স্বপ্নের পথেই মিমি

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০১৯, ০০:০০

জাহাঙ্গীর বিপস্নব
ছায়াছবির জনপ্রিয় নায়িকা এখন সাংসদ, জননেত্রী। মঙ্গলবার শপথগ্রহণের পরপরই পূর্ব প্রতিশ্রম্নতি পূরণের জন্য ব্যতিব্যস্ত মিমি চক্রবর্তী। ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই একের পর এক নতুন উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। যদিও সবাই প্রায় ধরেই নিয়েছিলেন এবারের লোকসভা নির্বাচনে মিমির জয় নিশ্চিত। প্রকাশ্যে এসেছিল যাদবপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেনই তিনি। সব জল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন মিমি। স্বপ্নের পথেই এখন হেঁটে বেড়াচ্ছেন টালিগঞ্জ তথা টলিউড অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, ভরসার আরও কিছুটা জিতে নিলেন। ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই একের পর এক নতুন উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। কখনও এলাকা ঘুরে দেখা, কখনও আবার এলাকার সমস্যাগুলোকে খুঁটিয়ে বোঝার চেষ্টা করলেন তিনি। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারাও নবাগত সাংসদের আচরণে বেজায় খুশি। মিমি চক্রবর্তী বলেন, নির্বাচনের জন্য বেশ কিছুদিন নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলাম চলচ্চিত্র জগত থেকে। সমাজের নতুন ভার কাঁধে আসা মাত্রই তা বুঝে নিতে চাই। সবার জন্য কাজ করার একটা সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছি, নির্বাচনের আগে বারবার এ কথাটা বলেছি। সবার আগে এলাকার জলের সমস্যা দূর করতেই চাই। এ সমস্যা না মেটানো পর্যন্ত অন্য কাজে হাত দেব না। আমি সবার জন্য কাজটা ভালোবেসে করতে চাই। মানুষের আশির্বাদ বরাবরই আমার সঙ্গে আছে। তাই এবার আমি তাদের পাশে থাকতে চাই। প্রশ্ন করা হয়, এত কর্মসূচি। শুরুতেই এভাবে ব্যতিব্যস্ত হলে অভিনেত্রী মিমির কী হবে? নায়িকা মিমিকে দর্শক হারিয়ে ফেলবে না তো? জবাবে মিমি বলেন, 'না, না। পরের মাস থেকে আমি ছবির শুটিং শুরু করে দেব। একটা ছবি ছাড়তে হয়েছে। সম্ভবত, আর ছাড়ব না। আমি যা কিছু আজ, সিনেমার জন্যই। এত কম বয়সে, ক্যারিয়ারের পিক টাইমে কেন আমি সিনেমা ছাড়ব! কখনওই নয়।' এই যে শহরতলি বা গ্রামেগঞ্জে ঘুরলেন। মানুষ এত কাছ থেকে দেখল আপনাকে। এতে স্টারডম ফিকে হয়ে যেতে পারে না? প্রশ্নটাকে পাত্তাই দিলেন না মিমি। বললেন, 'দূর, তা হয় না কি কোনো দিন! এটাতে ভালোবাসা আরও বাড়ে। আমার মনে হয়, লোকে যদি আমাকে ভালোবাসে, হলেও আসবে। টিকেট না কেটে যদি একজন হিরোইনকে এমনিই দেখতে পাই তাহলে কী দরকার সিনেমায় যাওয়ার- এমন কিন্তু কেউ ভাবে না। সিনেমা ইজ সিনেমা। ডিফারেন্ট ওয়ার্ল্ড। আমি সবসময় যেটা বলেছি, ডোন্ট থিঙ্ক মি অ্যাজ আ বার্বিডল। আমি এখানে কাজ করতে এসেছি, কাজ করব। আর আমার সব লোকজনদেরও কাজ করাব। যারা আমাকে ভালোবাসে, তারা সারাজীবন ভালোবাসবে।' প্রথম দিন পার্লামেন্টে অনুভূতি নিয়ে মিমি বলেন, 'যখন যাচ্ছিলাম তখনও ঠিক বুঝতে পারিনি। কিন্তু একদম এন্ট্রির মুখে, যেখানে সব টু্যরিস্টরা যায়, সেখানে দশ বছর আগে আমিও আমার বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তুলে এসেছিলাম। সেই স্মৃতিটা মনে পড়ে গেল। যখন আমি একজন অভিনেত্রী, একজন এমপি হিসেবে প্রবেশ করলাম সত্যি একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। যারা গার্ড ছিলেন, তারা তো আমার ম্যানেজারকেই এমপি ভেবে বসলেন। তারপর ভুল বুঝতে পেরে বললেন, 'ওহ! আচ্ছা, আপ হ্যায় এমপি!' সত্যি বলতে, দারুণ অভিজ্ঞতা! ভেতরে একটা উষ্ণ অভ্যর্থনার আবহ টের পাচ্ছিলাম। আমি এতটা আশা করিনি। বাট দ্যায়ার ওয়াজ টু মাচ অব ওয়ার্মথ ইনসাইড। প্রত্যেকে ভীষণ ওয়ার্ম। তখনও সব এমপি এসে পৌঁছাননি। সকলে পরস্পরকে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন, কথা বলছিলেন। ইট ওয়াজ দ্য ভেরি নাইস এক্সপিরিয়েন্স। ওই পিলারগুলো দেখেই আমার গুজবাম্পস শুরু হয়ে গিয়েছিল। যে, ইট ইজ দ্য পার্লামেন্ট!' মিমি বলেন, 'আমি সবসময় এটাই মনে করি যে, যদি আমাকে পঞ্চাশ লাখ লোক ভালোবাসে, তাহলে পঞ্চাশজন লোক হয়তো ট্রোল করে। আমি একটা জিনিস পরিষ্কার করে বলতে চাই সবাইকে, নেগেটিভিটিকে আমাকে অ্যাফেক্ট করতে দিই না কখনও, তাই এটাতে কনসেনট্রেটই করি না। আমি বরং মনোযোগ দিই ওই পঞ্চাশ লাখ মানুষের দিকে, যারা আমাকে ভালোবাসে। নয়তো আজকে আমার ভোটে জেতার মার্জিন এটা হতো না। দুই লাখ পঁচানব্বই হাজারের ওপরে, নিশ্চয়ই জানেন।' \হযেহেতু বিজেপির হাওয়া বেশ জোরালো আগামী দিনে আপনার দলের কী অবস্থা দাঁড়াবে মনে হয়? মিমির জবাব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্ভীক। তিনি একটা আসন থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তার দীর্ঘ সংগ্রামের একটা যাত্রা আছে। তাই হয়তো মানুষ ভেবেছে ওরা খুব ভালো কাজ করেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানুষ। আমরা তো কাউকে ফোর্স করতে পারি না যে, ভোট দাও আমাদের। আমাদের কাজ হলো, নিজের কাজটা করে যাওয়া। আমি আমার কাজ করব, দিদির মর্যাদা রক্ষা করব।'