে তারা গোপনীয়তা রক্ষা করলেও পরে নিজেরাই তা জানান।
সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম টুইটারে সম্প্রতি তিনি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিবারের বাগদানের খবরটি ভক্তরা উচ্ছ¡াসের সঙ্গেই লুফে নিয়েছেন। পুরো দুনিয়া এখন বাগদানের আলোচনায় সরগরম রয়েছে।
নামি প্রযোজক-অভিনেতা স্টিফেন বাল্ডউইনের মেয়ে হেইলি বাল্ডউইন। তাকে গত শনিবার বিয়ের প্রস্তাব দেন বিবার। গায়কের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, একটি পঁাচ তারকা রেস্টুরেন্টে হেইলিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন কণ্ঠশিল্পী। অভিনেত্রী রাজি হতেই বাগদান সেরে ফেলেন বিবার। গত সোমবার ইনস্টাগ্রামে খোলা চিঠিতে বাগদানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এই কানাডিয়ান গায়ক।
হেইলির ছবি পোস্ট করে ইনস্টাগ্রামে জাস্টিন বিবার লিখেন, ‘সময় নিয়ে কিছু বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শব্দগুলো খুব দ্রæতই চলে এলো। সহজ কথাটি হচ্ছে, হেইলি, তোমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এমন সবকিছুকে আমি ভালোবাসি। তোমার প্রত্যেকটা অংশকে জানতে সারা জীবন তোমার সঙ্গে কাটাতে চাই। ভালোবাসতে চাই। আমার হৃদয় সম্পূণর্ভাবে এবং পুরোপুরি তোমার। প্রত্যেক সময় তুমি থাকবে আমার কাছে। তুমি আমার জীবনের ভালোবাসা। আর আমি এটা অন্য কারোর সঙ্গে ভাগ করতে পারব না।’
জাস্টিন বিবার আরও জানান, তার বয়স যখন ৭০ পেরিয়ে যাবে, তখন তিনি হেইলিকে এভাবেই ভালোবাসবেন। এদিকে বিবারের পোস্টের পর হেইলিও একটি পোস্ট শেয়ার করেন। তিনি লিখেন, ‘জানি না এত আনন্দের যোগ্য কি-না আমি। তবে এমন একজন অসাধারণ মানুষের সঙ্গে জীবন কাটানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। তার কাছে আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকারের কোনো ভাষা নেই।’এরই মধ্যে বাগদানের বিষয়টি বিবারের বাবা জেরেমি বিবার ইনস্টাগ্রামে ছেলের একটি স্থিরচিত্র শেয়ার করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ছেলের শেয়ার করা ছবিটির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘তোমার জীবনের পরবতীর্ অধ্যায় অনেক সুন্দর হোক।’
২০১১ সালে প্রথম একসঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হন জাস্টিন বিবার এবং হেইলি বাল্ডউইন। ২০১৬ সালে নিজেদের প্রেমের স্বীকৃতি দেন তারা। অবশ্য সেই বছরেই ভেঙে যায় তাদের প্রেম। ২০১৭ সালে প্রাক্তন প্রেমিকা সেলেনা গোমেজের সঙ্গে আবারও ঘুরতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু সেই সম্পকর্ও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি সবাইকে চমকে দিয়ে পুরনো প্রেমিকার কাছেই ফিরে গেলেন জাস্টিন বিবার।
কয়েক দিন আগেই বিবার ও হেইলিকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গিয়েছিল বাহামাস আইল্যান্ডে। তারপরই তাদের বাগদান নিয়ে ওঠে নানা প্রশ্ন। তাদের একটি ভিডিও নেটদুনিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়। শনিবারের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিবারের সঙ্গে হেইলি সালসা নাচছেন একটি পঁাচ তারকা রেস্টুরেন্টে। সেখানেই তারা বাগদান করেন। আর বাগদানের আগে গায়কের নিরাপত্তারক্ষীরা রেস্টুরেন্টে থাকা সবার ফোন জমা রেখেছিলেন, যাতে কেউ তাদের ছবি না তুলতে পারে। জাস্টিন বিবার শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার তারিখ। তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন। তবে আগামী বছর পপস্টার জাস্টিন বিবার প্রেমিকা হেইলি বাল্ডউইনকে বিয়ের করতে যাচ্ছেন বলে মাকির্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। বিয়ের নানা পরিকল্পনা এখন থেকেই করা শুরু করেছেন তারা।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে তাদের একটি সূত্র বলছে, বিবার ও হেইলি তাদের বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে পরস্পর আলোচনা করছেন। আগামী বছর ছোট পরিসরে তারা বিয়ের কাজ সারতে চান।
শুধু তাই নয়, হেইলি এরইমধ্যে তার বিয়ের পোশাক বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সূত্র জানায়, বিয়ের পোশাক ও সাজ নিয়ে হেইলি নিজের আইডিয়া ফ্যাশন ডিজাইনার ও তার টিমের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, বিবার ২০০৯ সালের শেষের দিকে তার প্রথম ‘এক্সটেন্ডেড প্লে মাই ওয়াল্ডর্’ গান প্রকাশ করেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্লাটিনাম স্বীকৃতি লাভ করে। বিবার-ই প্রথম শিল্পী যার প্রথম অ্যালবামের সাতটি গান বিলবোডর্ হট ১০০ তালিকায় স্থান করে নেয়।
বিবারের প্রথম পূণর্ অ্যালবাম মাই ওয়াল্ডর্ ২.০ ২০১০ এর ২৩ মাচর্ প্রকাশিত হয়। অ্যালবামটি বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য অজর্ন করে এবং বেশ কয়েকটি দেশে শীষর্ দশে স্থান করে নেয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্লাটিনাম সনদে ভূষিত হয়। এই অ্যালবামের বেবি গানটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাফল্য অজর্ন করে। ইউটিউবের এখন পযর্ন্ত সবচেয়ে সবাির্ধক প্রদশির্ত, আলোচিত এবং পছন্দিত ভিডিওগুলোর একটি হলো এই গানটির মিউজিক ভিডিও। বিবারের পরবতীর্ অ্যালবাম নেভার সে নেভার দ্য রিমিক্সেস। এটি প্রকাশিত হয় ১৪ ফেব্রæয়ারি ২০১১। তার দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম ছিল আন্ডার দ্য মিসলটো যা মুক্তি পায় ২০১১ সালের নভেম্বরে।
২০১২ সালে জাস্টিন বিবার প্রকাশ করে তার তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম বিলিভ। তার চতুথর্ অ্যালবাম পারপাস ২০১৫ সালের নভেম্বরে মুক্তি পায়। যুক্তরাষ্ট্রে তার অ্যালবাম ও গানের মোট বিক্রি সংখ্যা ৪৪.৭ মিলিয়ন।
জাস্টিন বিবার বিগত কয়েক অসংখ্য পুরস্কার ও সাধুবাদ অজর্ন করেছেন। ২০১০ অ্যামেরিকান মিউজিক অ্যাওয়াডর্স-এ বিবার বষের্সরা শিল্পীর পুরস্কার অজর্ন করেন। এছাড়া তিনি ৫৩তম গ্র্যামি অ্যাওয়াডর্স-এ শ্রেষ্ঠ নবীন শিল্পী ও বেস্ট পপ ভোকাল অ্যালবাম পুরস্কার দুটির জন্য মনোনীত হন। বিবারের সংগীত, চিত্র ইত্যাদি বিশ্বব্যাপী আলোচনা, সমালোচনা ও বিতকের্র বিষয় পরিণত হয়েছে।
