ফারিয়ার ভিন্ন ঈদ

ঈদ মানেই বিশেষ কিছু, বিশেষ আনন্দ। কখনো কখনো এই বিশেষ দিনটির আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার কথাই ধরা যাক। বিয়ের পর প্রথম ঈদ, উচ্ছ্বাসের বিন্দুমাত্র কমতি নেই। মায়ের মেয়ে হয়ে জীবনে বহুবার ঈদ এসেছে তার জীবনে। তবে একজন স্ত্রী হয়ে এবারই প্রথম ঈদকে আলিঙ্গন করতে যাচ্ছেন। সেসব অনুভূতি তারার মেলাকে শুনিয়েছেন মনের আগল খুলে। লিখেছেন রায়হান রহমান

প্রকাশ | ৩০ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিয়ের পর প্রথম ঈদ বলে কথা, একটু অন্যভাবে তো কাটবেই। নতুন মানুষ, নতুন ঘর, নতুন সংসার-এত নতুনকে সঙ্গে নিয়ে ঈদ উৎযাপনে কিছু ভিন্নতা আসবে বলার অপেক্ষা রাখে না। সে কথা অস্বীকার করেননি অভিনেত্রী শবনব ফারিয়াও। অকপটে বলেন, 'সত্যি বলতে এবারের ঈদ আমার কাছে বিশেষ কিছু। এই বিশেষ কিছুর অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে প্রধান ও প্রথম কারণ হলো বিয়ের পরে এটিই আমার প্রথম ঈদ। এই ঈদে অনেক নতুনকে আলিঙ্গন করতে যাচ্ছি। আগে মায়ের সঙ্গে ঈদ করতাম। মায়ের মেয়ে হয়ে ঈদ উৎসবে মেতে উঠতাম। এবার সেই উৎসবে কিছুটা ভিন্নতা পাচ্ছে। নিজের দুইটি পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এবার ঈদ করব। মূল বিষয় হচ্ছে প্রথমবারের মতো এবার শ্বশুর বাড়িতে ঈদ করছি। ও বাড়ির সবাই আমাকে এতো আদর করে বলে বুঝাতে পারব না। বিশেষ করে আমার শাশুড়ি। তার সঙ্গে আমার সখ্য অনেকটা মা-মেয়ের মতো। সে আমাকে খুব বুঝে, আর আমিও 'লক্ষ্ণী বউ।' ততক্ষণে মুঠোফোনের ওপ্রান্ত থেকে হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে এ অভিনেত্রীর। নিজেকে লক্ষ্ণী বউ দাবি করে কিছুটা লজ্জাই পেয়েছেন তিনি। আর কেনই বা লজ্জা পাবেন না? সবে মাত্র বিয়ের হলো। এখনো বছর পার হয়নি। তার মাঝেই ঈদ এসেছে। বাড়ির নতুন বউ হিসেবে রয়েছে কিছু দায়িত্বও। কদিন আগেও স্বামীকে বগলদাবা করে গুলশানের নিকেতনে নতুন ফ্ল্যাট খুঁজেছেন। প্রতিদিনই একটু একটু করে সাংসারিক হওয়ার চেষ্টা করছেন। তবুও তার আক্ষেপ, 'বিয়ের পরে সংসারটা এখনো জমাতে পারিনি। শুটিং আর ঈদ নাটকের ভিড়ে সংসার জীবন ভেস্তে গেছে। এ সময় অপু (হারুন অর রশিদ অপু, ফারিয়ার স্বামী) আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। নচেৎ বেকায়দায় পড়ে যেতাম।' নতুন বউ হিসেবে যথেষ্ট দায়িত্ব থাকলেও মনে মনে ভাবছেন অন্য কথা। হাসতে হাসতে ফারিয়া বলেন, 'এবার কিন্তু দ্বিগুণ ঈদ সালামি পাব। আগে পেতাম দাদু আর নানু বাড়ি থেকে এবার যোগ হবে শ্বশুর বাড়ি। এই ভেবে খুশি খুশি লাগছে।' ফারিয়া সালামি আদায় করতে যেমন পটু, ছোটদের সালামি দিতেও সিদ্ধহস্ত। সে কথা বললেন নিজের মুখেই। 'যখন থেকেই আয় রোজগার করা শুরু করেছি, তখন থেকেই পরিবারের ছোটদের ঈদ সালামি দিতাম। এখনো দেই। এবারো আমার ভাগিনা-ভাগনিদের ঈদের সালামি দিব বলে ভেবে রেখেছি। সত্যি বলতে আমার সালামি পেতেও যেমন খুশি খুশি লাগে, দিতেও আনন্দ লাগে। পুরো বিষয়টাই মজার।' অনেকই বিয়ের পড়ে হারিয়ে যায়। পরিবার, দায়িত্ব সামল দিতে গিয়ে অভিনয়ে দেখা মিলে কালেভদ্রে। ফারিয়া হাঁটবে কোন পথে? এমন প্রশ্নে এবার হাসা-হাসি বন্ধ হলো। কিছুটা গুরুগম্ভীর হয়ে উত্তর দিল। 'সত্যি বলতে আমি অভিনয় ছাড়তে চাই না। অনেকবার ভেবে দেখেছি, অভিনয় ছাড়া কিছুই পারি না। এত দিন ধরে যে মানুষগুলোকে বিনোদন দিয়ে এসেছি, তাদের সবার কাছে আমি কমিটেড। হুট করে অভিনয় ছেড়ে ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হলে এত লোক আমাকে ইতিবাচকভাবে নেবে না। এ ছাড়াও আমার স্বামী অভিনয়ের ব্যাপারে অনেক বেশি সাপোর্ট করে। তার সাপোর্ট ছাড়া আমি কিন্তু কাজ করতে পারতাম না। বিয়ের পরে যে পরিমাণ কাজ করেছি বলে বোঝাতে পারব না। এমনিতেই 'দেবী' চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য লম্বা বিরতি দিতে হয়েছে। সে সময় অনেক নাটকের কাজ আমি বন্ধ রেখেছি। এবার সেসব কাজ সম্পন্ন করে দিয়েছি। পাশাপাশি ঈদের কাজ ছিল। সব মিলিয়ে দম ফেলার সময় পাইনি। এত ব্যস্ততার মাঝেও অপু আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমার বিশ্বাস ও সামনের দিনগুলোও আমাকে সাপোর্ট দিবে। সুতরাং অভিনয় ছাড়ার কোনো ইচ্ছা নেই। যতদিন বেঁচে আছি, অভিনয় করেই যাব।' এদিকে এবারের ঈদ আয়োজনে বেশির ভাগ টেলিভিশন চ্যানেলগুলোই থাকবে ফারিয়াময়। কাজ করেছেন একাধিক টিভি চ্যানেলের জন্য। সেসব ফিরিস্তি শুনালেন নিজেই। 'এবার ঈদে মোস্তফা কামাল রাজ, মিফতাউর রহমান, ইমরাউল রাফাতসহ আরো অনেকের পরিচালনায় কাজ করেছি। এসব নাটকে আমার সঙ্গে তৌসিফ মাহবুব ও তাহাসন ভাইকে দেখা যাবে। সবচেয়ে মজা লেগেছে মোশাররফ ভাইয়ের সঙ্গে 'খোর'র নাটকের এবারের কিস্তিতে অভিনয় করে। এ ছাড়াও সম্প্রতি থাইল্যান্ড থেকে তিন পর্বের একটি নাটকের শুটিং শেষ করে দেশে আসলাম। সব কিছু মিলিয়ে এবারে ভিন্ন একটি ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছি- বলেই কথার ইতি টানলেন সম্প্রতি মেরিল-প্রথম আলোর সেরা নবাগত পুরস্কার জয়ী এ অভিনেত্রী।