টয়ার লক্ষ্য বাণিজ্যিক সিনেমা

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মুমতাহিনা টয়া
কথা বলারই যেন ফুসরত মিলছে না টয়ার। তারপরেও ব্যস্ত শিডিউলকে ফাঁকি দিয়ে শুরু হয় আলাপচারিতা। বললেন, 'সামনেই ঈদ। তাই ঈদ কেন্দ্রিক নাটক নির্মাণে চলছে হিড়িক। নিয়মিত নাটকের মাঝেও এসব নাটকের শুটিংয়ের কাজ করতে হচ্ছে। এ সময় দর্শকদেরও প্রত্যাশা থাকে ভালো ভালো গল্পের কিছু নাটক দেখা। তাই ঈদের নাটকের কাজ অনেক যত্ন নিয়ে করতে হয়। সম্প্রতি নামহীন অনুভূতি, সময়ের গল্পসহ বেশ কয়েকটি নাটকের কাজ শেষ করেছি। এর মধ্যে সিলেটের শ্রীমঙ্গলেও গিয়েছিলাম নাটকের শুটিং। সবমিলিয়ে দম ফেলারও সময় পাচ্ছি না।' এত ব্যস্ত শিডিউলে অভিনয়ের মান ঠিক রাখায় কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় কিনা? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই বলতে শুরু করলেন টয়া। বলেন, 'না না। ব্যস্ত শিডিউল মানেই নাটকের কাজ খারাপ হবে, এমনটি নয়। আমরা এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, অনেকটা করপোরেট আদলে। পরিচালক অ্যাকশন বলার সঙ্গে সঙ্গেই চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাই। অন্য কিছুইতেই তখন আর মন থাকে না।' টয়ার কথার অনেকটাই সত্যতা মেলে ক্যামেরার সামনে তার সাবলীল উপস্থিতি দেখে। তার অভিনয় জাদু মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবাইকে আটকে রাখে টিভি পর্দায়। এ জন্যই 'বখাটে'র মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রেও তিনি কুড়িয়েছেন প্রশংসা। সাবলীল অভিনয়ে 'লোকাল বাস' শিরোনামের মিউজিক ভিডিওতে দর্শকদের থেকে পেয়েছেন যুতঁসুই সাড়া। সেসব স্বীকারও করলেন নিজে। আমি সবসময়ই একটু আলাদা ধরনের কাজ করতে চাই। ব্যতিক্রমধর্মী অভিনয় করেও আরাম পাই। কথার পৃষ্ঠে কথার জন্ম। কথায় কথায় উঠলো বড় পর্দার প্রসঙ্গ। 'বড় পর্দা!' শব্দটা শুনেই চোখের সামনে ভেসে উঠে হল ভর্তি মানুষ। দর্শকদের সিটি আর হাত তালি। ছোট পর্দার শোবিজ অঙ্গন ছেড়ে বড় পর্দায়, ভয় করেনি? কিছুটা চুপ টয়া। একটু সময় নিয়ে মুখ খুললেন, 'প্রত্যাশার চাপ ছিল অনেক বেশি। ছোট পর্দায় মানুষ আমার অভিনয় দেখেছেন, এবার দেখবেন বড় পর্দায়। ছোট পর্দায় অনেক ছোট ছোট ভুল সহজেই ঢাকা সম্ভব। কিন্তু বড় পর্দার ভুলগুলো সহজে ঢাকা যায় না। তাই যতটুকুই অভিনয় পারি সবটা দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম। তখনকার অনুভূতিটাও ছিল অন্যরকম। মাঝরাতে না ঘুমিয়ে চিন্তা করতাম, মানুষ আমাকে বড় পর্দায় দেখবে। না জানি কি হয়!' তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী শুরুটা হয়নি। 'বেঙ্গল বিউটি' প্রকাশ হওয়ার পরে দু'দফায় হল পেয়েছিল মাত্র তিনটি। খুব বেশি একটা মানুষ দেখার সুযোগ পায়নি ছবিটি। যারাই দেখেছে, মন খুলে প্রশংসা করেছেন এ অভিনেত্রীর। অকপটে স্বীকার করলেন সে সবও। 'আমার অভিনয়ের প্রশংসা শুনলেও অদ্ভুত কারণে সিনেমাটা হলে চলেনি। এখন শুনছি পরিচালক ও প্রযোজক মিলে বিভিন্ন দেশে মুক্তি দেবে এটি। এটাও কিন্তু ইতিবাচক দিক।' বললেন টয়া। হয়তো অনেকেই ভেবেছে টয়াকে বিমামূল্যে টিভি পর্দায়ই দেখা যায়। পয়সা খরচ করে টিকিট কেটে কেনো দেখতে হবে তাকে? এমন প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত হয় আরো কয়েকটি প্রশ্ন। তবে কি ছোট পর্দার মুখগুলো বড় পর্দায় এসে খেই হারিয়ে ফেলে। এই তকমাটিই কি এবার টয়ার কপালে জুটলো? এমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বেঙ্গল বিউটির নায়িকা বলে, 'দেখুন জয়া আহসান, সোহানা সাবা ও আরিফিন শুভ ভাইদের কিন্তু শুরুটা মডেলিং ও টিভি পর্দার মাধ্যমেই। এখন তারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও অভিনয় করছে। যোগ্যতা আর যোগ্যতার ব্যবহার করতে পারলে একজন অভিনতা অভিনত্রেী সব মাধ্যমেই টিকে যাবে। হয়তো আমার একটি ছবি তেমন চলেনি। তাই বলে আমার সামনের ছবি যে চলবে না সেটাও আগবাড়িয়ে বলা যায় না। ছোট পর্দায় আমার অনেক হিট কাজ আছে। এখনো বিয়ের বাড়ি কিংবা চায়ের দোকানে আড্ডায় আমার অভিনীত মিউজিক ভিডিও বাজে। ইউটিউবে আমার নাটকের লাখ লাখ ভিউ হয়। এটা মানুষের ভালোবাসা। আমি এই ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই। বেশি কিছু চাই না।' তার মানে চলচ্চিত্রে নিয়মত দেখা যাবে টয়া সুন্দরীকে? এবার হেসে উড়িয়ে দিলেন তিনি। 'চলচ্চিত্রে নিয়মিত হবো কিনা এটা নির্ভর করছে আমার কাছে আসা সিনেমার গল্প কেমন হবে তার ওপর। ভিন্ন স্বাদের গল্প পেলে ফের চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছা আছে। গতানুগতিক কোন গল্পে আমি কাজ করতে চাই না। বেঙ্গল বিউটির মতো সিনেমা সচারচর আমাদের এখানে হয় না। তাই কাজ করেছি। আর বাণিজ্যিক ধারার সিনেমায়ও কাজ করা ইচ্ছা আছে। বাকিটা সময়ই বলে দেবে।' একটু থেমে আবার যোগ করলেন, 'চ্যালেঞ্জ অবশ্যই বড় পর্দায় বেশি। তবে ছোট পর্দায় দেখতে দেখতে সাত বছর হয়ে গেছে। এখন যে কোনো চ্যালেঞ্জ আসুক আমি সহজভাবে নিতে পারি। বড় পর্দার পথচলা কেবলই শুরু করলাম। যতই দিন যাবে এসব মোকাবেলায় আরো সিদ্ধহস্ত হবো।'