এই বৈশাখে পূজা

প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
পূজা চেরি
ঐতিহ্যের বর্ষবরণ... বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ। এ দিনটির মতো অন্য কোনো উৎসব এত জাঁকজমকভাবে পালিত হয় না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খিস্ট্রান সব ধর্মের লোকরা এ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। এদিন যদি কোনো অনুষ্ঠান না থাকে তাহলে সারাটা দিন আনন্দ উলস্নাসে কেটে যাবে। এখনো বলতে পারছি না এদিন কোনো অনুষ্ঠান আছে কিনা। অনেক সময় হুট করেই অনুষ্ঠানের প্রস্তাব আসে। এই বৈশাখে... কোনো অনুষ্ঠান না থাকলে পহেলা বৈশাখে পরিবারের সবার সঙ্গেই দিনটি কাটাব। আমরা দুই ভাই-বোন। ভাই আমার বড়। ও ঢাকার বাইরে আছে, ঢাকায় ফিরবে বৈশাখের পরে। তাই এবার বৈশাখে বাবা-মার সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যাব। আমার আবার ঘুরতে খুব ভালো লাগে। তবে কোথায় ঘুরতে যাব জানি না। কোনো এক মেলায় অবশ্যই যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া এফডিসি ও রমনায় তো যাবই। বৈশাখেও বাবা-মা... বাবা-মা দুজনেই আমার বন্ধু। আমি কোনো অনুষ্ঠানে গেলে বাবা না থাকলেও মা সঙ্গে থাকেন। বাচসাসের পঞ্চাশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে বাবাও ছিলেন। শুধু বৈশাখ নয়, সব উৎসবেই বাবা-মাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। বৈশাখী সাজে... বৈশাখী সাজ ছাড়া বৈশাখী উৎসব মানায় না। বৈশাখী সাজেই দেখা যাবে আমাকে। সাদা কিংবা হলুদ রঙের লাল পাড় শাড়ি পরব। তাতে ঢোল ঢোল কাজ করা থাকবে। হাতে-কানে-নাকে ও গলায় গহনা পরব। মঙ্গল শোভাযাত্রা... নতুন বর্ষকে বরণ করে নেয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটা কার না ভালোলাগে। শোভাযাত্রায় স্থান পায় বিশালকায় হাতি, পেঁচা, বাঘের প্রতিকৃতির কারুকর্ম। কৃত্রিম ঢাক আর অসংখ্য মুখোশখচিত পস্ন্যাকার্ড, বাঁশির শব্দসহ মিছিলটি নাচে গানে উৎফুলস্ন পরিবেশ সৃষ্টি করে। আমার খুব পছন্দ। আমিও এতে অংশ নেই। হারিয়ে যাওয়ার ভয়... ছোটবেলায় আমার একটা ধারণা ছিল সব শিশুরাই হারিয়ে যায়। ভয়ে থাকতাম আমি কখন যেন হারিয়ে যাই। হারিয়ে গেলে আমার কি হবে! বাবা-মার কাছে ফিরে আসতে পারব কি পারব না! এসব চিন্তা কাজ করত। বৈশাখে যখন মঙ্গল শোভাযাত্রা কিংবা মেলায় যেতাম তখন মানুষের ভিড়ে বাবা-মার হাত শক্ত করে ধরে রাখতাম যেন হারিয়ে না যাই। কখনো একটু হাত ছাড়া হলেই চিৎকার করে উঠতাম। আর তখন বাবা-মা বলে উঠতেন এইতো তারা সঙ্গেই আছেন। বিষয়টি মনে হলে এখন খুব হাসি পায়। সেই বৈশাখ-এই বৈশাখ... ছোটবেলা আর এ বয়সের বৈশাখের আনন্দে একটু তফাৎ আছে। তখনও ঘুরতে বের হতাম এখনো বের হই। তখন বাবা-মার হাত ধরে হাঁটতাম, খেলনা কিনতাম, যা পছন্দ হতো তা কিনে দিতে বলতাম। তখন বৈশাখে জামা পরতাম আর এখন শাড়ি পরি। তখন গিফট পেতাম বৈশাখে। এখনোই গিফট পাই তবে তখন গিফট দিতাম না এখন গিফট দেই। শুধু বৈশাখেই নয়, পূজা উপলক্ষেও আমি বাবা-মা, ভাইকে গিফট দেই। বৈশাখ স্মৃতি... বৈশাখ নিয়ে তেমন কোনো স্মৃতি নেই। প্রায় সব বৈশাখই মনে রাখার মতো। তবে গত বছর বাবা-মা, বন্ধুদের সঙ্গে বৈশাখের আনন্দ হয়নি। তখন আমার 'পোড়ামন-টু' সিনেমার শুটিং ছিল মেহেরপুরে। তখন শুটিংয়ের ফাঁকে বৈশাখের ইমেজও ছিল। ঘুরতে না গেলেও পান্তা-ইলিশ খাওয়া হয়েছিল। বরাবরের বৈশাখ মিস করেছিলাম। দুই দিনব্যাপী বৈশাখ.. আমার বৈশাখের উৎসব চলে দুই দিন। পহেলা দিন ও পরের দিন। প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখের পরের দিন আমার খুব কাছের বন্ধুরা আমার বাসায় আসেন। বন্ধুরা মিলে খুবই মজা করি। বন্ধুদের বাবা-মারাও সঙ্গে থাকেন। মোটামুটি একটা বড় ধরনের আয়োজন চলে আমার বাসায়। পান্তা-ইলিশসহ হরেক রকম আইটেম রান্না করেন মা। মা খুব ভালো রান্না করতে পারেন। আমি মাকে সহযোগিতা করি। তবে আমিও কিন্তু রাঁধতে পারি। পান্তা-ইলিশ.... বৈশাখের উৎসবের সঙ্গে পান্তা-ইলিশ মিশে গেছে। পান্তা-ইলিশ ছাড়া যেন বৈশাখের আনন্দ পরিপূর্ণ হয় না। প্রতি বছরই আমি পান্তা-ইলিশ খাই। এটা পারিবারিকভাবেই হয়ে আসছে। গত বছর শুটিং ইউনিটে পরামর্শ দিয়ে পান্তা-ইলিশের ব্যবস্থা করিয়েছিলাম। শুটিং....... আগামী মাস থেকে নতুন ছবির শুটিং শুরু করব। শুটিংয়ের আগে আমি নিজেকে চরিত্রের জন্য প্রস্তুত করে নেই। অনেকটা ওয়ার্কশপ বলতে পারেন। তবে নতুন ছবির নাম, পরিচালক ও নায়কের নাম না বলে তিনটাই চমক হিসেবে রেখে দিলাম দর্শকদের জন্য। তবে এটা বলছি নতুন এ ছবিটি জাজ মাল্টিমিডিয়ার বাইরে। খুব ভালো গল্পের সুন্দর একটি ছবি। শ্রম্নতিলিখন : মাসুদুর রহমান