লোকসভা নির্বাচনে কেমন করবেন তারকারা!

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা ডেস্ক
মিমি চক্রবর্তী
নির্বাচনী উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারতে। হাটে-মাঠে-ঘাটে সবখানেই এখন একটাই প্রসঙ্গ। লোকসভা নির্বাচন। প্রতিবারের মতো এবারও তীব্র লড়াই চলছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। কংগ্রেস ও বামপন্থিরাও একসঙ্গেই লড়ছেন ফের। শুধু তাই নয়, গতবারের মতো এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন একঝাঁক তারকা শিল্পী। বাঘা বাঘা নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারাও নির্বাচনী দৌড়ে শামিল হচ্ছেন। গতবারের নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তালিকাতেই বেশি তারকার নাম লেখা ছিল। এদিকে বিজেপির তুলনায় অনেক বেশি তারকা যুক্ত হয়েছেন মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মমতা তার এবারের লোকসভায় মোট ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১ শতাংশই নারী রেখেছেন। সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন টলিউড অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহানসহ বেশ কয়েককজন বাঙালি সিনেতারকা। এরই মধ্যে নির্বাচনে প্রচারণার পাশাপাশি ভোটারদের বিভিন্ন প্রতিশ্রম্নতিও দিচ্ছেন এসব তারকাপ্রাথীরা। নতুন-পুরনো মুখ মিলিয়ে শুধু তৃণমূল থেকেই মনোনয়ন পেয়েছেন ৫ টলিউডি অভিনেতা-অভিনেত্রী। জয়ের বিষয়েও বেশ আশাবাদী তারা। অন্য রাজ্যগুলোতে বিজেপি, কংগ্রেস ও স্বতন্ত্র পদেও প্রার্থী হয়েছেন বলিউড এবং দক্ষিণী সিনেমার অনেক শিল্পী। সিলভার স্ক্রিন কাঁপানোর পর এবার রাজনীতির মাঠে দুই টালিউড অভিনেত্রী মিমি চৌধুরী আর নুসরাত জাহান। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দুই অস্ত্রের মধ্যে নুসরাত লড়ছেন সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর বশিরহাট আর মিমি চক্রবর্তী রয়েছেন যাদবপুর আসনে। রাজনীতির ধারা বলছে, তারকা প্রার্থীরা ভোট টানতে পটু। যার প্রমাণ গত লোকসভা নির্বাচন। মমতার তৃণমূল কংগ্রেসকে ঘাটালে জয় এনে দেন টালিউডের হার্টথ্রব দেব। আসানসোলের বাকুরায় জায়ান্ট কিলার হিসেবে আবির্ভূত হন মুনমুন সেন। প্রথমবার নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেই হারিয়ে দেন ৯ বারের সিপিএম এমপি বাসুদেবকে। এবার এই আসনে মুনমুনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির আরেক তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। আর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম আসনে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন শতাব্দী রায়। বিজেপির তারকা মনোনয়নে এবার নতুন সংযোজন লকেট চৌধুরী। সাবেক তৃণমূল কর্মী হলেও গুরুত্বপূর্ণ হুগলি আসনে বিজেপির প্রার্থী এই অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী। আর উলবেরিয়ায় লড়ছেন অভিনেতা জয় ব্যানার্জি। বলিউড তারকাদের মধ্যে এবারও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন ড্রিম গার্ল হেমা মালিনী। বিজেপির টিকেটে মথুরা আসনে লড়ছেন তিনি। আরো রয়েছেন ধর্মেন্দ্র, কিরণ খের এবং শত্রম্নঘ্ন সিনহা। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেয়া সাবেক সমাজবাদী পার্টি নেত্রী জয়া প্রদা রামপুর থেকে লড়ছেন। তারকা মনোনয়নে পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। মুম্বাইয়ের উত্তর লোকসভা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী রঙ্গিলা অভিনেত্রী উর্মিলা মাতন্ডকার। বিজেপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে তার বিপরীতে লড়ছেন গোপাল শেঠি। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে কংগ্রেসের ভরসা সুপারস্টার চিরঞ্জীবির ভাই পবন কল্যাণ। ক্রিকেটারদের মধ্যে কিরতি আজাদ কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন দারবাংগা আসনে। তেলেঙ্গানায় একই দলের প্রার্থী ভারতীয় ক্রিকেট সুপারস্টার মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন। মূলধারার এসব দলের বাইরে তামিলনাড়ুর একটি স্থানীয় দলের হয়ে জ্বলন্ত মশাল প্রতীকে লড়ছেন শক্তিমান অভিনেতা কামাল হাসান। আর ব্যাঙ্গালুরু থেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী বহুভাষী দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতা প্রকাশ রাজ। ভারতের নির্বাচনে অবশ্য তারকাদের অংশ নেয়াটা নতুন কিছু নয়। অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে ডাকসাইটে অনেক তারকাই ভারতের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন বিভিন্ন সময়। সেই পথ ধরে এবারের নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছেন একঝাঁক তারকা। নির্বাচনে তারকাদের অংশগ্রহণকে 'তুরুপের তাস' বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার নতুন এক কৌশল বলেও ভাবছেন। অতীতের সব নজির ছাপিয়ে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল টলিউডের এমন দুই নায়িকাকে প্রার্থী করেছে, যারা বর্তমানে কেরিয়ারের তুঙ্গে- মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান। বাঙালি দর্শকের হার্টথ্রব এই দুই নায়িকা কখনোই রাজনীতির সঙ্গে আগে জড়িত ছিলেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে যথেষ্ঠ ট্রোলিংও হয়েছে। আবার গতবারের মতো এই নির্বাচনে ঘাটালের প্রার্থী দেব বা বীরভূমে শতাব্দীর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি রোড শো, সভাতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় প্রমাণ করে যে চলচ্চিত্রের দৌলতে আসানসোলে মুনমুন সেন বা বিজেপির হুগলির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের তারকাখ্যাতি স্তিমিত হয়নি।