সোহানা সাবার নতুন চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০১৯, ০০:০০

আকাশ নিবির
সোহানা সাবা
সোহানা সাবা। দীর্ঘদিন ধরেই মিডিয়ার সঙ্গে বসবাস তার। তবে অন্যদের সঙ্গে অনেকটাই ব্যতিক্রম তিনি। সবাই যেখানে ঢালাওভাবে নাটক সিনেমায় অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত, সাবা সেখানে কাজ করছেন একদম আস্তে ধীরে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই গতানুগতিক ধারার বাইরের গল্প এবং চরিত্রে কাজ করতে দেখা গেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেত্রীকে। প্রথম চলচ্চিত্র 'আয়না' থেকেই এই ধারা অব্যাহত রেখেছেন সাবা। এর পর চন্দ্রগ্রহণ ছবিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পর সচেতনতার সঙ্গে দেখে-শুনে কাজ করে যাচ্ছেন। সাবা অভিনীত আরেকটি চলচ্চিত্র 'বৃহন্নলা' তার ঝুলিতে কেবল বেশকিছু পুরস্কারই এনে দেয়নি, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার আলাদা একটা পরিচিতি এনে দিয়েছে। যার সুবাদে কলকাতার চলচ্চিত্রেও সম্পৃক্ত হন তিনি। কেবল চলচ্চিত্রের পর্দাতেই তিনি আলাদা নন, ব্যক্তিগতভাবেও অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম তিনি। যাপিত জীবনে তিনি তার খেয়াল খুশিমতই চলতে পছন্দ করেন। খোলামেলা কথা বলতে যেমন পছন্দ করেন তেমনি খোলামেলা পোশাকও তার পছন্দ। প্রচলিত ধারার সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশ্ন তার মোটেই পছন্দ নয়। কেমন আছেন? এই সময়ে কি কি কাজ করছেন, আপনার কোন রঙ পছন্দ- এই ধরনের গৎবাধা প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি মোটেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। বর্তমানে বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন সোহানা সাবা। কারণ দীর্ঘদিন পর চলচ্চিত্রে আবার দেখা মিলবে তার। আগামী ৫ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে তার বহুল প্রতিক্ষিত 'আব্বাস' ছবিটি। সাঈফ চন্দন পরিচালিত এই ছবিতে তার বিপরীতে দেখা যাবে এই সময়ের মডেল, চিত্রনায়ক নিরবকে। এ ছবির প্রচারণা নিয়েই চলমান ব্যস্ততা তার। সোহানা সাবা বলেন, 'পরিচালক সাঈফ চন্দনে ছবিটি ফুল বাণিজ্যিক অ্যাকশন ধারার ছবি। এই প্রচন্ড গরমেও ছবিতে ফাইটের দৃশ্যে কাজ করতে করতে বেশ ক্লান্ত। এই ছবিটি করতে গিয়ে শুধু মাত্র দীপ্ত টিভিতে একটি ধারাবাহিক নাটক ছাড়া বিগত তিন মাস হাতে কোনো কাজ রাখিনি। ছবিতে আমার চরিত্রটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। যদিও 'বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র মানেই চ্যালেঞ্জিং। আশা করি, বেশ দর্শক জনপ্রিয়তা লাভ করবে। চলচ্চিত্রটির গান, কালার, অ্যাকশন দৃশ্য, লোকেশন থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা ধামাকা দেখতে পাবে।' বাণিজ্যিক আর মৌলিক গল্পের ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এর আগেও বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে কাজ করার অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয়েছিল মৌলিক কোনো গল্পের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। অন্যদিকে পরিচালকের মুখে 'আব্বাস' চলচ্চিত্রে আমার যে চরিত্রটা সেটা বেশ ভালো লেগেছে। এই চলচ্চিত্রে আমার চরিত্রের নাম থাকবে চুটকি। পুরান ঢাকায় একটি রাস্তায় টোকায় থেকে কিভাবে সন্ত্রাসে রূপান্তরিত হয়। সেটি এই গল্পে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নায়ক নিরবের সঙ্গে এটি আমার প্রথম জুটি হিসেবে কাজ করা। প্রথমবার দর্শক পর্দায় আমাদের রসায়ন দেখতে পাবেন।' সাবা মনে করেন, তার আগের সিনেমাগুলোর মতোই আব্বাস ছবিটিও আলোচিত হবে। পাশাপাশি তার অভিনয়েরও প্রশংসা পাবে দর্শক এবং সুধী মহলে। সাবা অভিনীত 'বৃহন্নলা' ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন সাবা। মুক্তির পর ছবিটি দেশের বাইরে বিভিন্ন উৎসবে অংশ নিয়ে সম্মান বয়ে আনে। ছবির প্রধান চরিত্রের অভিনয়শিল্পী সাবা অর্জন করেন কিছু পুরস্কার। ভারতের গোলাপি শহর নামে পরিচিত জয়পুরে সপ্তম জয়পুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে 'বৃহন্নলা' ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন সাবা। একই ছবির জন্য সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার পেয়েছেন মুরাদ পারভেজ। \হদেশের গন্ডি পার করে কলকাতার ছবিতেও অভিনয়ের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। সাবা বললেন, 'আমার সহশিল্পীদের সবাই কলকাতার চলচ্চিত্রের পরীক্ষিত অভিনয়শিল্পী। তাদের সঙ্গে একই ছবিতে সহশিল্পী হিসেবে কাজ করা আমার জন্য এক ধরনের পরীক্ষা ছিল। এরকম আরও কিছু ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে আছে। আমি কখনোই জোয়ারে গা ভাসাতে চাই না।'