ক্যারিয়ারের দুই দশকে রিচি সোলায়মান

রিচি সোলায়মান। ছোটপর্দার আলোচিত এক তারকা। তবে বিয়ের পর অনেকটাই অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারের ২০ বছরে পা দিলেন এই অভিনেত্রী। যদিও শুধু অভিনয়শিল্পীই নন, একাধারে তিনি মডেল, নৃত্যশিল্পী এবং প্রযোজকও বটে। বর্তমানে এ অভিনেত্রী স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করেন। মনের টানেই প্রতি বছর দেশে এসে কয়েকটা নাটক টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। এবারও দেশে ফিরে ঈদের একাধিক নাটক ও রিয়ালিটি শোতে অংশ নিয়েছেন তিনি। অভিনয় ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসুদুর রহমান-

প্রকাশ | ০১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রিচি সোলায়মান
তারার মেলা: প্রতিবারই দেশে ফিরে অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এবারে কি করছেন? রিচি সোলায়মান: আমি দেশে থাকি না। আমেরিকা থেকে যখন দেশে আসি তখন বেশ কিছু কাজ করা হয়। সাধারণত ঈদের সময়টাতে দেশে ফেরা হয়। এবারে এসে যেমন ঈদের নাটকে তেমন কাজ করা হয়নি। কারণ এই সমটাতে এনটিভির একটি রিয়েলিটি শো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। যার জন্য নাটকে সময় দিতে পারিনি। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনের 'রাঙা সকাল' অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। এটি ঈদের অনুষ্ঠান মালায় প্রচার হবে। তবে ঈদের তিন/চারটি নাটকে অভিনয় করেছি। কিন্তু নাটকের নামগুলো মনে নেই। তারার মেলা: ঈদের নাটকগুলো কেমন হয়? রিচি সোলায়মান: আসলে একটা ট্রেন্ড চালু হয়ে গেছে। ঈদের নাটক মানেই রোমান্টিক ও কমেডির ছড়াছড়ি। সিরিয়াস গল্পের নাটক খুবই কম দেখা যায়। এটা ঠিক, দর্শকরাও ঈদে কমেডি-রোমান্টিক নাটক বেশি পছন্দ করেন। এ জন্য নির্মাতারাও কমেডি নাটক নিয়ে পরিকল্পনা করেন। তবে বৈচিত্র্য থাকতে হবে। রোমান্টিক-কমেডি-সিরিয়াস সবই থাকতে হবে। তারার মেলা: আপনার অভিনীত ঈদের নাটকগুলো কতটুকু আলাদা বলে মনে হয়েছে? রিচি সোলায়মান: কিছুটা ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। গল্প ও চরিত্রের মধ্যে ভিন্নতা আছে। তারার মেলা: এ সময়ের নাটক নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে আপনার নিজস্ব বক্তব্য কি ? রিচি সোলায়মান: সত্যি বলতে এখনকার নাটকগুলো ভালো হচ্ছে না। আগের মতো দর্শকদের মনে নাটকের গল্প ও চরিত্র স্থায়িত্ব পাচ্ছে না। ভালো চিত্রনাট্যের অভাব। বৈচিত্র্য নেই। গল্প, চরিত্র, শিল্পী এসব যেন একই ছকে ঘুরপাক খাচ্ছে। বাজেট কমসহ নানা সমস্যা। এসব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বিয়গুলো আমরা সবাই জানি। আমাদের বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। শেষ পাঁচ/ছয় বছর নাটকের অবস্থা এত খারাপ গেছে- যা বলার বাইরে। এভাবেই চলছে, দেখা যাক- কবে নাগাদ নাটকের পরিবেশ ভালো হয়। নাটক সংশ্লিষ্টদের এ নিয়ে ভাবতে হবে। একটা খারাপ কিছুর জন্য যেমন সবার হাত লাগে, তেমনই ভালো কিছুর জন্যও সবার হাত লাগে। তবে আমার বিশ্বাস নাটকের সুদিন আসবে। নাটকের পরিবেশ ভালো হবে। তারার মেলা: নাটকে সিনিয়র শিল্পীদের মূল্যায়ন নিয়ে আপনার মন্তব্য কি? রিচি সোলায়মান: প্রায় নাটকই এখন নায়ক-নায়িকানির্ভর। ফলে সিনিয়র শিল্পীদের গুরুত্ব কমে গেছে। ভালো ভালো অভিনয় শিল্পীরা অভিনয় করতে পারছেন না। সিনিয়র শিল্পীদের অনেকেই বেকার হয়ে আছেন। তাদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে গেছে। তাদের চরিত্র নির্ভর করে নাটক নির্মাণ হয় না। তারার মেলা: বিদেশের মাটিতে কি নিয়মিত বাংলাদেশের নাটক-সিনেমা দেখা হয়? রিচি সোলায়মান: হঁ্যা, অবশ্যই দেখা হয়। আমি আমেরিকাপ্রবাসী হলেও দেশের কথা, দেশের সংস্কৃতির কথা সব সময় মনে পড়ে। প্রতিটি মানুষেরই তার নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা থাকে। নিজের সংস্কৃতিকে ভুলতে পারে না। তারার মেলা: আমেরিকাতেও কী অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত? রিচি সোলায়মান : না, আমি আসলে সেখানে নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সন্তান-সংসারের পেছনেই আমার সারাদিন কেটে যায়। সেখানে যদি এসব করি তাহলে সংসার-সন্তান কে সামলাবে। তাই ওখানে এসব নিয়ে ভাবছি না। বাংলাদেশে আসলে অভিনয় করা হয়। অভিনয়কে ভালোবাসি বলেই তো দেশে ফিরলে অভিনয় করা হয়। মনের টানেই অভিনয় করি। তারার মেলা: দীর্ঘদিন ধরে টেলিভিশন নাটকে কাজ করছেন। চলচ্চিত্র নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কী? রিচি সোলায়মান: হঁ্যা আছে। চলচ্চিত্র প্রযোজনা নিয়েও ভাবছি। যে ছবিগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে, সম্মান বয়ে আনবে। আমি বিশাল বাজেট কিংবা তারকাবহুল ছবির পক্ষপাতী নই। এখন ভালো গল্পের, ভালো নির্মাণের ছবি চলে। আমি সেটা মাথায় রেখেই কাজ করতে চাই। সময় হলে আমি সবাইকে জানিয়েই কাজ শুরু করব। তারার মেলা: এবারে একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ। সামনে বন্ধু দিবস। কিভাবে বন্ধুকে সজ্ঞায়িত করতে চান? রিচি সোলায়মান : বন্ধু হচ্ছে মানুষের এমন একটা নির্ভরযোগ্য জায়গা, যার কাছে সব কিছু থেকে নিরাপদ। যার সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করা যায়। এমন কিছু বিষয় আছে, যা বাবা-মা, ভাইবোনের সঙ্গে শেয়ার করা যায় না; কিন্তু বন্ধুর সঙ্গে করা যায়। প্রতিটি মানুষের কাছে বন্ধু খুব গুরুত্বপূর্ণ। \হ তারার মেলা : বন্ধুত্বের মর্যাদা? রিচি সোলায়মান : প্রতিটি মানুষের বন্ধুত্বের মর্যাদা রক্ষা করে চলা উচিত। বন্ধুত্বের মধুর সম্পর্ককে কখনো নষ্ট করা ঠিক নয়। আমি আমার জীবনে অনেক ভালো ভালো বন্ধু পেয়েছি। সব সময় আমি তাদের বন্ধুত্বের মর্যাদা রাখার চেষ্টা করি। তারাও মর্যাদা রেখেছেন। আমি কখনো কোনো বন্ধু থেকে কষ্ট পায়নি। এ দিক দিয়ে আমি খুবই সৌভাগ্যবান। ছোটবেলার এমন কিছু বন্ধু আছে যাদের সঙ্গে এখনো আমার যোগাযোগ রয়েছে। তারার মেলা : প্রিয় বন্ধু কে? রিচি সোলায়মান : বন্ধু তো অনেক জনই আছে। তবে সবচেয়ে প্রিয় বা কাছের বন্ধু আরিফ ও বর্ষা। ওরা আমার ছোটবেলার বন্ধু। ওদের সঙ্গে এখনো আমার মধুর সম্পর্ক অটুট রয়েছে। বর্ষা বিদেশে থাকলেও আরিফ দেশেই আছেন। তারার মেলা: শোবিজে প্রিয় বন্ধুর নাম কি? রিচি সোলায়মান: শোবিজে অনেক বন্ধুই আছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ খুবই কাছের। তবে নির্দিষ্ট করে দুই/একজনের নাম বলতে চাই না। তারা মেলা : ছেলেমেয়ের বন্ধুত্ব থেকে অনেকের প্রেম, তারপর বিয়েও হয়ে যায়। বিষয়টি কিভাবে দেখেন? রিচি সোলায়মান : এটা হতেই পারে। এটাকে আমি অন্যভাবে দেখি না। প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম এবং ভালোলাগা-ভালোবাসা থেকে এক সময় বিয়ে হয়ে যায়। এমন অনেক হয়। প্রেমের আগেই তো বন্ধুত্ব হয়।