প্রযোজনায় ঝুঁকছেন বলিউডের সিনিয়র নায়িকারা

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

তারার মেলা ডেস্ক
এই তো কয়েক বছর আগেই বলিউডে যারা চাহিদার শীর্ষে ছিলেন, বিয়ে করে বর্তমানে ঘরসংসার নিয়েই ব্যস্ত এখন এসব নায়িকারা। তবে ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও প্রাণের টানেই চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন তারা। টুকটাক অভিনয়ের পাশাপাশি সিনিয়র অনেক নায়িকাই এখন সিনেমা নির্মাণ করছেন। যদিও নায়িকা থেকে এরই মধ্যে অনেকেই প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ লম্বা হচ্ছে এই তালিকা। অনেকেই এটাকে পেশা হিসেবেও নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে থেকে উলেস্নখযোগ্য কয়েকজনকে নিয়েই এবারের প্রতিবেদন- আমিশা প্যাটেল : 'কহো না পেয়ার হ্যায়' সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছিলেন আমিশা। সেই স্টারডম চলেছিল 'গদর-এক প্রেম কথা' পর্যন্ত। কিন্তু তারপর? 'হামরাজ', 'হানিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেডের মতো কিছু সিনেমা হিট হলেও বলিউড কেরিয়ার সেভাবে জমেনি আমিশার। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে চলচ্চিত্র প্রযোজনাতেই লাক ট্রাই করতে নেমে পড়েছেন আমিশা। তার প্রযোজিত দেশি ম্যাজিক পরিচালনা করছেন 'মেহুল আথা'। সে সিনেমায় অভিনয়ও করছেন আমিশা। রয়েছেন জায়েদ খান ও সাহিল শ্রফ। দিয়া মির্জা : আমিশার মতোই 'রহেনা হ্যায় তেরে দিল মে' সিনেমা দিয়ে রাতারাতি সাফল্য পেয়েছিলেন দিয়া। কিন্তু সাফল্য সিঁড়ি বেশিদূর চড়াতে পারেননি তিনি। তাই জায়েদ খানের সঙ্গে খোলেন নিজের প্রযোজনা বর্ন ফ্রি। প্রথম সিনেমা 'লাভ, ব্রেকআপস, জিন্দেগি' (২০১১)। দুজনেই অভিনয় করেছিলেন সেই সিনেমায়। কিন্তু সেটিও বক্সঅফিসে লাভের মুখ দেখেনি। তাই পরের বার স্পাই থ্রিলার 'ববি জাসুস' দিয়ে ফের লাক ট্রাই করতে চেয়েছেন দিয়া। বিদ্যা বালন অভিনয় করছেন 'ববি জাসুস' চরিত্রে। কিন্তু সেটিও সাফল্যের মুখ দেখেনি। প্রীতি জিনতা : আমিশা, দিয়ার মতো তরী ডোবার গল্পতো নয়ই, প্রীতি জিনতা ছিলেন বলিউডের এক সময়ের এক নম্বর অভিনেত্রী। প্রচুর হিট সিনেমার পর প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে আইপিএল টিমের ব্যবসাতেও লাভের মুখও দেখেছেন প্রীতি। এহেন লক্ষ্ণীমন্ত মেয়ে যে সিনেমা প্রযোজনাতে হাত লাগাতে চাইবেন তা যেন জানাই ছিল। তবে ২০১৩ সালে প্রীতি প্রযোজিত চলচ্চিত্র 'ইশক ইন প্যারিস' বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। যদিও সিনেমাটিতে রেহান মালিকের বিপরীতে ছিলেন প্রীতি নিজেই। লারা দত্ত : 'নো এন্ট্রি', 'পার্টনারে'র মতো সিনেমা হিট করলেও বলিউড কেরিয়ার সেভাবে পানি পায়নি লারা। স্বামী মহেশ ভূপতির সঙ্গে ২০১১ সালে খোলেন প্রযোজনা সংস্থা ভিগি বসন্তি। প্রথম সিনেমা 'চলো দিলিস্ন' সমালোচকদের প্রশংসাও পেয়েছে। কিন্তু সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করেনি। শোনা যায়, এখন আবার নতুন সিনেমা নিয়ে ভাবছেন এই নায়িকা। আনুশকা শর্মা: অভিনেত্রী খেতাবের পাশাপাশি আনুশকার নামের পাশে যুক্ত হয়েছে আরো একটি পরিচয়, প্রযোজক। অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে 'বম্বে ভেলভেট' সিনমার শুটিংয়ের সময়ই প্রযোজনায় আগ্রহী হন আনুশকা শর্মা। তখনই 'ফ্যান্টম ফিল্মস'-এর সঙ্গে জুটি বেঁধে 'এনএইচ ১০' সিনেমায় কাজ শুরু করেন। সিনেমাটি তিনি প্রযোজনাও করেন। ক্রাইম-থ্রিলার ধাঁচের সিনেমাটি সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসার সঙ্গে বক্সঅফিসেও সাফল্য পায়। হঠাৎ করে প্রযোজনা শুরু করলেও ভবিষ্যতে এ ভূমিকায় আরো নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা এই অভিনেত্রীর। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া : কী পারেন না প্রিয়াঙ্কা? বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট মাথায় পরেছেন, অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন, পিটবুলের সঙ্গে তার গাওয়া গান সাড়া জাগিয়েছে বেশ। সব জায়গাতেই যখন শাসন করে বেড়াচ্ছেন তখন প্রযোজনাটাও আর বাকি থাকবে কেন? 'ম্যাডামজি' সিনেমা দিয়ে শুরু হয় প্রযোজক প্রিয়াঙ্কার নতুন যাত্রা। যেটা পরিচালনা করার কথা 'ফ্যাশন'খ্যাত পরিচালক মাধুর ভান্ডারকারের। তবে প্রিয়াঙ্কা প্রযোজিত প্রথম সিনেমার কাজ শুরু হতে মূল বাধা সময়। প্রেম, বিয়ে ও সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে প্রিয়াঙ্কা এখন চলচ্চিত্র থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন। তবে তার সঙ্গে পরিচালক ও প্রযোজকের সময় মিললেই শুরু হবে 'ম্যাডামজি'। সোনম কাপুর : 'ব্যাটেল ফর বিট্টরা' দিয়ে অভিনেত্রী-প্রযোজকদের দলে নাম লিখিয়েছেন সোনম কাপুরও। সিনেমাটি তিনি প্রযোজনা করছেন তারই বোন রেহা কাপুরের সঙ্গে। বোনই মূলত তাকে প্রযোজকের ভূমিকায় নামতে উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে জানান সোনম। তিনি 'আয়েশা' সিনেমাতেও সহপ্রযোজক ছিলেন। কিন্তু সেবার সিনেমা প্রযোজনা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাননি। এবার কাজটা নিয়ে অনেক সিরিয়াস। অর্থায়ন থেকে শুরু করে গবেষণা, কস্টিউমস, সব দিকেই খেয়াল রাখছেন তিনি। দীপিকা পাড়ুকোন : বলিউড সুপারস্টার দীপিকা পাড়ুকোন অভিনয়ের পাশাপাশি এবার প্রযোজনা করছেন মেঘনা গুলজার পরিচালিত 'ছপাক' সিনেমাটি। এতে অ্যাসিড আক্রান্ত লক্ষ্ণী আগরওয়ালের ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। এটি নির্মিত হচ্ছে একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হন লক্ষ্ণী আগরওয়াল, পরবর্তী সময়ে অসংখ্য অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। সুস্থ হয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। প্রচারণা শুরু করেন অ্যাসিড আক্রমণের বিরুদ্ধে। এটির নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে।